1. [email protected] : শেয়ারবার্তা প্রতিবেদক : শেয়ারবার্তা প্রতিবেদক
  2. [email protected] : শেয়ারবার্তা : nayan শেয়ারবার্তা
  3. [email protected] : news uploder : news uploder
৩ হাজার কোটি টাকা ঋণ পেয়েছে ইউনিক মেঘনাঘাট পাওয়ার
রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:০৪ পিএম

৩ হাজার কোটি টাকা ঋণ পেয়েছে ইউনিক মেঘনাঘাট পাওয়ার

  • আপডেট সময় : শনিবার, ১৯ জুন, ২০২১
unique-meghnaghat

ইউনিক গ্রুপের মালিকানাধীন ইউনিক মেঘনাঘাট পাওয়ার লিমিটেড নারায়ণগঞ্জের মেঘনাঘাটে ৫৮৪ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে ৩ হাজার কোটি টাকারও বেশি সিন্ডিকেটেড ঋণ পেয়েছে।

রাষ্ট্রায়াত্ব অগ্রণী ব্যাংকের নেতৃত্বে সিন্ডিকেটভুক্ত অন্য তিন রাষ্ট্রায়াত্ব ব্যাংক হচ্ছে সোনালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক ও রূপালী ব্যাংক লিমিটেড।

দেশের বেসরকারি উদ্যোগে বিদ্যুৎ খাতে রাষ্ট্রায়ত্ত চার ব্যাংকের এটিই সবচেয়ে বড় সিন্ডিকেটেড অর্থায়ন।

বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে অর্থায়নে গত মঙ্গলবার রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে সাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ইউনিক মেঘনাঘাট পাওয়ার লিমিটেড ও রাষ্ট্রায়ত্ত চার ব্যাংকের মধ্যে ‘সিন্ডিকেশন প্রজেক্ট লোন ফ্যাসিলিটি এগ্রিমেন্ট’ সই হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. জায়েদ বখত।

চুক্তিতে ইউনিক মেঘনাঘাট পাওয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও পদ্মা ব্যাংকের চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সারাফাত এবং অগ্রণী ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক (ক্রেডিট) ড. আব্দুল্লাহ আল মামুন ও রাষ্ট্রায়ত্ত অন্য তিন ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপকরা সই করেন।

বিদ্যুৎ প্রকল্পটির মোট ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ হাজার ৭৩ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। কেন্দ্রটি ২০২২ সালের জুলাইয়ের মধ্যে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারবে বলে অনুষ্ঠানে আশা প্রকাশ করা হয়।

অনুষ্ঠানে অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শামস্-উল ইসলাম, সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আতাউর রহমান প্রধান, জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুস সালাম আজাদ, রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ, ইউনিক মেঘনাঘাট পাওয়ারের চেয়ারম্যান ও ইউনিক গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নূর আলী, ইউনিক গ্রুপের অন্যান্য পরিচালক, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক বাংলাদেশের কান্ট্রি চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার নাসির এজাজ বিজয়, জিই বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজারসহ রাষ্ট্রায়ত্ত চার ব্যাংক ও ইউনিক মেঘনাঘাট পাওয়ারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

চুক্তি অনুসারে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণে রাষ্ট্রায়ত্ত চার ব্যাংক মিলে মেয়াদি, নির্মাণকালীন সুদ বা আইডিসিপি ও চলতি মূলধন বাবদ মোট ৩ হাজার ৫৫ কোটি ৩৮ লাখ টাকা অর্থায়ন করবে। ঋণ পরিশোধের গ্রেস পিরিয়ড চুক্তি স্বাক্ষরের তারিখ থেকে তিন বছর। ঋণের সুদহার নির্ধারণ করা হয়েছে ৯ শতাংশ। ঋণ পরিশোধের জন্য ১০ বছর সময় পাবে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি।

