ইউরোপে বাংলাদেশের বিশেষায়িত বাজার সুবিধা ‘জিএসপি প্লাস’ পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশে জার্মানির রাষ্ট্রদূত পিটার ফারেনহল্টজ।
সোমবার ‘বাংলাদেশ জার্মান কনসালটেশন অন ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ তথ্য দেন তিনি। রাষ্ট্রদূত বলেন, “জিএসপি প্লাস সুবিধা নিয়ে বাংলাদেশ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে আলোচনা চলছে, বাংলাদেশের এই সুবিধা পাওয়ার খুব ভালো সম্ভাবনা রয়েছে।”
ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছ থেকে এই সুবিধা পেতে তৎপরতা শুরুর কথা দুই বছর আগে জানিয়েছিলেন তখনকার বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে বৈঠকে বাংলাদেশ পক্ষের নেতৃত্ব দেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) অতিরিক্ত সচিব গৌরাঙ্গ চন্দ্র মোহন্ত। আর জার্মান প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন জার্মানির অর্থ ও উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ এশীয় বিভাগের প্রধান উটে হেইনবাক।
রাষ্ট্রদূত ফারেনহল্টজ বলেন, “বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির মেরুদণ্ড হচ্ছে পোশাক রপ্তানি খাত। বর্তমানে বাংলাদেশ যে টেকসই উন্নয়ন (এসডিজি) বাস্তবায়ন করছে তা অর্জনেও খাতটির ওপরেই নির্ভর করতে হবে।”
বাংলাদেশকে কয়েকটি খাতের উন্নয়নও করতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, “বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে মানবাধিকার রক্ষা করা জরুরি। কারণ মানবাধিকার সমাজকে একত্রে থাকার জন্য বিশেষভাবে জরুরী বিষয়।”
“রাজনৈতিক প্রক্রিয়াকে আরও টেকসই করার জন্য সুশাসন, বিশেষ করে আইনের শাসন এবং সরকারি অর্থ ব্যয়ে স্বচ্ছতার ওপর অত্যধিক গুরুত্ব দিতে হবে। গত কয়েক বছর এ দেশে নির্বাচন নিয়ে যে সমালোচনা চলছে, আমি মনে করি সরকার এটা সম্পূর্ণভাবে এড়িয়ে যেতে পারত।”
বাংলাদেশের নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে সমালোচনার মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নও ভবিষ্যতে বাংলাদেশের নির্বাচন পর্যবেক্ষণের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে বলে জানান তিনি।
“আমি মনে করি কেউ সমালোচনা না করার মতো নির্বাচন করার সক্ষমতা বাংলাদেশ সরকারের আছে,” বলেন জার্মান রাষ্ট্রদূত।
তিনি বাংলাদেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে দুর্নীতির বিষয়টি উল্লেখ করে বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছেন। এই দুর্নীতি শুধু দেশের উন্নয়ন ক্ষতিগ্রস্ত করবে না, একইসঙ্গে ভবিষ্যতে দেশে বিনিয়োগও ক্ষতিগ্রস্ত করবে।”
রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে রাষ্ট্রদূত জানান, গত ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি জার্মানির অর্থনৈতিক ও উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রী জার্ড মুলার বাংলাদেশ সফরের সময় পরিষ্কার করে বলেছেন, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে জার্মান সরকার বাংলাদেশের মানুষ ও সরকারের পাশে থাকবে।
ইআরডির অতিরিক্ত সচিব গৌরাঙ্গ চন্দ্র মোহন্ত বলেন, জার্মানির অর্থায়ন এবং কারিগরি সহায়তায় বাংলাদেশে ১৭টি প্রকল্প রয়েছে।
বৈঠকে বিশেষ করে জ্বালানি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, এবং বাংলাদেশের দারিদ্র্য বিমোচন নিয়ে আলোচনা হয়।
শেয়ারবার্তা / হামিদ