মহামারি করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে বিদায়ী বছরে অধিকাংশ দেশই রেমিট্যান্সে আগের বছরের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারেনি। তবে এক্ষেত্রে একেবারেই ব্যতিক্রম বাংলাদেশ।
করোনাকালীন প্রবাসী আয়ে শীর্ষে থাকা ১০টি উন্নয়নশীল দেশের মধ্যে সাতটিরই কমেছে রেমিট্যান্স। তবে এর মধ্যেও রেমিট্যান্স বৃদ্ধি পাওয়া তিনটি দেশের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে বাংলাদেশ। আর রেমিট্যান্স বৃদ্ধি পাওয়া বাকি দেশ দুটি হলো পাকিস্তান ও মেক্সিকো। বিদায়ি বছরে তাদের প্রবাসী আয় বেড়েছে যথাক্রমে চার ও নয় শতাংশ।
সম্প্রতি দ্য ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের এক প্রতিবেদনে এ চিত্র উঠে এসেছে। তবে প্রবাসী আয় বৃদ্ধির বিষয়টি সাময়িক বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
তাদের মতে, এভাবে প্রবাসী আয় বৃদ্ধির বিষয়টি সাময়িক। ২০২১ সালেই প্রবাসী আয় আবার পড়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। করোনার দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবের কারণে চলতি বছরে প্রবাসী আয় সাত শতাংশ কমতে পারে।
প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়, করোনাকালীন সময়ে বাংলাদেশি ও পাকিস্তানি প্রবাসী শ্রমিকদের অনেকে তাদের চাকরি হারিয়ে নিজেদের জমানো টাকা দেশে পাঠিয়েছেন। উপসাগরীয় দেশগুলোর শ্রমিকদের মধ্যে এ প্রবণতা বেশি ছিল।
প্রতিবেদনে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স বেশি আসার আরেকটি কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, করোনাকালে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা থাকায় বৈধ উপায়ে দেশে টাকা পাঠানোর পরিমাণ বেড়েছে। আবার বৈধভাবে টাকা পাঠালে প্রণোদনার হারও বাড়ানো হয়েছে, যা প্রবাসী শ্রমিকদের বৈধ উপায়ে দেশে টাকা পাঠানোর উৎসাহ বাড়িয়েছে।
বিদায়ি বছরে করোনার কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে যে মন্দা গেছে তাতে ভারত-চীনের মতো উন্নয়নশীল দেশও রেমিট্যান্স প্রবাহে মুখ থুবড়ে পড়ে। আর গত বছরে বাংলাদেশের প্রবাসী আয় বেড়েছে আট শতাংশ। ২০১৯ সালে বাংলাদেশে ১ হাজার ৮৪০ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল। ২০২০ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১ হাজার ৯৮৮ কোটি ডলারে।
এদিকে অন্যান্য বছরগুলোতে প্রবাসী আয়ে শীর্ষে থাকলেও বিদায়ি বছরে রেমিট্যান্স কমে যাওয়া উন্নয়নশীল বাকি সাতটি দেশ হলো- ভারত, চীন, ফিলিপাইন, মিশর, নাইজেরিয়া, ভিয়েতনাম ও ইউক্রেন।