করোনা মহামারিতে গত বছর শেয়ারবাজার বন্ধ হওয়ার আগে বিনিয়োগকারীরা কম দামে শেয়ার বিক্রি করতে হূমড়ি খেয়ে পড়লেও এবার সেই ভুল করেননি। আগেরবারের ভুলের কারনে অনেক লোকসান গুণতে হয়েছিল তাদেরকে। তবে সেই শঙ্কা আবারও তৈরী হয়েছিল একই ইস্যুতে বুধবার (১৪ এপ্রিল) থেকে শেয়ারবাজার বন্ধ হতে যাওয়ায়।
গত বছর করোনায় ২৬ মার্চ শেয়ারবাজার বন্ধ হওয়ার আগে শেয়ার বিক্রিতে হূমড়ি খেয়ে পড়েছিল বিনিয়োগকারীরা। যা মৌলভিত্তিসম্পন্ন কোম্পানির শেয়ারকেও পানির দরে নিয়ে যায়। কিন্তু ওই পানির দরে যারা বিনিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তারাই শেয়ারবাজার খোলার পরে মুনাফা করতে পেরেছিলেন। এক্ষেত্রে আফসোস করতে হয়েছে বন্ধের আগে বিক্রি করা বিনিয়োগকারীদেরকে।
তবে এবার সেই ভুল পথে পা বাড়াননি সাধারন বিনিয়োগকারীরা। যে কারনে আগামিকাল বন্ধ হওয়ার আগে আজ (১৩ এপ্রিল) বড় উত্থান হয়েছে শেয়ারবাজারে।
গতকাল রাতে (১২ এপ্রিল) লকডাউনের সঙ্গে সমন্বয় করে সব ব্যাংক বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। যাতে করে লেনদেন সেটেলমেন্ট (নিস্পত্তি) করা অসম্ভব হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই বন্ধ থাকবে শেয়ারবাজারও। এতে করে বন্ধ হওয়ার আগের দিন আতঙ্কিত হয়ে বিনিয়োগকারীদের বিক্রির চাপঁ বাড়ানোর শঙ্কা তৈরী হয়েছিল। কিন্তু গতবারের বাস্তব অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়েছে তারা।
যাতে করে আজ শেয়ারবাজারে বড় উত্থান হয়েছে। এদিন দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মূল্যসূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৭০ পয়েন্ট। এছাড়া আগেরদিনের ৪৯৪ কোটি টাকার লেনদেন বেড়ে হয়েছে ৫১২ কোটি টাকা।
অন্যান্যদের মতো সাধারন বিনিয়োগকারীরাও বুঝতে পেরেছে আজ বিক্রি করে লোকসান ছাড়া কিছুই সম্ভব না। কারন লকডাউনের পরে শেয়ারবাজার যখন খুলবে, তখন বাজার ইতিবাচক হওয়াটা স্বাভাবিক। এছাড়া আজ বিক্রি করলেও লেনদেন নিস্পত্তির অভাবে টাকা পাওয়া যাবে না। যাতে করে নগদ উত্তোলন বা মার্জিণ ঋণ পরিশোধ করাও সম্ভব ছিল না।
বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এই সচেতনতা তৈরীতে বড় ভূমিকা রাখেন নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্বাহি পরিচালক ও মূখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম। তার উদ্যোগে বিনিয়োগকারীদের সচেতন করতে গতকাল শেয়ারবার্তায় ‘বিনিয়োগকারীরা কি আবারও ভুল করবেন?’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এরপরে একই বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন শিরোনামে আরও কয়েকটি গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।