দেশের উভয় পুঁজিবাজারে সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার উৎপাদন ও সেবামুখী খাতের বেশিরভাগ শেয়ারের দর বেড়েছে। তবে আর্থিক ও বীমা খাতের অধিকাংশ শেয়ারের দর কমার প্রভাবে সূচক কমেছে। রোববার দিনের বড় অংশজুড়ে সার্বিক নিম্নমুখী ধারার মধ্যেও ১৯ কোম্পানির শেয়ার সার্কিট ব্রেকারের সর্বোচ্চ দরে কেনাবেচা হয়েছে। এগুলোর বেশিরভাগই রুগ্ণ কোম্পানির শেয়ার।
রোববার বাজারে সূচক কমার আরেকটি কারণ ছিল মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোনের বড় ধরনের দরপতন। আপিল বিভাগ রোববার তিন মাসের মধ্যে বিটিআরসিকে দুই হাজার কোটি টাকা পরিশোধে গ্রামীণফোনকে নির্দেশ দিয়েছেন। এ খবরে শেয়ারদরে ব্যাপক পতন হয়েছে। বৃহস্পতিবারের তুলনায় শেয়ারপ্রতি ১৮ টাকা ৪০ পয়সা কমে ৩১১ টাকা ১০ পয়সায় কেনাবেচা হয়েছে।
বাজারসংশ্নিষ্টরা জানান, গ্রামীণফোনের শেয়ারদর কমা সূচকে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। লেনদেনের প্রথম আধা ঘণ্টা শেষে ডিএসইএক্স আগের দিনের থেকে ১৫ পয়েন্ট বেড়ে ৪৭২২ পয়েন্ট ছাড়ায়। কিন্তু গ্রামীণফোনের বিষয়ে উচ্চ আদালতের আদেশের পর থেকে ক্রমে বিভিন্ন কোম্পানি দর হারাতে থাকে, যা লেনদেনের শেষ পর্যন্ত অব্যাহত ছিল।
রোববার প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসইতে ১৩৮ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের দর বেড়েছে, কমেছে ১৬৭টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ৩৩টির দর। এর মধ্যে ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বীমার ৯৯ শেয়ারের মধ্যে ৭৪টির দর কমেছে, বেড়েছে মাত্র ১৫টির দর। অন্যদিকে উৎপাদন ও সেবামুখী ১৫ খাতের ১০৮ শেয়ারের দর বেড়েছে, কমেছে ৮২টির। প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৮ পয়েন্ট হারিয়ে ৪৬৮৮ পয়েন্টে নেমেছে। দ্বিতীয় শেয়ারবাজার সিএসইতে ১১১টির দর বেড়েছে, কমেছে ১০২টির এবং অপরিবর্তিত থেকেছে ৩৫টির দর। তবে এ বাজারের প্রধান সূচক সিএসসিএক্স প্রায় ১৪ পয়েন্ট হারিয়ে ৮৬৬২ পয়েন্টে নেমেছে। দুই বাজারে কেনাবেচা হওয়া সব শেয়ার ও ফান্ডের বাজারমূল্য ছিল ৩৯০ কোটি ৮৯ লাখ টাকা, যা গত বৃহস্পতিবারের তুলনায় ৪৫ কোটি ৪২ লাখ টাকা কম।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, এজিএম-সংক্রান্ত রেকর্ড ডেটের কারণে বন্ধ থাকার পর রোববার ২৯ কোম্পানির শেয়ার লেনদেন পুনরায় শুরু হয়েছে। এর মধ্যে মেঘনা পেটের শেয়ারদর সাড়ে ৭ শতাংশ, মেঘনা কনডেন্সড মিল্ক্কের ১ শতাংশ, তসরিফা ইন্ডাস্ট্রিজের সোয়া ৯ শতাংশ, সায়হাম টেক্সটাইলের প্রায় ১০ শতাংশ, নিউ লাইন ক্লোথিংসের প্রায় ৩ শতাংশ, কপারটেকের সাড়ে ৪ শতাংশ, আরডি ফুডের প্রায় ১ শতাংশ, সিভিও পেট্রোকেমিক্যালের ৬ শতাংশ, ড্যাফোডিলের দেড় শতাংশ, বেঙ্গল উইন্ডসরের প্রায় ৫ শতাংশ বাজারদর বেড়েছে। তবে ঝিলবাংলা সুগারের সোয়া ৭ শতাংশ, শ্যামপুর সুগারের ৭ শতাংশ, রেনউয়িক যজ্ঞেশ্বরের ২ শতাংশ, এসএস স্টিলের সোয়া ২ শতাংশ, সিমটেক্সের পৌনে ৩ শতাংশ, শাশা ডেনিমের প্রায় ৩ শতাংশ, ইন্দোবাংলা ফার্মার ৩ শতাংশ, আরামিট লিমিটেডের পৌনে ২ শতাংশ, অগ্নি সিস্টেমসের ২ শতাংশ, মেট্রো স্পিনিংয়ের প্রায় পৌনে ২ শতাংশ, ফু-ওয়াং সিরামিকের পৌনে ৩ শতাংশ, অ্যাডভেন্ট ফার্মার প্রায় ৫ শতাংশ, দেশবন্ধু পলিমারের পৌনে ২ শতাংশ হারে শেয়ারদর কমেছে।
শেয়ারবার্তা / হামিদ