পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আর্থিক খাতের কোম্পানি প্রিমিয়ার লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স লিমিটেডের (পিএলএফএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) পদ থেকে আব্দুল হামিদ মিয়া পদত্যাগ করতে চান। কিন্তু কোনোভাবেই অব্যাহতি না দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ বিষয়ে গত রোববার বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে প্রিমিয়ার লিজিংয়ের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যানের কাছে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, প্রিমিয়ার লিজিংয়ের এমডি পদ থেকে আব্দুল হামিদ মিয়ার পদত্যাগের সিদ্ধান্ত কার্যকর না করার জন্য পর্ষদকে পরামর্শ দেওয়া হলো। একই সঙ্গে ভবিষ্যতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিযুক্ত প্রশাসকের আগাম অনুমোদন ছাড়া এমডির পদ থেকে যাতে আব্দুল হামিদ মিয়াকে অব্যাহতি সংক্রান্ত কোনো মেমো পর্ষদের সভায় উপস্থাপন করা না হয় সে বিষয়েও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রিমিয়ার লিজিংয়ের চেয়ারম্যান এ এস এম ফিরোজ আলম সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, আব্দুল হামিদ মিয়া ন্যাশনাল ব্যাংকে যোগদানের জন্য অব্যাহতি চেয়েছে, আমাদের পর্ষদকে এমনটিই তিনি জানিয়েছেন। এছাড়া তেমন কিছু জানা নেই আমার।
জানা যায়, প্রিমিয়ার লিজিংয়ের এমডি আব্দুল হামিদ মিয়া সম্প্রতি পর্ষদের কাছে পদত্যাগপত্র পেশ করেছেন। এদিকে আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে না পারায় উচ্চ আদালতের নির্দেশে বাংলাদেশ ব্যাংক গত বছরের ডিসেম্বরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক একেএম মহিউদ্দিন আজাদকে প্রশাসক হিসাবে নিয়োগ দিয়েছে। তিনি এখন প্রশাসক হিসাবে কাজ করে যাচ্ছেন। প্রশাসকের সঙ্গে পরামর্শ করেই বর্তমান ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে কাজ করতে হচ্ছে।
এর আগে একজন আমানতকারীকে তার সঞ্চিত অর্থ ফেরত দিতে টালবাহানা করায় তিনি প্রিমিয়ার লিজিংয়ের বিরুদ্ধে আদালতে রিট করেন। আদালত শুনানি শেষে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে প্রশাসক নিয়োগের নির্দেশ দেয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রশাসক নিয়োগ করেছে।
প্রশাসক এখন প্রতিষ্ঠানটির সার্বিক কর্মকাণ্ড, ঋণ বিতরণে কী ধরনের অনিয়ম হয়েছে, ঋণ আদায় পরিস্থিতিসহ নানা বিষয় খতিয়ে দেখছেন। এছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকেও তদারকি জোরদার করা হয়েছে। আব্দুল হামিদ মিয়া ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে প্রতিষ্ঠানের এমডি পদে দায়িত্ব পালন করছেন। গত কয়েক বছরে প্রতিষ্ঠানটির আর্থিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। এর আর্থিক অবস্থার অবনতির কারণ অনুসন্ধান করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ কারণে এমডি পদ থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাকে অব্যাহতি দিতে রাজি নয়। কেননা তিনি যেহেতু দীর্ঘ সময় প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী হিসাবে রয়েছেন সে কারণে সবকিছুই তার জানা। ফলে এমডি পদ থেকে তার পদত্যাগ বা পর্ষদ থেকে তাকে অব্যাহতি এমন যে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে পর্ষদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।