এক বছরের অস্থিরতার সঙ্গে করোনা আতংকে চলতি সপ্তাহেও আগের দুই কার্যদিবসের মতো বুধবারও (১৮ মার্চ) ব্যাপক পতন হয়েছে পুঁজিবাজারে। ব্যাপক পতনের ফলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স সূচকটি প্রায় সাত বছরের মধ্যে নিম্ন স্থানে নেমে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারী এবং বাজার বিশ্লেষকদের একই কথা দেশের পুঁজিবাজারে পতনের শেষ কোথায় গিয়ে পৌঁছাবে।
পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগের খবরে শুরুতেই মাত্র ৫ মিনিটে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১০৬ পয়েন্ট বেড়ে যায়। তবে সাত মিনিট থেকে আগের রূপ অর্থাৎ পতন শুরু হয়। এরপর পতন কখনো বেড়েছে আবার কখনো কমেছে। এভাবে দিন শেষে ১৬৯ পয়েন্ট ৪.৪৭ শতাংশ কমে
ডিএসইএক্স সূচক দাঁড়িয়েছে ৩৬০৪ পয়েন্টে। এর মাধ্যমে ডিএসইর এই সূচকটি ৬ বছর ১০ মাস ৬ দিন বা ১ হাজার ৬৫৬ কার্যদিবস বা ২০১৩ সালের ১২ মে’রমধ্যে সবচেয়ে নিচে অবস্থান করছে। এর আগে ২০১৩ সালের ৯ মে আজকের থেকে কম অর্থাৎ ৩৫৪৯ পয়েন্টে অবস্থান করছিল ডিএসইর এই সূচকটি।
আলী কবির নামে এক বিনিয়োগকারী বলেন, বুঝতে পারছি না পুঁজিবাজার কোন দিকে যাচ্ছে। এটাকি নাই হয়ে যাবে না কি কিছুটা বেচে থাকবে। এই বিনিয়োগকারী আরো বলেন, সোমবার অর্থমন্ত্রীর সাথে এবিবি ও বিএবি’র বৈঠকে ব্যাংকগুলো আজ থেকে বিনিয়োগে আসার কথা বলেছে।
ব্যাংকগুলো সত্যি যদি আজ থেকে বিনিয়োগে আসে তবে কারা এই বাজারকে পতনের দিকে ঠেলে দিচ্ছে তাদের খুঁজে বের করতে হবে। না হয় বন্ধ করে দেয়া উচিত এই পুঁজিবাজার।
কয়েকজন বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকার বাজারকে সাপোর্ট দিতে যথেষ্ট চেষ্টা করছে। যেখানে ব্যাংকগুলো বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে সেখানে আজ পুঁজিবাজার এভাবে পরতে পারে না। কারা, কেন এবং কি উদ্দেশ্যে এভাবে ক্ষতির মধ্যেও শেয়ার বিক্রয় করছেন তাও খতিয়ে দেখতে হবে।
ডিএসইর অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ৩৯ পয়েন্ট, ডিএসই-৩০ সূচক ৬১ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ৮৩৫ ও ১২০৩ পয়েন্টে।
ডিএসইতে আজ টাকার পরিমাণে লেনদেন হয়েছে ৪২৯ কোটি ৩ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট। যা আগের দিন থেকে ২২ কোটি ৪০ লাখ টাকা বেশি। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৪০৬ কোটি ৬৩ লাখ টাকার।
ডিএসইতে আজ ৩৫৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৩টির বা ৪ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে। দর কমেছে ৩৩৩টির বা ৯৪ শতাংশের এবং ১০টি বা ২ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
ডিএসইতে আজ টাকার পরিমাণে সবচেয়ে বেশি অর্থাৎ ১৮ কোটি ৬২ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে স্কয়ার ফার্মার। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৮ কোটি ৫৭ লাখ টাকার গ্রামীণফোনের এবং তৃতীয় সর্বোচ্চ ১৬ কোটি ৮৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে মুন্নু সিরামিকের।
এছাড়া ডিএসইতে টপটেন লেনদেন থাকা অপর কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে- লাফার্জ হোলসিম, ওরিয়ন ফার্মা, ব্র্যাক ব্যাংক, বৃটিশ আমেরিকান ট্যোবাকো, খুলনা পাওয়ার, বেক্সিমকো এবং সী পার্ল।
অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই এদিন ৪৪৩ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার ১৩৪ পয়েন্টে। এদিন সিএসইতে হাত বদল হওয়া ২৪৮টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার দর বেড়েছে ১৯টির, কমেছে ২১৯টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১০টির দর। আজ সিএসইতে ১৫ কোটি ৬০ লাখ শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
শেয়ারবার্তা/সাইফুল