1. [email protected] : শেয়ারবার্তা প্রতিবেদক : শেয়ারবার্তা প্রতিবেদক
  2. [email protected] : শেয়ারবার্তা : nayan শেয়ারবার্তা
  3. [email protected] : news uploder : news uploder
পুঁজিবাজারের অধিকাংশ ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা বেড়েছে
শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৩৮ এএম

পুঁজিবাজারের অধিকাংশ ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা বেড়েছে

  • আপডেট সময় : বুধবার, ১ জানুয়ারী, ২০২০

বছরজুড়ে ব্যাংকখাতের বিনিয়োগে ছিল মন্দা। ধারাবাহিকভাবে কমেছে বেসরকারি ঋণ প্রবৃদ্ধি। লাগামহীন ছিল খেলাপি ঋণ। আশানুরূপ হয়নি আমদানি-রফতানি বাণিজ্য। ঋণ জালিয়াতি, অর্থ আত্মসাৎ আর নানা অনিয়মে দুরবস্থায় ছিল ব্যাংকিং খাত। তারপরও বিদায়ী ২০১৯ বছর শেষে পুঁজিবাজারের অধিকাংশ ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা বেড়েছে।

জানা গেছে, দেশের বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে বেশিরভাগই পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত। প্রান্তিক (তিন মাস) ভিত্তিতে ব্যাংকগুলো তাদের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এবং স্টক এক্সঞ্জের কাছে জমা দেয়।

এর আগে কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ সভায় আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদন করতে হয়। এরপর পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের জন্য সেই তথ্য স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে। নিয়ম অনুযায়ী, স্টক এক্সচেঞ্জে জমার দেয়ার আগে ব্যাংকগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে এসব তথ্য জানাতে পারবে না।

তবে বিভিন্ন সূত্রে বেশ কিছু ব্যাংকের পরিচালন মুনাফার তথ্য পাওয়া গেছে। এতে দেখা যায়, বেশিরভাগ ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা বেড়েছে। তবে এ মুনাফা প্রত্যাশা অনুযায়ী হয়নি বলে জানিয়েছে ব্যাংকাররা।

তাদের অভিমত, এবার ব্যাংকগুলোর পরিচালন মুনাফার বড় অংশই এসেছে কমিশন, সার্ভিস চার্জ, আমদানি রফতানি আয় থেকে। ব্যাংকের আয়ের প্রধান খাত সুদ হলেও এবার এই খাত থেকে আদায় হয়েছে খুবই কম। কারণ আমানত ও ঋণের সুদহারের পার্থক্য (স্প্রেড) কম ছিল। যে কারণে মুনাফার অঙ্ক প্রত্যাশা অনুযায়ী হয়নি। এ ছাড়া তারল্য সংকটে এ বছর ঋণ বিতরণ কাঙ্খিত পর্যায় হয়নি। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে মুনাফায়।

এদিকে পরিচালন মুনাফা ব্যাংকের প্রকৃত মুনাফা নয়। পরিচালন মুনাফা থেকে ঋণের বিপরীতে নির্ধারিত হারে প্রভিশন বা নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণ এবং কর্পোরেট কর পরিশোধের পর নিট মুনাফার হিসাব হবে। নিট মুনাফাই ব্যাংকের প্রকৃত মুনাফা। নানা উপায়ে ব্যাংকগুলো ভালো পরিচালন মুনাফা দেখালেও সম্প্রতি বছরগুলোর তুলনামূলক চিত্র থেকে দেখা যাচ্ছে প্রকৃত মুনাফা খুব ভালো অবস্থায় নেই।

ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের (ইবিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও এবিবি’র চেয়ারম্যান আলী রেজা ইফতেখার জানান, পরিচালন মুনাফা বেড়েছে। তবে আশানুরূপ হয়নি। কারণ ঋণ বিতরণ কম ছিল। আমদানি রফতানি কম হয়েছে। খেলাপি বেড়েছে। এসব কারণে মুনাফা কম হয়েছে বলে জানান তিনি।

