পুঁজিবাজারে গতি ফেরাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৬ নির্দেশনায় আশাবাদী হয়ে উঠেছেন পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীরা। ইতোমধ্যে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার টানা পতন থেকে বেরিয়ে পুঁজিবাজারে বড় উল্লম্ফনের দেখা মিলেছে। সামনের দিনগুলোতেও পুঁজিবাজারে ইতিবাচক ধারা বজায় থাকবে বলে তারা বেশ আশাবাদী।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত সপ্তাহে ডিএসই-এর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের সপ্তাহের তুলনায় ৪৭ দশমিক ৫৬ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ১৩ শতাংশ কমেছে। আগের সপ্তাহে এই সূচকটি কমে ২৬১ দশমিক ৯০ পয়েন্ট বা ৫ দশমিক ৮৭ শতাংশ হয়। অর্থাৎ দুই সপ্তাহের টানা পতনে ডিএসই-এর প্রধান মূল্যসূচক কমেছে ৩১০ পয়েন্ট। এ সময়ে বড় পতনের কবলে ছিল দেশের উভয় পুঁজিবাজার।
বড় ধসের কবলে পড়া পুঁজিবাজার নিয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির চেয়ারম্যান খায়রুল হোসেনসহ সংশ্লিষ্টদের ডেকে নিয়ে বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার দুপুরের ওই বৈঠক থেকে পুঁজিবাজারের এই অবস্থার উত্তরণে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি, সহজ শর্তে ঋণের ব্যবস্থাসহ ছয়টি নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর দফতরে সংশ্লিষ্টদের তলব করার খবরটি বৃহস্পতিবার শেষ বেলায় পুঁজিবাজারে চাউর হয়। এরফলে শেষ বেলায় উভয় বাজারে সূচকে বড় উল্লম্ফন দেখা দেয়।
এদিকে, রাষ্ট্রায়াত্ব সোনালী ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক ও রূপালী ব্যাংক পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নেয়। বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রতিষ্ঠানগুলোর সিইও এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালকদরে যৌথ বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়।
অন্যদিকে, পুঁজিবাজারের গতি ফেরাতে বাংলাদেশ ব্যাংক স্বল্প সুদে স্ট্রেকহোল্ডারদের অর্থ যোগান দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। বুধবার বিকেলে প্রতিষ্ঠানটি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকেও নিয়মের মধ্যে থেকে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ বাড়ানোর নির্দেশ দেয়।
পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এতোদিন বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো দোটানায় ছিল। পুঁজিবাজারে এক’পা এগুলো তারা তিন’পা পিছিয়েছে। এবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে পুঁজিবাজারে গতি ফেরানোর নির্দেশ দিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর এখন আর সক্রিয় হতে বাধা নেই। যারা এতোদিন পুঁজিবাজরে নেতিবাচক ভূমিকায় ছিল, তারাও এবার ইতিবাচক ভূমিকায় ফিরবে।
পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টদের আশা, আস্থাহীনতার বৃত্ত কেটে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার উন্মুক্ত হতে যাচ্ছে পুঁজিবাজারে। বিনিয়োগকারীরাও পুঁজি ফিরে পাওয়ার নতুন আশায় বাজারে ফিরবেন। আর প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরাও এবার পিছিয়ে থাকবে বলে মনে হয় না।
প্রবীণ বিনিয়োগকারী হেলাল উদ্দিন শেয়ারবার্তাকে বলেন, গত বছর প্রায় পুরোটা সময় জুড়েই ছিল পুঁজিবাজারে পতন প্রবণতা। পুঁজি হারিয়ে ৩০ লাখ বিনিয়োগকারী এখন প্রায় দিশেহারা। এমতাবস্থায়, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা পুঁজিবাজারে গতি ফেরাতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিলেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার প্রেক্ষিতে আমি এখন পুঁজিবাজার নিয়ে বেশ আশাবাদী। কারণ যারা এতদিন পুঁজিবাজারে নেতিবাচক ভূমিকায় ছিল, তারাও এবার তাদের মনোভাব পরিবর্তন করবে। সব মিলিয়ে পুঁজিবাজারে নতুন আশার সঞ্চার হবে তিনি মনে করেন।
শেয়ারবার্তা / আনিস