পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোতে পড়ে থাকা ২০ হাজার কোটি টাকার বেশি অবণ্টিত ক্যাশ ডিভিডেন্ড ও বোনাস শেয়ার নিয়ে শেয়ারবাজার স্থিতিশীলকরণ তহবিল (সিএমএসএফ) গঠন হবে বলে জানিয়েছিল শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। কিন্তু তহবিল গঠনের এক বছর পর এখন পর্যন্ত মাত্র ৭৯৮ কোটি টাকার নগদ অর্থ ও শেয়ার তহবিলে হস্তান্তর হয়েছে। সিএমএসএফের অডিট অ্যান্ড অ্যাকাউন্টস ম্যানেজমেন্ট কমিটি (এএএমসি) সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা থাকার পরও তালিকাভুক্ত সব কোম্পানি তাদের অবণ্টিত ডিভিডেন্ড তহবিলে হস্তান্তর না করায় সম্প্রতি এক বৈঠকে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে এই কমিটি।
যেসব কোম্পানি তহবিলে অবণ্টিত ডিভিডেন্ড দেয়নি, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনা করছে তহবিলের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ।
গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এই তহবিলে বিভিন্ন কোম্পানির অবণ্টিত ক্যাশ ডিভিডেন্ডের ৪৬০ কোটি টাকা হস্তান্তর করা হয়েছে। এর বাইরে অবণ্টিত বা অদাবিকৃত যে বোনাস শেয়ার হস্তান্তর করেছে বাজারমূল্যে তার দাম ছিল ৩৩৮ কোটি টাকা।
এদিকে, বাজারে পতন ঠেকাতে এই তহবিল থেকে এখন পর্যন্ত ১৫০ কোটি টাকার শেয়ার কেনা হয়েছে বলে জানিয়েছে অডিট কমিটি। সরকারি বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান আইসিবির মাধ্যমে এই বিনিয়োগ করা হয়েছে।
এর বাইরে ১০০ কোটি টাকা আকারের আইসিবি এএমসিএল সিএমএসএফ গোল্ডেন জুবিলি মিউচুয়াল ফান্ড নামে একটি মেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ড গঠন করা হয়েছে। উদ্যোক্তা হিসেবে এই ফান্ডে সিএমএসএফ ৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। এই মিউচুয়াল ফান্ড ব্যবস্থাপনায় আছে আইসিবির সহযোগী প্রতিষ্ঠান আইসিবি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি।
জানা গেছে, কার্যক্রম শুরুর পর এখন পর্যন্ত বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ২২ লাখ ৯৬ হাজার ৮৮০ টাকা ডিভিডেন্ডের দাবি এসেছিল। এর মধ্যে ২১ লাখ ৩৩ হাজার ২২৬ টাকার দাবি নিষ্পত্তি করা হয়েছে, যা মোট দাবির ৯৩ শতাংশ।
শেয়ারবাজার স্থিতিশীলকরণ তহবিলের অডিট কমিটির প্রধান ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের (আইআরডি) সাবেক অতিরিক্ত সচিব মো. আবদুর রউফ জানিয়েছেন. এখন পর্যন্ত এই তহবিলে যে অর্থ ও শেয়ার হস্তান্তর হয়েছে, তা প্রকৃত হস্তান্তরযোগ্য অর্থ ও শেয়ারের তুলনায় নগণ্য। আগামী ৩১ মের মধ্যে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো অবণ্টিত ডিভিডেন্ড হস্তান্তর না করলে বিএসইসির সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অবণ্টিত ডিভিডেন্ড ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা আনতে তালিকাভুক্ত সব কোম্পানি থেকে অর্থ ও শেয়ার নিয়ে এই বিশেষ তহবিল গঠন করেছে বিএসইসি। তহবিলটি পরিচালনায় প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান নজিবুর রহমানের নেতৃত্বে একটি পর্ষদ রয়েছে।