পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রকৌশল খাতের কোম্পানি আজিজ পাইপস লিমিটেডের শেয়ার নিয়ে পুনরায় সক্রিয় হয়েছে কারসাজি চক্র। দীর্ঘ দুই মাস ধরে উৎপাদন বন্ধসহ সল্প মূলধনী, পুঞ্জিভূত লোকসানী ও অপেক্ষাকৃত দুর্বল কোম্পানি হওয়া সত্তেও মঙ্গলবার (১৬ মার্চ) দর বৃদ্ধির শীর্ষ স্থানে অবস্থান করছে আজিজ পাইপস।
তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, দেশের পুঁজিবাজার পরিস্থিতি কয়েক কার্যদিবস ধরে স্বাভাবিক না থকলেও ভালো অবস্থায় রয়েছে একটি চক্র। এ চক্রটি মূলত র্টাগেট করে সল্প মূলধনী দুর্বল মৌলভিত্তির কোম্পানিগুলোকে। তেমনি একটি কোম্পানি হচ্ছে আজিজ পাইপস। যেখানে ভালো মৌলভিত্তির কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর বাড়ছে না, সে খানে সল্প মূলধনী, লোকসানি আজিজ পাইপসের শেয়ার দর হঠাৎ বেড়ে দর বাড়ার শীর্ষে আবস্থান করছে। এই কোম্পানিটির মেয়ার দর বৃদ্ধির পিছনে কারসাজি চক্রের হাত রয়েছে বলে মনে করেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।
জানা যায়, আজ সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবস মঙ্গলবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) টপটেন গেইনার বা শেয়ার দর বৃদ্ধির শীর্ষে উঠে এসেছে আজিজ পাইপস। আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর বৃদ্ধি পেয়েছে ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ। কোম্পানিটি ২ হাজার ৮৫৫ বারে ৭ লাখ ৯৮ হাজার ৬২১ টি শেয়ার লেনদেন করেছে। যার বাজার মূল্য ৮ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। অতচ চলতি বছরের ১০ জানুয়ারি থেকে কোম্পানিটির উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। কবে কখন এই কোম্পানিটির উৎপাদন চালু হবে তা নিয়ে রয়েছে সংশয়। এছাড়া, ১৯৮৬ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া আজিজ পাইপস সর্বশেষ ২০২০ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত অর্থবছরে বিনিয়োগকারীদের ১ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিলেও চলমান হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে (২০২০ সালের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর) লোকসানের খাতায় নাম লিখিয়েছে। এই প্রান্তিকে কোম্পানিটি শেয়ারপ্রতি লোকসান করেছে ৭ পয়সা। লোকসানের পাশাপাশি কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি সম্পদ মূল্যেও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর শেষে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি সম্পদ মূল্য দাঁড়িয়েছে ঋণাত্মক ১৪ টাকা ২৮ পয়সা, যা ২০২০ সালের জুন শেষে ছিল ১৪ টাকা ২২ পয়সা।
আরো জানা যায়, মাত্র ৫ কোটি টাকার পরিশোধিত মূলধনের কোম্পানি আজিজ পাইপস ইতিমধ্যে ২৩ কোটি ৬২ লাখ টাকা পুঞ্জিভূত লোকসানে জড়িয়ে পড়েছে। এই কোম্পানিটি পুঞ্জিভূত লোকসানসহ অন্যসব লোকসান কাটিয়ে লাভের মুখ দেখটে কত যুগ লাগবে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে বাজার সংশ্লিষ্টরা।
বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, বর্তমানে ভালো খারাপ উভয় অবস্থা বিরাজ করছে পুঁজিবাজারে। পুঁজিবাজারে সূচক একদিন বাড়লে আরেক দিন কমে। এ অবস্থায় ভালো মৌলভিত্তির কোম্পানির শেয়ার দর বাড়াটা স্বাভাবিক। কিন্তু সল্প মূলধনী, লোকসানি কোম্পানিটির শেয়ার দর বাড়াটা স্বাভাবিক নয়। এর পিছনে নিশ্চয় কারসাজি চক্রের হাত রয়েছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থার উচিৎ এ কোম্পানিটির শেয়ার দর কেন বাড়ছে তা সঠিক তদন্ত করা। সঠিক তদন্ত করলে আসল তথ্য বের হয়ে আসবে। নয়তো ক্ষতিগ্রস্ত হবে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।