জনগণের মধ্যে ব্যবহারের প্রবণতা কমে আসায় সু কাভার, ফেস মাস্ক, ফেইস শিল্ড, সার্জিক্যাল মাস্ক, মপ ক্যাপ, মেডিক্যাল অ্যাপ্রোন, মেডিক্যাল হ্যান্ড গ্লাভস, গগলস, পার্সোনাল প্রটেকটিভ ক্লথ, ইয়ার প্লাগ, মেডিকেল এপ্রোন, হ্যান্ডওয়াশ, হ্যান্ড রাব, হ্যান্ড স্যানিটাইজারের মতো সুরক্ষা সামগ্রীর বিক্রি কমেছে।
জনগণের মধ্যে ব্যবহারের প্রবণতা কমে আসায় সু কাভার, ফেস মাস্ক, ফেইস শিল্ড, সার্জিক্যাল মাস্ক, মপ ক্যাপ, মেডিক্যাল অ্যাপ্রোন, মেডিক্যাল হ্যান্ড গ্লাভস, গগলস, পার্সোনাল প্রটেকটিভ ক্লথ, ইয়ার প্লাগ, মেডিকেল এপ্রোন, হ্যান্ডওয়াশ, হ্যান্ড রাব, হ্যান্ড স্যানিটাইজারের মতো সুরক্ষা সামগ্রীর বিক্রি কমেছে।
স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস বলছে, ২০২০ সালের মার্চ-এপ্রিল-মে মাসে হাই সেল পেয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। তখন প্রতিষ্ঠানটির জীবাণুনাশক পণ্যের বিক্রি ২০১৯ সালের তুলনায় কয়েকগুণ বেড়েছিল।
স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের হিসাব ও অর্থ বিভাগের প্রধান মো. কবীর রেজা সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, কোভিডের পিক টাইমে যে সেলটা ছিল, সেটা যদি দশ শতাংশ ধরে হিসেব করি; এখন তা ৩-৪ শতাংশে নেমে এসেছে। কারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতাবোধের জায়গাটা আগের তুলনায় অনেক কমে গিয়েছে।
বাজার বিশ্লেষণ ও সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোর বিক্রয় তথ্য পর্যালোচনা বলছে, করোনাকালীন সময়ে প্রতিমাসে বাজারে মাস্কের চাহিদা ছিল ৫-৬ কোটি। প্রথম দিকে দেশীয় উৎপাদন সক্ষমতা ছিল মাত্র ৬০ লাখ বাকীটা আমদানি করতে হতো। এই সুযোগে দেশের বাজারে গড়ে ওঠে অসংখ্য প্রতিষ্ঠান।
পর্যাপ্ত কারিগরি জ্ঞান না থাকার পরেও তখন অনেক প্রতিষ্ঠান সুরক্ষা পণ্য উৎপাদন শুরু করে। কিছু প্রতিষ্ঠান ব্যবসা পরিবর্তন করে সুরক্ষা পণ্যের বাজার দখলে প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হয়। এসব পণ্য উৎপাদনে কাঁচামাল সংগ্রহ হয়ে থাকে চায়না ও ইন্ডিয়া থেকে।
এদিকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার ওষুধের দোকান ও ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে দেখা গিয়েছে, সুরক্ষা সামগ্রীর বিক্রি কম। মাস্ক ও জীবানুনাশকের বিক্রি কিছুটা থাকলেও গ্লাভস, সু কাভার, সুরক্ষা পোশাক বিক্রি হচ্ছে খুবই কম।
মহামারীর শুরুর দিকে অস্বাভাবিক ক্রয়প্রবণতা ও জনমনে আতঙ্কের কারণে দেশে স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রীর সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিয়েছিল। লাগামহীন হয়ে উঠেছিল এসব পণ্যের মূল্য। সেই অবস্থা এখন আর নেই। সুরক্ষা পণ্যের যতেষ্ট সরবারহ আছে বাজারে। কাটতি কম। সেজন্য দামও কমেছে।
সুরক্ষা পণ্যের মধ্যে এখনো যে সব পণ্যের কাটতি আছে তার মধ্যে মাস্কই প্রথম। সুপার শপ থেকে বাসের হকার কিংবা চায়ের দোকানেও মিলে মাস্ক। ফুটপাতে এখন ৫টা সার্জিক্যাল মাস্কের প্যাকেজ বিক্রি হয় ১০ টাকা মূল্যে। তবে সার্জিক্যাল মাস্ক থেকে ব্রান্ডের মাস্কের বাজার বাড়ছে। ফ্যাশনের অনুসঙ্গ হিসেবেও ব্যবহার হচ্ছে এসব মাস্ক।
পাইকারি মার্কেটে কমেছে বিক্রি
ঢাকার তোপখানা সড়কে অবস্থিত বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) ভবনে রয়েছে মেডিকেল যন্ত্রপাতির ও পণ্যের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার। বিএমএ ভবন দোকান মালিক সমিতির সহকারী সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস লস্কর দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, গত বছরের এপ্রিল মাসের দিকে দৈনিক গড়ে এক লাখ টাকার মত সুরক্ষা পণ্যের বিক্রি হতো। লকডাউন শেষ হওয়ার পর এক মাস পর্যন্ত অবস্থা ব্যবসা মোটামুটি এমনই ছিল।
এরপর পণ্যের চাহিদা কমতে শুরু করে। সাধারণ ক্রেতারা এখন আর আসেন না। চিকিৎসক ও মেডিকেলের ছাত্র-ছাত্রীরা সুরক্ষা পণ্য ক্রয়ের জন্য এখনো আসছেন বলে জানান ইলিয়াস লস্কর।
বাংলাদেশ প্লাস্টিক দ্রব্য প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিপিজিএমইএ) সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, করোনার আগে পিপিই’র জন্য আমরা পুরোটা চীন নির্ভর ছিলাম। এখন এক্ষেত্রে আমাদের সক্ষমতা বেড়েছে। আমরা এখন রপ্তানিও করছি। তবে সংক্রমণ কমে আসায় এখন চাহিদা কমতে শুরু করেছে।
ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বাজার গবেষণা ও কনসালটিং কোম্পানি গ্র্যান্ড ভিউ রিসার্চের তথ্যানুযায়ী, ২০১৯ সালে বিশ্বব্যাপী ব্যক্তিগত সুরক্ষাসামগ্রীর বাজার ছিল ৫ হাজার ৯০০ কোটি ডলারের। ২০২৭ সালে সেটি বেড়ে ৮ হাজার ৪০০ কোটি ডলারে গিয়ে দাঁড়াবে।
সুরক্ষার নির্দেশনা এখনো বলবৎ
পথেঘাটে বা জনবহুল স্থানে সুরক্ষা সামগ্রীর ব্যবহার তেমন দেখা না গেলেও, এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম অফিস-আদালত কিংবা সুপার শপ। এখনো এসব স্থানে মাস্ক ছাড়া ঢুকতে গেলে আপনাকে বাঁধার মুখে পড়তে হবে।
তবে সরকারের পক্ষ থেকে এখনো বলবৎ রাখা হয়েছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়ার সুরক্ষা নির্দেশনা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ২ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদের এক বক্তব্যে সবার স্বাস্থ্য সুরক্ষার কথা বিবেচনা করে টিকা নেয়ার পরেও মাস্ক ব্যবহার অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।