যেসব ব্যাংকগুলোর পরিচালন মুনাফার তথ্য পাওয়া গেছে এর মধ্যে, ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর শেষে ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা হয়েছে ৯৪৮ কোটি টাকা, যা আগের বছর একই সময় ছিল ১ হাজার ২২৯ কোটি টাকা। সাউথইস্ট ব্যাংকের মুনাফা এক হাজার ৬০ কোটি টাকা, যা আগের বছর ছিল ১ হাজার কোটি টাকা, ইস্টার্ন ব্যাংকের ৯০০ কোটি টাকা, যা আগের বছর ছিল ৭৮০ কোটি টাকা, আল আরাফা ইসলামী ব্যাংকের ৮০১ কোটি টাকা, আগের বছর ছিল ৬৪০ এক্সিম ব্যাংকের ৭৮০ কোটি টাকা আগের বছর ছিল ৭১০ কোটি টাকা, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা হয়েছে ৬৮২ কোটি টাকা, যা আগের বছর ছিল ৬৬৭ কোটি টাকা

মার্কেটাইল ব্যাংকের ৭৫৩ কোটি টাকা, আগের বছর মুনাফা ছিল ৬৭৩ কোটি টাকা, যমুনা ব্যাংকের ৭৩০ কোটি টাকা, যা আগের বছর ছিল ৬২০ কোটি টাকা। শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের ৬৫৩ কোটি টাকা, যা আগের বছর ছিল ৪৭৫ কোটি টাকা।

ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ৫৫১ কোটি টাকা, আগের বছর ছিল ৫২৫ কোটি টাকা, ন্যাশনাল ক্রেডিট অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা ৭৫৪ কোটি টাকা, পূবালী ব্যাংকের এক হাজার ৫০ কোটি টাকা, যা আগের বছর ছিল এক হাজার ১০ কোটি টাকা। সিটি ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা হয়েছে ৮২০ কোটি টাকা, ওয়ার ব্যাংকের ৪৩৩ কোটি টাকা,, প্রাইম ব্যাংকের ৭০০ কোটি টাকা এবং ব্যাংক এশিয়ার মুনাফা হয়েছে ৯৪০ কোটি টাকা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেসরকারি একটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জানান, যে কোন ব্যবসার প্রবৃদ্ধি খুবই স্বাভাবিক। ব্যাংকগুলোর পরিচালন মুনাফাতেও গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে। তবে ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা প্রকৃত মুনাফা নয়। বছর শেষে পরিচালন মুনাফা থেকে কর, প্রভিশনসহ অনেক কিছু বাদ দিয়ে নিট বা প্রকৃত মুনাফা হিসাব করা হয়। ফলে মুনাফা খুব বেশি বাড়বে বলে মনে হয় না।

জানা গেছে, পরিচালন মুনাফা থেকে ব্যাংকগুলোকে আগে নিয়মিত ঋণ ও খেলাপি ঋণের বিপরীতে প্রভিশন রাখতে হবে। নিয়মিত ঋণের বিপরীতে প্রভিশন ১ থেকে ২ শতাংশ, খেলাপির মধ্যে নিম্নমান ঋণে ২০ শতাংশ, সন্দেহজনক ঋণে ৫০ শতাংশ এবং মন্দ ঋণে শতভাগ প্রভিশন রাখতে হয়। এরপরে মূলধন বাড়াতে তহবিলের একটি অংশ নিতে হবে রিজার্ভ তহবিলে। পরিশোধ করতে হবে ৪০ শতাংশ আয়কর। এরপরে যা থাকবে তা থেকে শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ দেওয়া যাবে।

ফলে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীকে অপেক্ষা করতে হবে নিট বা প্রকৃত মুনাফার হিসাব পাওয়া পর্যন্ত। আবার অনেক ক্ষেত্রেই নিট মুনাফা হলেও তার সম্পূর্ণ অর্থ লভ্যাংশ আকারে বিতরণ করা হবে না।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান বলছে, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংক খাতে বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯ লাখ ৬৯ হাজার ৮৮২ কোটি টাকা। এর মধ্যে অবলোপন বাদে খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ১ লাখ ১৬ হাজার ২৮৮ কোটি টাকা। যা মোট ঋণের ১১ দশমিক ৯৯ শতাংশ। আর অবলোপনসহ খেলাপি ঋণের পরিমাণ দেড় লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। ২০১৮ সালের ডিসেম্বর শেষে খেলাপি ঋণ ছিল ৯৩ হাজার ৯৯১ কোটি টাকা। এ হিসা‌বে গত নয় মাসে দেশে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২২ হাজার ৯ কোটি টাকা।

শেয়ারবার্তা / আনিস

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:

ভালো লাগলে শেয়ার করবেন...

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