1. [email protected] : শেয়ারবার্তা প্রতিবেদক : শেয়ারবার্তা প্রতিবেদক
  2. [email protected] : শেয়ারবার্তা : nayan শেয়ারবার্তা
  3. [email protected] : news uploder : news uploder
আমানতের উপর ৬ শতাংশের বেশি সুদ নয়: এবিবির সিদ্ধান্ত
মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৫৭ পিএম

আমানতের উপর ৬ শতাংশের বেশি সুদ নয়: এবিবির সিদ্ধান্ত

  • আপডেট সময় : বুধবার, ২৯ জানুয়ারী, ২০২০
abb

আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে দেশের কোনো ব্যাংকই ৬ শতাংশের বেশি সুদে আমানত গ্রহণ করবে না। যেসব আমানতের মেয়াদ শেষ হবে, সেগুলোর মেয়াদ বৃদ্ধির ক্ষেত্রেও এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।

মঙ্গলবার রাতে ব্যাংক নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। রাজধানীর গুলশানে ইস্টার্ন ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে দেশের প্রায় সব ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীরা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে ব্যাংকঋণের সুদহার এক অংকে নামিয়ে আনার কঠোর বার্তা দিয়েছে সরকার। আগামী ১ এপ্রিল থেকে সব ঋণের ক্ষেত্রে (ক্রেডিট কার্ড ছাড়া) এটি কার্যকর করতে হবে। সরকারের এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে এরই মধ্যে অনেক ব্যাংক আমানতের সুদহার কমাতে শুরু করেছে। কয়েকটি ব্যাংক আমানতের সুদহার ৬ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনায় ওইসব ব্যাংকের আমানত বেশি সুদে অন্য ব্যাংকে চলে যাচ্ছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার দেশের প্রায় সব ব্যাংকের এমডি একসঙ্গে বসেন।

দ্য সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসরুর আরেফিন বৈঠকের সিদ্ধান্তের বিষয়ে বলেন, আগামী ১ এপ্রিল থেকে ব্যাংকগুলোকে ঋণের সুদহার ৯ শতাংশে নামিয়ে আনতে হবে। ঋণের সুদহার কমানোর জন্য প্রস্তুতি নেয়ার সময় এখনই। এজন্য এবিবির বৈঠকে সব ধরনের আমানতের সর্বোচ্চ সুদহার ৬ শতাংশে নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ১ ফেব্রুয়ারি থেকেই এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।

তিনি বলেন, মেয়াদি আমানতের (এফডি) মেয়াদ তিন মাস থেকে তিন বছর পর্যন্ত হলেও সুদহার হবে সর্বোচ্চ ৬ শতাংশ। তবে সর্বনিম্ন সুদের বিষয়ে কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। ব্যাংক নিজেদের সামর্থ্য ও সক্ষমতা অনুযায়ী সর্বনিম্ন সুদে আমানত সংগ্রহ করতে পারবে। তবে এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক নির্ধারিত স্প্রেড (ঋণ ও আমানতের সুদহারের ব্যবধান) মেনে চলতে হবে। সব ব্যাংক একসঙ্গে সুদহার কমালে তবেই আমানতের সুদ কমানো সম্ভব। এজন্য দেশের প্রায় সব ব্যাংকের এমডি এবিবির বৈঠকে উপস্থিত হয়ে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

গত দুই বছর ধরে ব্যাংকঋণের সুদহার এক অংকে নামিয়ে আনার কথা হচ্ছে। বিভিন্ন সময়ে অর্থমন্ত্রী, ব্যাংক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসসহ (বিএবি) সংশ্লিষ্টরা এ ঘোষণা দিয়ে আসছিলেন। যদিও ঋণের সুদহার না কমে উল্টো আরো বেড়েছে। এ অবস্থায় ঋণের সুদহার কমানোর বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেন প্রধানমন্ত্রীও। সর্বশেষ আগামী ১ এপ্রিল থেকেই ক্রেডিট কার্ড ছাড়া দেশের সব ধরনের ব্যাংকঋণের সুদহার এক অংকে নামিয়ে আনার সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই সুদহার কমানোর বিষয়টি দেখভাল করছেন।

