পাকিস্তানের করাল থাবা থেকে স্বাধীন হয়েছে বাংলাদেশ। সেই পাকিস্তান বিস্মিত নয়নে দেখছে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা। অর্থনীতি ও মানব উন্নয়নের নানা সূচকে পাকিস্তানের চেয়ে যোজন যোজন এগিয়ে স্বাধীনতার ৫০ বছর পার করা দেশটি।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট হেনরি কিসিঞ্জারের ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ এখন শক্তিশালী এক সিন্দুক- দক্ষিণ এশিয়ার ইমার্জিং টাইগার। কয়েকটি সূচকে তো বিশ্বের অনেক দেশকেও ছাড়িয়ে গেছে। সর্বশেষ এক দশকে সব সূচকে অভূতপূর্ব উন্নয়ন ঘটেছে বাংলাদেশের।
তবে উন্নয়নের এ দীর্ঘ পথ মসৃণ ছিল না। হোঁচট খেতে হয়েছে অনেকবার। রাজনৈতিক উত্থান-পতনটাই ছিল বড় অন্তরায়। মোকাবিলা করতে হয়েছে ঘূর্ণিঝড়-জলোচ্ছ্বাসের মতো বড় বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগও।
দারিদ্র্য জয় করে দীর্ঘ ৫০ বছরে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের বুকে উন্নয়নের রোল মডেল। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে প্রবেশের আগমুহূর্তে দেশটি উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে জাতিসংঘ সনদ পেয়েছে। রফতানি, রিজার্ভ, জিডিপি থেকে শুরু করে দেশের বাজেটের আকার, সরকারি-বেসরকারি বিনিয়োগ, রাজস্ব আয়, রেমিট্যান্স, দারিদ্র্য নিরসন, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, অবকাঠামো তৈরি ও উন্নয়ন, বিদ্যুত, মানবসম্পদ উন্নয়ন, ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে এসেছে প্রত্যাশিত সফলতা।
পদ্মাসেতুর মতো বৃহৎ প্রকল্প কোনও বৈদেশিক সহায়তা ছাড়াই বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের অগ্রগতি নিয়ে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক অমর্ত্য সেন বেশ আগেই বলেছেন, যারা এক সময় বাংলাদেশকে ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ বলেছিল তারা আজ এ দেশকে ‘উন্নয়নের মডেল’ মনে করছে।
দারিদ্র্য বিমোচন, নারীশিক্ষা, মাতৃ ও শিশুমৃত্যুর হার কমানো, তথ্যপ্রযুক্তির বিকাশ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলার মতো বিভিন্ন খাতে বাংলাদেশের অগ্রগতি নজর কেড়েছে বিশ্ব সম্প্রদায়ের। করোনা মহামারির কারণে এ বছর বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে যেখানে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধির পরিস্থিতিতে পড়েছে সেখানে বাংলাদেশে আগের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পেরেছে।
৫০ বছরে দেশের রাজনৈতিক উত্থান-পতনও কম চ্যালেঞ্জিং ছিল না। যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ গড়তে শুরু করেন স্বাধীনতার স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু। দেশ স্বাধীনের চার বছর না পেরোতেই তাঁকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। শুরু হয় সামরিক শাসন। পঁচাত্তর থেকে নব্বই পর্যন্ত এ ধারা চলতে থাকে। এ সময় জাতি কখনও সামরিক শাসনের মোড়কে পেয়েছে গণতন্ত্র। আবার কখনও গণতন্ত্রের মোড়কে সামরিক শাসন। দীর্ঘ সংগ্রামের পর ১৯৯১ সালে দেশে আবার গণতন্ত্রাতিক ধারা শুরু হয়। মাঝের দুই বছর ছাড়া এখন পর্যন্ত এ ধারা অব্যাহত আছে।
গণতান্ত্রিক ধারা পাশ কাটিয়ে সামরিক শাসন বা ভিন্ন কিছু যাতে আসার সুযোগ না পায় সে জন্য ইতোমধ্যে আইনি কাঠামোতেও আনা হয়েছে পরিবর্তন।
