করোনার মধ্যেও লেনদেনে ও শেয়ার দর বৃদ্ধিতে চমক দেখাচ্ছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আর্থিক খাতের দুই কোম্পানি। কোম্পানি দুটি হলো- ইসলামিক ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড এবং ন্যাশনাল হাউজিং ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড।
আজ ৮ জুন এই দুই কোম্পানির শেয়ার দর সার্কিট ব্রেকারের সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করেছে। পাশাপাশি কোম্পানি ২টির শেয়ার বিক্রেতা সঙ্কটে পড়ে হল্টেড হয়েছে। আজ দুই কোম্পানির শেয়ার গত ২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ দরে লেনদেন হয়েছে। শুধু দরের ক্ষেত্রেই কোম্পানিটি ঝলক দেখাচ্ছে না, কোম্পানি ২টির আয়েও এর প্রতিফলন ঘটেছে। করোনার মধ্যেও কোম্পানিগুলোর আয় বেড়েছে। এছাড়া কোম্পানিটির ঘোষিত ডিভিডেন্ডও রয়েছে ইতিবাচক। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা যায়, আজ ইসলামিক ফাইন্যান্সের দর ২ টাকা ১০ পয়সা বা ১০ শতাংশ দর বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৩ টাকা ১০ পয়সায়, যা আজকের সর্বোচ্চ দর। আগের দিন কোম্পানিটির শেয়ার দর ছিল ২১ টাকা। আজ এ কোম্পানির দর দুই বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
গত ১২ কার্যদিবসের ব্যবধানে কোম্পানিটির দর বেড়েছে ৫ টাকা। ১২ কার্যদিবসের মধ্যে কোম্পানিটির দর কমেছে ৪ দিন। বাকি ৮ দিনই দর বেড়েছে। গত এক মাসের মধ্যে কোম্পানিটির সর্বনিম্ন দর ছিল ১৭ টাকা ৬০ পয়সা।
আজ কোম্পানিটির ২৪ লাখ ২ হাজার ৬৮০টি শেয়ার এক হাজার ৪২৭ বার হাতবদল হয়, যার বাজারমূল্য ১৬ কোটি ৬১ লাখ ৭৪ হাজার টাকা।
চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৪১ পয়সা। যা আগের বছরের একই সময়ে হয়েছিল ৩৮ পয়সা।
চলতি হিসাব বছরের ৩১ মার্চ ২০২১ শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ১৫ টাকা ৪১ পয়সা।
২০০৫ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া কোম্পানিটির অনুমোদিত ও পরিশোধিত মূলধন যথাক্রমে- ২৫০ কোটি টাকা এবং ১৪০ কোটি ৩২ লাখ ৭০ হাজার টাকা। বর্তমানে কোম্পানিটির রিজার্ভের পরিমাণ ৬২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। কোম্পানিটির ১৪ কোটি ৩ লাখ ২৬ হাজার ৬৭২টি শেয়ারের মধ্যে ৩২.৫০ শতাংশ উদ্যোক্তা পরিচালক, ৪০.৯৯ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী এবং ২৬.৫১ শতাংশ শেয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে।
কোম্পানিটি সর্বশেষ হিসাববছরের (২০২০) জন্য ১০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। সর্বশেষ বছরে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (কনসোলিডেটেড ইপিএস) হয়েছে ১ টাকা ৫৪ পয়সা। আগের বছর ইপিএস হয়েছিল ১ টাকা ৩৯ পয়সা।
গত ৩১ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখে সমন্বিতভাবে ব্যাংকটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য ছিল ১৪ টাকা ৯৯ পয়সা।
আগামী ২৪ জুন, সকাল ১১টায় ডিজিটাল প্ল্যাটফরমে কোম্পানিটির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে। এর জন্য রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ মে।
এর আগে গত ৫ বছরের মধ্যে কোম্পানিটি ২০১৫ সালে ১৩ শতাংশ ক্যাশ, ২০১৬ সালে ৩ শতাংশ ক্যাশ ও ১১ শতাংশ স্টক, ২০১৭ সালে ১৪.৫০ শতাংশ ক্যাশ, ২০১৮ সালে ১০ শতাংশ ক্যাশ ৪.৫০ শতাংশ স্টক এবং ২০১৯ সালে ১০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে।
ন্যাশনাল হাউজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স: আজ ন্যাশনাল হাউজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সের দর ৪ টাকা ৪০ পয়সা বা ১০.০০ শতাংশ দর বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৮ টাকা ৪০ পয়সায়, যা আজকের সর্বোচ্চ দর। আগের দিন এ কোম্পানির শেয়ার দর ছিল ৪৪ টাকা। আজ এ কোম্পানির দর দুই বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
গত এক মাসের ব্যবধানে কোম্পানিটির দর বেড়েছে ১২ টাকা ৭০ পয়সা। গত ২ কার্যদিবসে কোম্পানিটির দর বেড়েছে ৮ টাকা ৪০ পয়সা। গত এক মাসের মধ্যে কোম্পানিটির সর্বনিম্ন দর ছিল ৩৫ টাকা ৭০ পয়সা।
আজ কোম্পানিটির ৬৪ লাখ ৬৯ হাজার ৯৫৫টি শেয়ার ২ হাজার ১৩বার হাতবদল হয়, যার বাজারমূল্য ৩০ কোটি ৭৩ লাখ ২২ হাজার টাকা।
প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ’২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ৭২ পয়সা, যা গত বছর একই সময়ে ছিল ৪৮ পয়সা। ৩১ মার্চ, ২০২১ তারিখে সমন্বিতভাবে ব্যাংকটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য ছিল ১৮ টাকা ৬৪ পয়সা।
২০০৯ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া কোম্পানিটির অনুমোদিত ও পরিশোধিত মূলধন যথাক্রমে- ২০০ কোটি টাকা এবং ১১৭ কোটি ৩ লাখ ১০ হাজার টাকা। বর্তমানে কোম্পানিটির রিজার্ভের পরিমাণ ৯২ কোটি ৬২ লাখ টাকা। কোম্পানিটির ১১ কোটি ৭০ লাখ ৩১ হাজার ২০০টি শেয়ারের মধ্যে ৬০.৭৯ শতাংশ উদ্যোক্তা পরিচালক, ৯.৩৪ শতাংশ সরকার, ৯.৮৭ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী এবং ২০ শতাংশ শেয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে।
কোম্পানিটির ৩১ ডিসেম্বর, ২০২০ সমাপ্ত হিসাববছরের জন্য ১৫ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। সমাপ্ত হিসাববছরে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ২ টাকা ৭৫ পয়সা। আগের বছরের ইপিএস ছিল ২ টাকা ০২ পয়সা। কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি সম্পদমূল্য (এনএভি) হয়েছে ১৭ টাকা ৯১ পয়সা। আগের বছর ছিল ১৬ টাকা ১৭ পয়সা।
আলোচ্য সময়ে শেয়ার প্রতি ক্যাশ ফ্লো ৫ টাকা ৬ পয়সা। আগের বছর ছিল নেগেটিভ ৩০ টাকা ৪ পয়সা।
এর আগে ২০১৬ সালে ১৮ শতাংশ ক্যাশ, ২০১৭ সালে ১৯ শতাংশ ক্যাশ, ২০১৮ সালে ১০ শতাংশ ক্যাশ ও ১০ শতাংশ স্টক এবং ২০১৯ সালে ১০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে।