1. [email protected] : শেয়ারবার্তা প্রতিবেদক : শেয়ারবার্তা প্রতিবেদক
  2. [email protected] : শেয়ারবার্তা : nayan শেয়ারবার্তা
  3. [email protected] : news uploder : news uploder
মুনাফা থেকে বড় লোকসানে একমি পেস্টিসাইডস
বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ১২:৩৩ পিএম

মুনাফা থেকে বড় লোকসানে একমি পেস্টিসাইডস

  • আপডেট সময় : শুক্রবার, ৩ মে, ২০২৪
Acme-Pesticide

একমি পেস্টিসাইডস লিমিটেড ২০২১ সালে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছিল। কোম্পানিটির ২০২০-২১ অর্থবছরে হিসাববছরে যা ছিল ২ টাকা ১২ পয়সা এবং ২০২১-২২ অর্থবছরে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) ছিল ১ টাকা ৫১ পয়সা। কিন্তু ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রতিষ্ঠানটির তৃতীয় প্রান্তিক শেষে শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৫৯ পয়সা। অর্থাৎ তালিকাভুক্ত হওয়ার পর থেকে ধারাবাহিকভাবে কমছে কোম্পানিটির মুনাফা, যা সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হতাশ করছে।

একমি পেস্টিসাইডস সূত্রে জানা যায়, সর্বশেষ অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৩-২৪ হিসাববছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে (জুলাই-মার্চ) একমি পেস্টিসাইডসের শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৫৯ পয়সা। অথচ আগের হিসাববছরের একই সময়ে ৮৬ পয়সা লাভে ছিল। অর্থাৎ একবছরের ব্যবধানে শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে এক টাকা ৪৫ পয়সা। আর ২০২১-২২ অর্থবছরের তৃতীয় প্রান্তিক শেষে ইপিএস ছিল এক টাকা ৩০ পয়সা। এছাড়া ৩০ জুন সমাপ্ত ২০২১-২২ হিসাববছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের ৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল একমি পেস্টিসাইডস। তখন কোম্পানিটির ইপিএস ছিল ১ টাকা ৫১ পয়সা এবং আগের হিসাববছরে যা ছিল ২ টাকা ১২ পয়সা। অন্যদিকে ২০২১ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত অর্থবছরের জন্য কোনো লভ্যাংশ দেয়া হয়নি। অথচ পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার আগে ৩০ জুন ২০২০ প্রতিষ্ঠানটির নিট মুনাফা ছিল ১৯ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। একই সময়ে শেয়ারপ্রতি আয় ছিল দুই টাকা এবং পুঞ্জিভূতদ্ধ মুনাফার পরিমাণ ছিল ৬৬ কোটি ৭৮ লাখ টাকা।

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, একমি পেস্টিসাইডসকে বিএসইসি গত ২০২১ সালের ১৯ জুলাই ৭৮৫তম সভায় আইপিওর মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে ৩০ কোটি টাকা উত্তোলনের অনুমোদন দেয়। কোম্পানিটি অভিহিত মূল্য ১০ টাকা দামে ৩ কোটি সাধারণ শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে ৩০ কোটি টাকা উত্তোলন করে। আর উত্তোলিত টাকা দিয়ে ব্যবসা উন্নয়নে কাজ করলেও তালিকাভুক্ত হওয়ার প্রথম বছরে বিনিয়োগকারীদের মাত্র ৫ শতাংশ লভ্যাংশ দেয়া হয়। এরপর ২০২৩ সালে বিনিয়োগকারীদের শেয়ারপ্রতি মাত্র এক পয়সা লভ্যাংশ দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়। অথচ কোম্পানির রিজার্ভে জমা আছে ১০৭ কোটি টাকা। আর ২০২২-২৩ অর্থবছরের শেয়ার প্রতি আয় ছিল ৯৬ পয়সা এবং নিট মুনাফা প্রায় ১৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ একমি পেস্টিসাইডস মুনাফায় থাকলেও বিনিয়োগকারীদের ঠকানোর জন্য নামমাত্র লভ্যাংশ ঘোষণা করে, যা সাধারণ বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে লভ্যাংশের নামে তামাশা। একইভাবে আইপিও’র মাধ্যমে উত্তোলিত টাকা থেকে ন্যাশনাল ফাইন্যান্সের ঋণ পরিশোধের কথা থাকলেও কোম্পানিটি ঋণ পরিশোধ করেনি। ফলে খেলাপি হয়ে পড়েছিল। আর খেলাপি ঋণ আদায়ে অর্থঋণ আদালতে মামলা করে ন্যাশনাল ফাইন্যান্স।

একমি পেস্টিসাইডসের একাধিক বিনিয়োগকারী এ প্রতিবেদককে বলেন, একমি পেস্টিসাইডস বাজার থেকে টাকা নেয়ার জন্য এসেছে। কিন্তু বিনিয়োগকারীদের গত দুই বছর উল্লেখ করার মতো লভ্যাংশ দিতে পারেনি। ২০২২-২৩ অর্থবছরে শেয়ারপ্রতি ৯৬ পয়সা হিসেবে ১২ কোটি ৯৬ লাখ টাকার নিট মুনাফা হয়েছে। এর বিপরীতে কোম্পানিটির পর্ষদ ১ পয়সা বা শূন্য দশমিক ১০ শতাংশ হিসেবে ১৩ লাখ ৫০ হাজার টাকার ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে, যা মুনাফার ১ দশমিক ০৪ শতাংশ। বাকি ১২ কোটি ৮২ লাখ ৫০ হাজার টাকা বা ৯৮ দশমিক ৯৬ শতাংশ রিটেইন আর্নিংসে রাখা হবে। এছাড়া আইপিও ফান্ডের পুরো টাকার ব্যবহার করতে পারেনি।

এ বিষয়ে জানার জন্য একমি পেস্টিসাইডসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রেজাউর রহমান সিনহার মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। ফলে এ বিষয়ে তার মন্তব্য পাওয়া যায়নি। পরে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান অর্থ কর্মকর্তা সেলিম রেজার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ৯ মাসের হিসাবে ৫৯ পয়সা লোকসান হয়েছে। তবে তিন মাসে (জানুয়ারি-মার্চ) আমাদের লোকসান ৩ পয়সা। আসলে ব্যবসায় তো আপ-ডাউন থাকে। পরের বার থেকে ঠিক হয়ে যাবে। তবে তিনি লোকসানের সুনির্দিষ্ট কারণ বলেননি।

সাম্প্রতিক সময়ে আলাপকালে বিএসইসির অতিরিক্ত পরিচালক (সুপারভিশন অ্যান্ড রেগুলেশন্স অব ইস্যুয়ার কোম্পানিজ) মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম শেয়ার বিজকে বলেন, একমি পেস্টিসাইডসের ঘোষিত লভ্যাংশ নামমাত্র লভ্যাংশ। বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। এছাড়া কোম্পানিটির আরও বেশকিছু বিষয় নিয়ে আমরা কাজ করছি। এসব বিষয় নিয়ে কথা বলার জন্য আমরা তাদের ডাকব।

উল্লেখ্য, ‘বি’ ক্যাটেগরির কোম্পানিটির উদ্যোক্তা পরিচালকদের ৩১ শতাংশ ৮০ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগাকারীদের ১৯ দশমিক ২৫ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে ৪৮ দশমিক ৯৫ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার কোম্পানিটির সমাপনী দর ছিল ১৮ টাকা ৪০ পয়সা।

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:

ভালো লাগলে শেয়ার করবেন...

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