অবশ্য নানা সূচকে উন্নয়নের বিপরীতে দুর্নীতি দমন ও সুশাসনে বাংলাদেশের সুখবর নেই। বিশ্বের ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ১২তম দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ। আগের বছর ছিল ১৪তম। অবশ্য ২০০১ সাল থেকে টানা ৫ বছর বাংলাদেশ দুর্নীতিতে বিশ্বে শীর্ষেই ছিল। পরে ধীরে ধীরে কিছুটা উন্নতি হয়েছে। অবশ্য সেই ধারায় এবার দুই ধাপ অবনতিও হয়েছে।
আইনের শাসন সূচকে ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২০ সালে বাংলাদেশের অবনতি হয়। বিশ্বের ১২৮টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১১৫তম। দক্ষিণ এশিয়ার ছয়টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ চতুর্থ। বৈশ্বিক আইনের শাসন সূচকের ২০১৯ সালের প্রতিবেদনে বাংলাদেশ ১২৬টি দেশের মধ্যে ১১২তম অবস্থানে ছিল। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের চেয়ে নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও ভারত আইনের শাসনে এগিয়ে আছে। পেছনে রয়েছে পাকিস্তান ও আফগানিস্তান।
অবশ্য স্বাধীনতার চার দশকেরও বেশি সময় পর মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বাংলাদেশ। বিচার করেছে সপরিবারে জাতির পিতাকে হত্যাকাণ্ডের ঘটনারও। মানিলন্ডারিং বন্ধে কঠোর আইন করেছে।
তিন দশক ধরে দেশে টানা গণতন্ত্র থাকলেও এটি এখনও অস্থিতিশীল। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সবক্ষেত্রে নিরঙ্কুশ অবস্থান। সংসদে সরকারি ও বিরোধী দল একাট্টা হয়ে গেছে। সমঝোতা ও আসন ভাগাভাগি করে সর্বশেষ তিনটি নির্বাচনে অংশ নিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বর্তমান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি। যার কারণে সংসদে তারা কার্যকর ভূমিকা পালনে পুরোপুরি সক্ষম হচ্ছে না।
অপরদিকে সংসদের বাইরে থাকা দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি অনেকটা কোণঠাসা। রাজনীতির মাঠে তাদের দৃশ্যত কোনও অবস্থানই নেই। অবশ্য এজন্য তারা সরকারি দলকে দায়ী করে আসছে। বিপরীতে সরকারি দল দাবি করেছে, সাংগঠনিক দুর্বলতা এবং জনবিরোধী কর্মকাণ্ডের কারণেই বিএনপি জনবিচ্ছিন্ন। সংসদেও তাদের প্রতিনিধিত্ব দুর্বল।
৭৮৬ কোটি টাকার বাজেট নিয়ে যাত্রা শুরু করা বাংলাদেশের বাজেট আজ ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা। ছোট্ট অর্থনীতির দেশটি আজ পরিচিতি পেয়েছে এশিয়ার ‘টাইগার ইকনোমি’ হিসেবে। চলতি অর্থবছরে মাথাপিছু জিডিপিতে প্রতিবেশী ভারতকেও পেছনে ফেলেছে বাংলাদেশ। অর্থনীতির এ উত্থানকে ‘ছাই থেকে জন্ম নেওয়া ফিনিক্স’ বলে আখ্যায়িত করেছেন প্রখ্যাত সাংবাদিক মার্ক টালি।
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও সামাজিক উন্নয়নের যেকোনও সূচকের বিচারে গত দুই দশকে বাংলাদেশের অগ্রগতি হয়েছে অভূতপূর্ব। জনসংখ্যা, গড় আয়ু, শিশু মৃত্যুর হার, মেয়েদের স্কুলে পড়ার হার, সক্ষম দম্পতিদের জন্মনিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা গ্রহণের হার ইত্যাদি সামাজিক সূচকে বাংলাদেশ সমপর্যায়ের উন্নয়নশীল অন্যান্য দেশগুলোকে পেছনে ফেলতে সমর্থ হয়েছে।
আর্থসামাজিক উন্নয়নের নানা সূচকে অভাবনীয় সাফল্য পেয়েছে আজকের বাংলাদেশ। দারিদ্র্য বিমোচন, নারীর ক্ষমতায়ন, শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার হ্রাস, লিঙ্গবৈষম্য দূরীকরণ, শিক্ষার হার ও গড় আয়ু বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন সূচকে কেবল দক্ষিণ এশিয়াকেই নয়, অনেক উন্নত দেশকেও ছাড়িয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে।
