চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স কেম্পানিকে ৮২ লাখ টাকা জরিমানা করেছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। যদিও এ জরিমানা মওকুফের জন্য পুনরায় আবেদন করে কোম্পানিটি। তবে কোনোভাবেই ধার্যকৃত জরিমানা মওকুফ হবে না বলে জানিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
জীবন বীমা কোম্পানির সার্বিক পরিস্থিতি ও ব্যবসায়িক চিত্র পর্যবেক্ষণ করে অ্যাকচুরিয়াল ভ্যালুয়েশনের বেসিস তৈরি করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা থেকে অনুমোদনপ্রাপ্ত অ্যাকচুয়ারি (সম্পদ ও দায় নিরূপনকারী)। কোম্পানির সম্পদ বেশি হলে সারপ্লাস থাকে, যা থেকে গ্রাহক ও বিনিয়োগকারীদের ভালো লভ্যাংশ দিতে পারে কোনো জীবন বীমা কোম্পানি। কিন্তু সম্পদের তুলনায় দায় বেশি হলে লভ্যাংশ দেয়া নিয়ে দেখা দেয় অনিশ্চয়তা।
আইডিআরএ’র সদস্য বোরহান উদ্দীন আহমেদ বলেন, কোম্পানিটির পুন:আবেদনের প্রেক্ষিতে রিভিউ শুনানি করে কর্তৃপক্ষ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এক্ষেত্রে জরিমানা মওকুফের আইনগত কোন সুযোগ আর নেই।
জানতে চাইলে চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (চলতি দায়িত্বে) এস.এম. জিয়াউল হক বলেন, আমরা জরিমানা মওকুফের জন্য রিভিউ আবেদন করেছিলাম। কিন্তু এ বিষয়ে আইডিআরএ থেকে এখনো আনুষ্ঠানকিভাবে কিছু জানানো হয়নি। কোম্পানির আগের ব্যবস্থাপনা দুর্বল ছিল। যার ফলে আজ এ অবস্থা। এখন ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন এসেছে। আশা করছি সামনের দিনগুলোতে ঘুরে দাঁড়াবে চার্টার্ড লাইফ।
জানা গেছে, বীমা কোম্পানির সংখ্যা বাড়লেও ঝুঁকি-সম্পদ-দায় নিরূপণের জন্য অনুমোদনপ্রাপ্ত অ্যাসোসিয়েট অ্যাকচুয়ারি আছেন মাত্র একজন। সরকার বা বেসরকারি খাতের কোম্পানিগুলো থেকেও অ্যাকচুয়ারি তৈরির জন্য কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। বর্তমানে জীবন বীমা কোম্পানিগুলোর অ্যাকচুরিয়াল ভ্যালুয়েশনের কাজ করছেন অ্যাসোসিয়েট অ্যাকচুয়ারি ড. সোহরাব উদ্দিন, যিনি রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান সাধারণ বীমা করপোরেশনের (এসবিসি) সাবেক চেয়ারম্যান। সোহরাব উদ্দীন ছাড়াও দেশে বর্তমানে দু’জন পূর্ণাঙ্গ অ্যাকচুয়ারি আছেন। তাদের একজন এম. শেফাক আহমেদ, আইডিআরএ’র সাবেক চেয়ারম্যান। আরেকজন হলেন প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্সের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাফর হালিম। তবে এই দু’জনের কেউই অ্যাকচুরিয়াল ভ্যালুয়েশনের জন্য আইডিআরএ থেকে অনুমোদনপ্রাপ্ত নন। এদিকে আইডিআরএ গঠিত হওয়ার পর ২০১১ সালে বিদেশি বা প্রবাসী অ্যাকচুয়ারি নিয়োগে কিছু শর্তারোপ করায় বাংলাদেশে কাজ করা ছেড়ে দিয়েছেন আরেক প্রবাসী অ্যাকচুয়ারি আফসার উদ্দিন আহমেদ। বিদেশে থাকলেও আগে তিনি বাংলাদেশি বীমা কোম্পানিগুলোকে ভ্যালুয়েশন সেবা দিচ্ছিলেন। তবে ২০১১ সালের পর বিদেশি, প্রবাসী কিংবা অনাবাসী কোনো অ্যাকচুয়ারি বাংলাদেশে সেবা দেয়ার জন্য অনুমোদন চাননি।
শেয়ারবার্তা/ সাইফুল ইসলাম