এ অর্থায়নের ক্ষেত্রে লিড অ্যারেঞ্জার হিসেবে কাজ করছে রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড। ব্যাংকটি এ প্রকল্পে মোট ৯৬৮ কোটি ১ লাখ টাকা অর্থায়ন করবে। এর মধ্যে মেয়াদি ৭৩৯ কোটি ৯৮ লাখ, আইডিসিপি ১৬৬ কোটি ৪৯ লাখ ও চলতি মূলধন ৬১ কোটি ৫৪ লাখ টাকা।

বিদ্যুৎ প্রকল্পটিতে সবচেয়ে বেশি ৯৮৮ কোটি ২৭ লাখ টাকা অর্থায়ন করবে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক লিমিটেড। এর মধ্যে ৮০৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা মেয়াদি ও ১৮১ কোটি ৫২ লাখ টাকা আইডিসিপি ঋণ। রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংক লিমিটেড বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে মোট ৫৪৩ কোটি ৮৮ লাখ টাকা অর্থায়ন করবে। এর মধ্যে ৪৪৩ কোটি ৯৯ লাখ টাকা মেয়াদি ও ৯৯ কোটি ৯০ লাখ টাকা আইডিসিপি ঋণ।

সিন্ডিকেটেড অর্থায়নের আওতায় রাষ্ট্রায়ত্ত রূপালী ব্যাংক লিমিটেড ইউনিক মেঘনাঘাট পাওয়ারকে ৫৫৫ কোটি ২১ লাখ টাকা ঋণ দেবে। এর মধ্যে ৪৫৩ কোটি ২৩ লাখ টাকা মেয়াদি আর ১০১ কোটি ৯৮ লাখ টাকা আইডিসিপি।

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁর মেঘনাঘাটে ৫৮৪ মেগাওয়াট সক্ষমতার কম্বাইন্ড সাইকেল এ বিদ্যুৎকেন্দ্র চলবে প্রাকৃতিক গ্যাস ও রিগ্যাসিফায়েড লিকুইফায়েড ন্যাচারাল গ্যাসে (আরএলএনজি)। ইউনিক গ্রুপের মালিকানাধীন তালিকাভুক্ত কোম্পানি ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টসের নেতৃত্বাধীন কনসোর্টিয়ামকে নির্মাণ, মালিকানা ও পরিচালনার (বিওও) শর্তে ২০১৮ সালের ২৫ জুলাই সম্মতিপত্র (এলওআই) দেয় বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি)।

কনসোর্টিয়ামের অন্য দুই অংশীদার হচ্ছে বিদেশী কারিগরি অংশীদার গুয়াইয়ামা পিআর হোল্ডিংস বিভি (বর্তমানে জিই ক্যাপিটাল গ্লোবাল এনার্জি ইনভেস্টমেন্ট বিভি, যা জেনারেল ইলেকট্রিকের একটি সাবসিডিয়ারি) এবং স্থানীয় আর্থিক প্রতিষ্ঠান স্ট্র্যাটেজিক ফাইন্যান্স লিমিটেড।

মেঘনাঘাট এলাকায় নিজেদের প্লট থেকে বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য ২৫ একর জমি দিয়েছে ইউনিক হোটেল কর্তৃপক্ষ। প্রকল্পের কারিগরি অংশীদার জিই ক্যাপিটাল গ্লোবাল এনার্জি প্লান্টের সব যন্ত্রপাতি সরবরাহ করছে। এগুলোর মূল্যমানই তাদের ইকুইটিতে রূপান্তর হবে। এলওআই অনুসারে, জ্বালানি খরচের বাইরে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের জন্য সরকারের কাছ থেকে লিভারেজ ট্যারিফ হিসেবে ২ দশমিক ০২৩৬ সেন্ট পাবে প্লান্ট কর্তৃপক্ষ। বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরুর পর থেকে ২২ বছর সরকার এ কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ কিনবে। বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি (পিপিএ) চূড়ান্ত হওয়ার পর ৩৬ মাসের মধ্যে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির উৎপাদনে আসার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণে ব্যাংকের পাশাপাশি বিদেশী প্রতিষ্ঠান ও নিজস্ব উৎস থেকে অর্থায়ন করছে ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টস। এর মধ্যে এ বছরের এপ্রিলে কাতার সরকারের দুই প্রতিষ্ঠান কাতার ইলেকট্রিসিটি অ্যান্ড ওয়াটার কোম্পানি ও কাতার ইনভেস্টমেন্ট অথরিটির যৌথ উদ্যোগ নিবরাস পাওয়ারের কাছে বিদ্যুৎকেন্দ্রের শেয়ার বিক্রি করে সেই অর্থ প্রকল্পের কাজে ব্যয় করার সিদ্ধান্ত নেয় ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টসের পর্ষদ।