আইএমএফের হিসাব অনুযায়ী, পিপিপির ভিত্তিতে বাংলাদেশের অর্থনীতির অবস্থান ৩০তম। প্রাইস ওয়াটার হাউজ কুপারসের প্রক্ষেপণ অনুযায়ী, ২০৪০ সাল নাগাদ বাংলাদেশের অর্থনীতি বিশ্বে ২৩তম স্থান দখল করবে। এইচবিএসসির প্রক্ষেপণ বলছে, ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের ২৬তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হবে।
ইতোমধ্যে বাংলাদেশ মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষপণ করে স্যাটেলাইট জগতে তার নাম লিখিয়েছে। প্রস্তুতি নিচ্ছে দ্বিতীয় স্যাটেলাইট পাঠানোর।
১৯৭১ সালে গড় আয়ু ছিল ৪৭ বছরের একটু বেশি। তা বেড়ে এখন ৭২ দশমিক ৬ বছরে দাঁড়িয়েছে। ৫০ বছরে বাংলাদেশের গড় আয়ু বেড়েছে ২৪ বছর। একই সময়ে বিশ্বে গড় আয়ু বেড়েছে ১২ বছর।
১৯৭১ সালে দেশে সাক্ষরতার হার ছিল ১৬ দশমিক ৮ শতাংশ। বছরে গড়ে এক শতাংশের বেশি হারে বেড়ে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে এই হার উন্নীত হয়েছে ৭৪ দশমিক সাত শতাংশে। স্বাধীনতার বছর দেশের ৮০ ভাগ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করত। সর্বশেষ হিসাবে ২০ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করছে।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশে মাথাপিছু আয়ের সঠিক তথ্য পাওয়া না গেলেও বিভিন্ন প্রকাশনায় ১৯৭২ সালে মাথাপিছু আয় ১০০ ডলারের নিচে বলে উল্লেখ করা হয়। ১৯৭৩ সালে বিশ্বব্যাংকের হিসাবে মাথাপিছু আয় ছিল ১২০ ডলার। বর্তমানে বাংলাদেশের গড় মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৬৪ ডলার।
বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭১ সালে দেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) ছিল ৮ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলার। বর্তমানে তা বেড়ে ৩০২ দশমিক ৬০ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।
অবশ্য মাথাপিছু জিডিপিতে উন্নতি করলেও সম্পদের বৈষম্য আগের তুলনায় বেড়েছে। দুর্নীতি এখনও ব্যবসার বড় প্রতিবন্ধকতা।
১৯৭২-৭৩ অর্থবছরে রফতানি আয় ছিল ৩৪ কোটি মার্কিন ডলার। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে তা বেড়ে রেকর্ড হয়েছিল ৪০.৫৩ বিলিয়ন ডলারের। অবশ্য ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৪৫ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও করোনা সংক্রমণের কারণে তা অর্জিত হয়নি। এ অর্থবছরে ৩৩ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন ডলার রফতানি আয় হয়েছে।
স্বাধীনতার পর বিদ্যুৎ উৎপাদনে বাংলাদেশের ৫০০ মেগাওয়াট ক্ষমতা ছিল। উৎপাদন হতো গড়ে ৩০০ মেগাওয়াটের মতো। এখন তা ২৪ হাজার ৪২১ মেগাওয়াট হয়েছে। বিদ্যুৎ সুবিধাভোগী জনসংখ্যা ৯৯ ভাগে উন্নীত হয়েছে।
স্বাধীনতার পর প্রায় এক দশক বাংলাদেশের বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভের কোনও তথ্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকে নেই। ১৯৮১-৮২ অর্থবছরের রিজার্ভের তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে সর্বপ্রথম পাওয়া যায়। তখন রিজার্ভ ছিল ১২ কোটি ১০ লাখ ডলার। সেই রিজার্ভ এখন দাঁড়িয়েছে (২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১) ৪৪ বিলিয়ন ডলারে। যা পাকিস্তানের দিগুণ!
