দেশের শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের শেয়ার কারসাজির দায়ে এজি মাহমুদ ও মো: সাইফ উল্লাহ নামে দুই বিনিয়োগকারীর ৫৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এরমধ্যে এজি মাহমুদকে ২৫ লাখ টাকা ও মোঃ সাইফ উল্লাহকে ৩০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) সম্প্রতি এই দুই বিনিয়োগকারীকে জরিমানা করেছে। গত দেড় বছরের ব্যবধানে তাদেরকে দ্বিতীয়বারের মতো শেয়ার কারসাজির দায়ে জরিমানা করলো।
কমিশনের তদন্তে দেখা গেছে, এজি মাহমুদ ও মো: সাইফ উল্লাহ ইনডেক্স এগ্রোর শেয়ার নিয়ে কারসাজিতে নিয়োজিত ছিলেন। চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে তাদের জরিমানা করা হয়। কারণ তারা উভয়ই কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন করে সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘন করেছে।
তবে এজি মাহমুদ ও মোঃ সাইফ উল্লাহ কিভাবে ইনডেক্স এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার কারসাজি করেছেন তা প্রকাশ করেনি কমিশন।
এর আগে ২০২২ সালের অক্টোবরে ন্যাশনাল ফিড মিলের শেয়ার নিয়ে কারসাজির জন্য এজি মাহমুদ এবং মোঃ সাইফ উল্লাহকে জরিমানা করেছিল বিএসইসি। তখন এজি মাহমুদকে ৩ কোটি টাকা এবং মোঃ সাইফ উল্লাহকে ৮৫ লাখ টাকা জরিমানা করেছিল।
এছাড়া, সাফকো স্পিনিংয়ের শেয়ার কারসাজির জন্যও সাইফ উল্লাহকে ২৫ লাখ টাকা জরিমানা করেছিল কমিশন।
এর আগে কমিশন এজি মাহমুদ, সাইফ উল্লাহ, কাজী সাদিয়া হাসান এবং ডিআইটি কো-অপারেটিভ লিমিটেডসহ চারজনকে বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের শেয়ার কারসাজির জন্য ২ কোটি ৪০ লাখ টাকা জরিমানা করেছিল। যদিও ওই চার বিনিয়োগকারী কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন করে প্রায় ৫ কোটি টাকা লাভ করেছিল বলে বিএসইসির তদন্তে উঠে এসেছে।
২০০০ সালে ইনডেক্স এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড কার্যক্রম শুরু করে। পোল্ট্রি এবং ফিশ ফিড প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানটি নতুন যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম সংগ্রহের পাশাপাশি ভবন নির্মাণ এবং অন্যান্য সিভিল কাজ সম্পাদনের জন্য প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে ২০২১ সালে শেয়ারবাজার থেকে ৫০ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে।
কোম্পানিটি কাঁচামাল সংরক্ষণের ক্ষমতা ১৬ হাজার টন বাড়ানোর জন্য প্রায় ১৪ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। ময়মনসিংহের ভালুকায় ফিড মিল বিভাগে স্বয়ংক্রিয় লোডিং এবং আনলোডিং সুবিধা সহ কোম্পানিটি দুটি সাইলো স্থাপন করেছে – প্রতিটির ধারণক্ষমতা ৪ হাজার টন। কোম্পানিটির ২৬ হাজার টন ধারণক্ষমতা সহ পাঁচটি স্বয়ংক্রিয় স্টোরেজ সুবিধা রয়েছে।
কোম্পানির তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তাদের আইপিও তহবিলের ৯ কোটি টাকা অব্যয় রয়ে গেছে। প্রতিষ্ঠানটি বাকি অর্থ ভবন নির্মাণ ও যন্ত্রপাতি ক্রয় করতে ব্যয় করবে। কোম্পানির এই আইপিও তহবিল ২০২৩সালের আগস্টে ব্যবহার করার কথা ছিল। তবে কোম্পানিটি আইপিও তহবিল সম্পূর্ণভাবে ব্যবহার করতে পারেনি।
সর্বশেষ ২০২৩ সালে ইনডেক্স এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড শেয়ারহোল্ডারদের ২০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে। এর আগে ২০২১ সালে শেয়ারবাজারে আসার প্রথম বছর দিয়েছিল ২৫ শতাংশ ক্যাশ ও ২০২২ সালে ১০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড।
চলতি অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর’২৩) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ২ টাকা ৬ পয়সা। যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ২ টাকা ২২ পয়সা।