ব্যাংকগুলোতে গ্রাহকের আমানতের বিপরীতে দু’লাখ টাকা পর্যন্ত বীমার আওতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবনা অর্থ মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়া হয়েছে। গত ডিসেম্বর মাসে এ সংক্রান্ত চূড়ান্ত প্রস্তাবনা জমা দেয়া হয়েছে। এছাড়া নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর আমানতও বীমার আওতায় আসছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি সূত্র জানিয়েছে, খুব শিগগিরই এটি পাস হয়ে আসবে। এরপরই সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বীমার কাঠামো কি হবে তা চূড়ান্ত করা হবে। ইতিমধ্যেই মন্ত্রণালয় বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপোজিট ইন্স্যুরেন্স বিভাগের কয়েক জন কর্মকর্তা মন্ত্রণালয়কে সহায়তা করছে।
এ বিষয়ে ডিপোজিট ইন্স্যুরেন্স বিভাগের উপ-মহাব্যবস্থাপক দীপ্তি রাণী হালদার বলেন, ডিসেম্বরের শেষ দিকে নতুন আইনটি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। আইনটি চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত বলা যাচ্ছে না- কত টাকা পর্যন্ত বীমার আওতায় আসবে। তবে আগের চেয়ে বাড়ানো হচ্ছে এটি নিশ্চিত।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, অনেক সময় মন্ত্রণালয় প্রস্তাবিত আইনে কিছু পরিবর্তন করে থাকে। ফলে আইনের বিষয়টি চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত কিছু বলা যাবে না। খুব শিগগিরই বিষয়টি চূড়ান্ত হয়ে যাবে। এমনটিই আশা করছেন সংশ্লিষ্ট বিভাগ। বর্তমানে মাত্র এক লাখ টাকা পর্যন্ত বীমা কাভারেজের আওতায় রয়েছে। এটিকে অত্যন্ত অপ্রতুল বলে দীর্ঘ দিন থেকেই সমালোচনা করে আসছে অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, এটিকে অন্তত ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত করা উচিত।
এদিকে ব্যাংকগুলোর মতো ‘আমানত বীমা’ না থাকায় ব্যাংকবর্হিভুত আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা লিজিং কোম্পানির আমানতের পুরোটাই ঝুঁকিতে রয়েছে। বর্তমানে লিজিং কোম্পানিগুলোর হাতে ৪২ হাজার কোটি টাকা আমানত রয়েছে।
ব্যাংকের গ্রাহকদের জন্য মাত্র এক লাখ টাকা পর্যন্ত বীমার আওতায় রয়েছে। অর্থাৎ যদি কেউ ৫০ লাখ টাকাও ব্যাংকে রাখে- সেক্ষেত্রে মাত্র এক লাখ টাকার ক্ষতিপূরণ পাবে। নতুন আমানত বীমা আইনে দু’ লাখ টাকা পর্যন্ত বাড়ানো হচ্ছে। পাশাপাশি লিজিং কোম্পানিগুলোকে আমানত বীমার অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে বলেন, বিষয়টি সংশ্লিষ্ট বিভাগ বলতে পারবে। তারা সার্বক্ষণিক বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগ বলছে, কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান দেউলিয়া হয়ে গেলে ওই প্রতিষ্ঠানের আমানতকারীদের কিছুটা হলেও সুরক্ষা দিতে এ আইন যুগোপযুগি করা হচ্ছে। আইনে আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষায় আন্তর্জাতিক নীতিমালা অনুযায়ী ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের সংগ্রহ করা আমানতের বিপরীতে নির্ধারিত হারে প্রিমিয়াম জমা দিতে হবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে।
এটি ‘আমানত বীমা তহবিল’ নামে পরিচালিত হবে। কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেলে এ তহবিল থেকে আমানতকারীদের আংশিক ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে। নতুন আইনে দু’ লাখ টাকা পর্যন্ত আমানত আছে- এমন গ্রাহকরাই এ সুরক্ষা পাবেন।
শেয়ারবার্তা/ সাইফুল