ব্যাংকঋণের সুদহার এক অংকে নামিয়ে আনার ঘোষণা বাস্তবায়নের জন্য সরকারি আমানতের সর্বোচ্চ সুদহার বেঁধে দিয়ে এরই মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। ২০ জানুয়ারি জারি করা ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সরকারি আমানত বেসরকারি ব্যাংকে জমা রাখলে সর্বোচ্চ সুদহার হবে ৬ শতাংশ। আর রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে রাখলে এ আমানতের সর্বোচ্চ সুদহার ৫ দশমিক ৫০ শতাংশের বেশি হবে না। একই সঙ্গে সরকারি আমানতের ৫০ শতাংশ বাধ্যতামূলকভাবে বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে রাখার বিষয়েও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) এবং পরিচালন বাজেটের আওতায় প্রাপ্ত অর্থ, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা এবং সরকারি মালিকানাধীন কোম্পানির নিজস্ব তহবিলের উদ্বৃত্ত অর্থ বেসরকারি ব্যাংকে রাখলে এর সর্বোচ্চ সুদহার হবে ৬ শতাংশ। একই আমানত সরকারি ব্যাংকে সর্বোচ্চ সাড়ে ৫ শতাংশ সুদে রাখা যাবে। তবে প্রতিষ্ঠানগুলোর ভবিষ্য তহবিলের অর্থ, পেনশন তহবিলের অর্থ এবং এন্ডাউমেন্ট ফান্ডের অর্থ এর আওতাবহির্ভূত থাকবে।

সরকারি নির্দেশনা জারির পর এরই মধ্যে অনেক ব্যাংক ব্যক্তি খাতসহ সব ধরনের আমানতের সর্বোচ্চ সুদহার ৬ শতাংশে নামিয়ে এনেছে। যদিও সুদহার কমানোয় অনেক বেসরকারি ব্যাংক থেকেই আমানত বেরিয়ে বেশি সুদে অন্য ব্যাংকে চলে গেছে। বিষয়টি নিয়ে ব্যাংক নির্বাহীসহ অন্য ব্যাংকার ও পরিচালকদের মধ্যে মনোমালিন্যের ঘটনাও ঘটেছে। এ অবস্থায় সব ব্যাংকের আমানতের সুদহার ৬ শতাংশে নামিয়ে আনার জন্যই বৈঠকে বসেছিল এবিবি। তবে সুদহার ছাড়াও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে আমানতের ওপর উৎসে কর কর্তন সম্পর্কিত জারীকৃত প্রজ্ঞাপন, ব্যাংককে শ্রম আইনের নিয়ন্ত্রণের বাইরে রাখাসহ কয়েকটি বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।

এবিবির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ও এনআরবি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. মেহমুদ হোসেন এ বিষয়ে বলেন, ব্যাংকঋণের সুদহার কমানোর বিষয়ে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী অনেক ব্যাংকই এরই মধ্যে আমানতের সুদহার কমিয়ে এনেছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ও এরই মধ্যে সরকারি আমানতের সুদহার বেঁধে দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। ব্যাংকগুলোকে ১ এপ্রিলের মধ্যে ঋণের সুদহার ৯ শতাংশে নামিয়ে আনতে হলে অবশ্যই কস্ট অব ফান্ড কমিয়ে আনতে হবে। এবিবির বৈঠকে আমানতের সুদহার কমানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে কোন ব্যাংক কী পন্থায় আমানতের সুদহার কমাবে, সেটি একান্তই সে ব্যাংকের নিজস্ব বিষয়। এবিবি কোনো নিয়ন্ত্রক সংস্থা নয়। এজন্য এবিবি থেকে কোনো সিদ্ধান্তও দেয়া সম্ভব নয়। তবে বৈঠকে অংশগ্রহণকারী প্রায় সব ব্যাংকের এমডিরাই ক্রমান্বয়ে সুদহার কমানোর বিষয়ে নিজেদের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন।

শেয়ারবার্তা / হামিদ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:

ভালো লাগলে শেয়ার করবেন...

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