বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের কাঁচামাল নিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রানাঘাটে এক সপ্তাহ ধরে আটকে আছে একটি পার্সেল ট্রেন। বেনাপোল বন্দর ও রেল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় ট্রেনটি বাংলাদেশে ঢুকতে পারছে না। এতে এসব পণ্যের আমদানিকারকরা সমস্যায় পড়েছেন। প্রয়োজনীয় কাঁচামাল সময় মতো না আসায় উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে উৎপাদিত পণ্য বিদেশে রপ্তানিতে লিড টাইম ধরে রাখা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
এক সপ্তাহ আগে ভারতের আহমেদাবাদ থেকে ট্রেনটি ডেনিম কাপড় ও রাসায়নিক নিয়ে রানাঘাটে পৌঁছায়। মালবাহী এ ট্রেনের ১৩টি বগিতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক আর ১৭টি বগিতে ডেনিম কাপড়। পশ্চিমবঙ্গের রানাঘাটের রেলের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, একটা পার্সেল ভ্যান এক সপ্তাহ ধরে রানাঘাটে দাঁড়িয়ে আছে। কাস্টমসের ক্লিয়ারেন্সসহ অন্যান্য প্রক্রিয়া শেষ করেছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু বাংলাদেশের বেনাপোলের তরফ থেকে এখনও রেলের অ্যাকসেপ্টেন্সের কনফারমেশন আসেনি। সেজন্য ট্রেনটি যেতে পারছে না।
কাঁচামাল আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে, রপ্তানি পণ্যের কাঁচামাল এভাবে আটকে থাকলে উৎপাদন ও সরবরাহ ঠিক রাখা সম্ভব হয় না। প্রতিষ্ঠানগুলো অতি দ্রুত আটকে থাকা পণ্য দেশে আনার দাবি জানিয়েছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা যাতে আর না ঘটে, তার জন্য সংশ্নিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সজাগ থাকার অনুরোধ জানিয়েছে।
জানা গেছে, ট্রেনের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মহিউদ্দিন আহমেদ অ্যান্ড সন্স এবং বন্দর কর্তৃপক্ষের অবহেলা বা সিদ্ধান্তহীনতার কারণে ট্রেনটি পণ্য নিয়ে সময়মতো দেশে প্রবেশ করতে পারছে না। রানাঘাটে আসার পর বেনাপোল রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ তা আনার জন্য ঠিকাদারকে জানালে, ঠিকাদার ও বন্দর কর্তৃপক্ষ যৌক্তিক কারণ ছাড়াই দু’দিন পরে আনার পরামর্শ দেন। কিন্তু এরপর আমদানি করা চালের একাধিক গাড়ি পরপর চলে আসায় সে সুযোগ আর হয়নি। ফলে ট্রেনটি এক সপ্তাহ ধরে আটকে আছে।
বেনাপোল রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার সাইদুর রহমান ঘটনার সতত্য স্বীকার করে বলেন, ওই ট্রেন যেদিন রানাঘাটে এসেছে, সেদিন পণ্য নিয়ে আসার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ঠিকাদার মালামাল প্রথমে রানাঘাটে আনলোড করে গোডাউনে শিফট করে। বন্দরের সংশ্নিষ্ট বিভাগ পরে আনার জন্য পরামর্শ দেয়। কিন্তু চালের ট্রেন আসার কারণে ওই ট্রেন আনার জন্য ইঞ্জিন ও বগির ব্যবস্থা করা যায়নি। এখন চেষ্টা করা হচ্ছে দু-এক দিনের মধ্যে নিয়ে আসার।
বেনাপোল স্থলবন্দরের উপসচিব মামুন কবির তরফদার বলেন, গত বৃহস্পতিবার ট্রেনটি আনার সুযোগ ছিল। কিন্তু পরের দিন শুক্রবার বন্ধের দিন হওয়ায় হ্যান্ডেলিং করা যাবে না, তাই এক দিন পরে আনার পরামর্শ দেওয়া হয়। পরে ঠিকাদার কেন আনেনি তা তিনি জানেন না।