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও ইতিহাসবিদ অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন জানান, বাংলাদেশের প্রধান অর্জন হচ্ছে টিকে থাকা। জন্মলগ্নে বাংলাদেশের অস্তিত্ব নিয়েই প্রশ্ন ছিল। বঙ্গবন্ধু সেই অস্তিত্বকে প্রশ্নাতীত করেছিলেন। তাঁর সময়ে বাংলাদেশ শূন্য থেকে যাত্রা শুরু করে আজকে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর প্রাক্কালে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উন্নীত হয়েছে। এই সামগ্রিক উন্নয়নে বঙ্গবন্ধু এবং তাঁর কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্ব-দুটোই কার্যকর ভূমিকা পালন করেছে।
বঙ্গবন্ধু দেশে ফিরেই স্বীকার করেছিলেন আমজনতার অবদানের কথা। বঙ্গবন্ধুকে লন্ডনে ৮ জানুয়ারি ১৯২ সালে সাংবাদিক প্রশ্ন করেছিলেন-আপনি দেশে ফিরে কী করবেন? সম্পূর্ণ দেশতো ধ্বংসস্তূপ। জবাবে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন- ‘আমার মাটি আর মানুষ থাকলে আবার উঠে দাঁড়াব।’ সেই বাংলাদেশ উঠে দাঁড়িয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘সরকার উন্নয়নের কথা বলে। আমি উন্নয়ন শব্দটি ব্যবহার করি না। আমি বলি প্রবৃদ্ধি। বাংলাদেশের প্রশাসন দারুণ দুর্নীতিগ্রস্ত। সমাজ দারুণভাবে সহিংস, উত্তাল ও অস্থির। এগুলো অতিক্রম করা গেলে বাংলাদেশ আরও এগিয়ে যেতে পারতো বলে আমি মনে করি।’
৫০ বছরে বাংলাদেশ ঈষর্ণীয় সাফল্য অর্জন করেছে বলে মনে করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক তারেক শামসুর রেহমান। তবে, অর্থনৈতিক দিক থেকে দেশের অর্জন ইতিবাচক হলেও রাজনৈতিক দিক থেকে বেশ ঘাটতি থাকার কথা বলেছেন।
তিনি বলেন, গত ৫০ বছরে সুনির্দিষ্ট করে বলা যায় রিজার্ভ অনেকে বেড়েছে। আমদানি-রফতানিতে অগ্রগতি হয়েছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে প্রবৃদ্ধি অর্জনে ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জিত হয়েছে। তবে ঋণখেলাপি ও মাথাপিছু বৈদেশিক ঋণ বেড়ে যাওয়ার মতো কিছু উদ্বেগজনক ঘটনাও রয়েছে।
তিনি বলেন, অনেকে বাংলাদেশের বড় ধরনের অর্থনৈতিকি বিপর্যয়ের আশঙ্কা করেছিল। কিন্তু দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। আন্তর্জাতিক অনেক পরিসংখ্যান বাংলাদেশের সাফল্যের কথাই বলে।
ভবিষ্যত বাংলাদেশের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, এখন সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। শুধু তৈরি পোশাকনির্ভর অর্থনীতির ওপর ভর না করে বহুমুখীকরণের দিকে তাকাতে হবে। টাস্কফোর্স গঠন করে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নেওয়া দরকার। এক্ষেত্রে আমরা সুনীল অর্থনীতির ওপর জোর দিতে পারি। আমরা বিশাল সমুদ্র জয় করেছি। কিন্তু সেই সমুদ্র কীভাবে উন্নয়নে ব্যবহার করবো তা নিয়ে কোনও কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়নি।
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ৫০ বছরের বাংলাদেশকে মূল্যায়ন করতে গিয়ে তিনি বলেন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আমাদের সাফল্যের শিখরে পৌঁছালেও মাঝে মাঝে এর লাগাম টেনে রাখছে রাজনীতি। গত ১০-১৫ বছরে রাজনৈতিক দল ও জোটগুলোর পরষ্পরবিরোধী অবস্থান আমাদের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রাকে ব্যাপক বাধাগ্রস্ত করেছে। এটার স্থায়ী নিষ্পত্তি দরকার। দেশের স্বার্থে, ১৭ কোটি জনগণের স্বার্থে কাজটি করা অত্যন্ত জরুরি।
তিনি আরও বলেন, একটা কথা মাথায় রাখতে হবে- বাংলাদেশ কোনও দলের নয়। বিশেষ কোনও গোষ্ঠীরও নয়। এদেশ ১৭ কোটি মানুষের। সব দলমত একত্রিত করে যৌথ কর্মসূচি হাতে নেওয়া দরকার।