বীমা খাতের ২৭টি বীমা কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হতে আগ্রহী। কিন্তু কোম্পানিগুলো মধ্যে বেশিরভাগ কোম্পানিরই পুঁজিবাজারে আসার সক্ষমতা নেই। বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, গত বছরের শুরু থেকেই পুঁজিবাজারে আসার জন্য কোম্পানিগুলোর উপর চাপ দেয়া হচ্ছে। কিন্তু কোম্পানিগুলো পুঁজিবাজারে আসার সক্ষমতা অর্জন করতে পারেনি। মাত্র ৪টি কোম্পানি সক্ষমতা অর্জনের কাছাকাছি এসে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) জমা দিয়েছে। অন্যদিকে, আরো ৫টি কোম্পানি আবেদন জমা দেওয়ার প্রক্রিয়ায় রয়েছে। এই ৯টি কোম্পানি আবেদন যাচাই-বাছাই করলে বুঝা যাবে কয়টি কোম্পানি পুঁজিবাজারে আসার সক্ষমতা অর্জন করেছে।
সূত্র আরো জানায়, আগামী ২৯ জানুয়ারি বীমা কোম্পানিগুলোর সঙ্গে পুনরায় বৈঠকে বসবেব আইডিআরএ। বৈঠকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির সর্বশেষ আপডেট তথ্য নেওয়া হবে।
জানা যায়, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির আগ্রহী ২৭ বীমা কোম্পানির মধ্যে ১৮টি জীবন বীমা কোম্পানি এবং ৯টি নন-লাইফ বা সাধারণ বীমা কোম্পানি। জীবন বীমা কোম্পানিগুলো হলো- বায়রা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, গোল্ডেন লাইফ ইন্স্যুরেন্স, হোমল্যান্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স, সানফ্লাওয়ার লাইফ ইন্স্যুরেন্স, বেস্ট লাইফ ইন্স্যুরেন্স, চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স, এনআরবি গ্লোবাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স, প্রটেক্টিভ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, আলফা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ডায়মন্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স, গার্ডিয়ান লাইফ ইন্স্যুরেন্স, যমুনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, মার্কেন্টাইল ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, স্বদেশ লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স এবং লাইফ ইন্স্যুরেন্স কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ। অন্যদিকে ৯টি নন-লাইফ বীমা কোম্পানি হলো– ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স, মেঘনা ইন্স্যুরেন্স, সাউথ এশিয়া ইন্স্যুরেন্স, ইসলামী কমার্শিয়াল ইন্স্যুরেন্স, ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স, দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্স, সেনা কল্যাণ ইন্স্যুরেন্স এবং সিকদার ইন্স্যুরেন্স।
উল্লেখিত কোম্পানিগুলোর মধ্যে এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্স, দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, ক্রিস্টল ইন্স্যুরেন্স এবং সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স এই ৪ বীমা কোম্পানির আইপিও’র জন্য বিএসইসিতে আবেদন করেছে।
বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) আইন করে এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্টভাবে কতিপয় শর্ত বেঁধে দিয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম শর্তগুলো হচ্ছে; আর্থিক স্বচ্ছলতা (Solvency margin) এবং বিগত বছরে মুনাফা অর্জন (Earning profit in the previous year)। অনেক বীমা কোম্পানির পর্যাপ্ত পরিশোধিত মূলধনের ঘাটতি রয়েছে। বীমা আইন অনুযায়ী যে পরিমাণ পরিশোধিত মূলধন নির্ধারণ করা হয়েছে বেশির ভাগ বীমা কোম্পানির মূলধন তার নীচে অবস্থান করছে। দ্বিতীয় শর্তের বেলায় মুনাফা অর্জন করা তো দূরের কথা, প্রায় সবগুলো বীমা কোম্পানি আর্থিক অস্বচ্ছলতায় ভুগছে। এসব শর্তসমূহ সঠিক বা যথাযথভাবে পূরণ করা ব্যতিরেকে বীমা কোম্পানির পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করা সম্ভব নয় বলে জানা গেছে।
শেয়ারবার্তা / আনিস