চুক্তি অনুসারে নিবরাস পাওয়ার ইনভেস্টমেন্ট ম্যানেজমেন্ট বিভির কাছে ইউনিক মেঘনাঘাট পাওয়ারের ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের ১৪ হাজার ৬৪১টি শেয়ার প্রিমিয়ামসহ ২ কোটি ৪০ লাখ ৬৮ হাজার ৮০০ ডলারে বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। প্রতি ডলার ৮৬ টাকা ধরে বাংলাদেশী মুদ্রায় এর পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ২০৬ কোটি টাকা। নিবরাস পাওয়ার বিদ্যুৎকেন্দ্রটির মোট ২৪ শতাংশ শেয়ার কিনবে, যার মধ্যে ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করবে ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টস আর বাকি ১২ দশমিক ২৪ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করবে স্ট্র্যাটেজিক ফাইন্যান্স।

নিবরাসের কাছে শেয়ার বিক্রির পর ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টসের কাছে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির ৫০ দশমিক ৯১ শতাংশ, জিই ক্যাপিটাল গ্লোবাল এনার্জি ইনভেস্টমেন্ট বিভির কাছে ২০ দশমিক ১ শতাংশ, নিবরাসের কাছে ২৪ শতাংশ ও স্ট্র্যাটেজিক ফাইন্যান্সের কাছে ৪ দশমিক ৯৯ শতাংশ শেয়ার থাকবে। ইউনিক মেঘনাঘাট পাওয়ারের সঙ্গে করা জিই ক্যাপিটালের চুক্তি অনুসারে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হওয়ার পর ক্রমান্বয়ে জিই ক্যাপিটাল তাদের কাছে থাকা শেয়ার স্ট্র্যাটেজিক ফাইন্যান্সের কাছে বিক্রি করে দেবে।

সম্প্রতি সাবসিডিয়ারি কোম্পানি ইউনিক মেঘনাঘাট পাওয়ারের কাছে জমি বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টসের পর্ষদ। নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁর মেঘনাঘাটে ১ হাজার ৩১ দশমিক ৬১ ডেসিমেল জমি ৯৪ কোটি ৪৮ লাখ ৩৮ হাজার ১৫০ টাকায় বিক্রি ও হস্তান্তর করবে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটি। এক্ষেত্রে প্রতি ডেসিমেল জমির দাম পড়বে ৯ লাখ ১৫ হাজার টাকা। এই জমির বিপরীতে ইউনিক মেঘনাঘাট পাওয়ার ৯ কোটি ৪৪ লাখ ৮৩ হাজার ৮১৫টি পুরোপুরি রূপান্তরযোগ্য এবং অবসায়ন অযোগ্য প্রেফারেন্স শেয়ার ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টসের অনুকূলে ইস্যু করবে। বিদ্যুৎকেন্দ্রটি যখন উৎপাদনে যাবে তখন এই শেয়ার সাধারণ শেয়ারে রূপান্তরিত হয়ে যাবে। উন্নয়ন ব্যয়সহ জমিটির অধিগ্রহণ মূল্য ছিল ৪৭ কোটি ৩৩ লাখ ৬৭ হাজার ৬৯১ টাকা।

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:

ভালো লাগলে শেয়ার করবেন...

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