আগেরদিনের মতো আজ সোমবারও পুঁজিবাজারে পতন হয়েছে। এদিন ডিএসইর সব খাতেরই বেশিরভাগ শেয়ার দর কমেছে। তবে কিছুটা ব্যতিক্রম ছিল ইন্সুরেন্স খাতের শেয়ারে। ইন্সুরেন্স খাতে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে এবং এখাতে লেনদেন বেড়েছে উল্লেখযোগ্যহারে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
আজ ডিএসইর প্রধান সূচক কমেছে ২৫ পয়েন্ট। লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দর কমেছে ২০২টির, বেড়েছে ৭৬টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৮১টির। আজ ডিএসইর ২০ খাতের মধ্যে সব খাতের বেশিরভাগ শেয়ার দর কমেছে। তবে ইন্সুরেন্স খাতের ৪৯টি কোম্পানির মধ্যে আজ দর বেড়েছে ২৫টির, কমেছে ২০টির এবং অপরিবর্ততি রয়েছে ৪টির। আর ৩৭টি জেনারেল ইন্সুরেন্সের মধ্যে ২৩টির দর বেড়েছে এবং ডিএসইর দর বৃ্দ্ধির শীর্ষ তালিকায় ১০ কোম্পানির মধ্যে ৪টি ছিল জেনারেল ইন্সুরেন্স।
আজ ইন্সুরেন্স খাতে লেনদেনও উল্লেখযোগ্যহারে বেড়েছে। খাতটিতে আজ লেনদেন হয়েছে ১৫৬ কোটি ৬১ লাখ টাকা। যা ডিএসইর মোট লেনদেনের ১০.১৩ শতাংশ। আগেরদিন এখাতে লেনদেন হয়েছিল ১০৮ কোটি ২২ লাখ টাকা। যা ডিএসইর মোট লেনদেনের ৭ শতাংশ। আগেরদিনের তুলনায় আজ খাতটিতে লেনদেন বেড়েছে ৪৮ কোটি ৩৯ লাখ টাকা বা ৩.১৩ শতাংশ।
দর বেশি বৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে ক্রিস্টাল ইন্সুরেন্স, এশিয়া প্যাসেফিক ইন্সুরেন্স, রিপাবলিক ইন্সুরেন্স, মার্কেন্টাইল ইন্সুরেন্স, রূপালী জেনারেল ইন্সরেন্স, ঢাকা ইন্সুরেন্স ও অগ্রণী ইন্সুরেন্স।
আর লেনদেন বৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে রিপাবলিক ইন্সুরেন্স, অগ্রণী ইন্সুরেন্স, রূপালী জেনারেল ইন্সুরেন্স, এশিয়া প্যাসেফিক ইন্সুরেন্স, ক্রিস্টাল ইন্সুরেন্স, প্রভাতী ইন্সুরেন্স, পিপলস ইন্সুরেন্স ও নিটল ইন্সুরেন্স।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গতকাল রোববার (২৪ জানুয়ারি) এক সেমিনারে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) চেয়ারম্যান ড. মো. মোশাররফ হোসাইন বলেছেন, ইন্সুরেন্সের প্রতি দেশের সব মানুষের আস্থা তৈরি করার জন্য ইন্সুরেন্স খাতে সিরিজ রিফর্ম চলছে। অচিরেই এখাতে বড় আকারে পরিবর্তন দেখা যাবে বলে তিনি দাবি করেন।
তবে তিনি অভিযোগ বলেন, দেশের আমদানি-রপ্তানিতে প্রতিবছর ৬ হাজার কোটি টাকার বেশি ইন্সুরেন্স হয়। কিন্তু ইন্সুরেন্স কোম্পানিগুলোর হিসাবে ২ হাজার ৮০০ কোটি টাকা থেকে ৩ হাজার ২০০ কোটি টাকা পাওয়া যায়। বাকি ৩ হাজার কোটিরও বেশি টাকার হদিস পাওয়া যায় না। তিনি বলেন, এখাতে ব্যাংকান্সুরেন্স চালু হচ্ছে। ব্যাংকান্সুরেন্স চালু হলে এসব হাওয়া হয়ে যাওয়া অর্থ কোম্পানির হিসাবে ঠিকই পাওয়া যাবে। তখন ইন্সুরেন্স কোম্পানিগুলোর আয় আরও দৃশ্যমান হবে।
সেমিনারে ইন্সুরেন্স খাতে নানা ইতিবাচক খবর প্রকাশ করা হয়। এসব খবরে খাতটির শেয়ারে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ ফিরতে শুরু করেছে বলে বাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। তারা বলছেন, গত এক মাস যাবত বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ ছিল বেক্সিমকো গ্রুপের শেয়ার, পাওয়ার খাতের শেয়ার ও লিজিং খাতের শেয়ারে। চলতি সপ্তাহের প্রথমদিন থেকে এসব খাতের শেয়ারে বিনিয়োগকারীরা তাদের বিনিয়োগ প্রত্যাহার করতে শুরু করেছে। তাই তারা আবারও হয়তো ইন্সুরেন্সের শেয়ারে আসছে। কারণ ইন্সুরেন্স খাতের শেয়ারে সামনে ডিভিডেন্ড আসছে। এবছর ইন্সুরেন্স কোম্পানিগুলো বিনিয়োগকারীদের ভালো ডিভিডেন্ড দিবে–এমন প্রত্যাশা রয়েছে। এর সাথে রয়েছে ইন্সুরেন্স কোম্পানিগুলোর মূলধন বৃদ্ধি ও ৬০ শতাংশ শেয়ার ধারণের খবর। সব মিলিয়ে ইন্সুরেন্স খাতের শেয়ারে আবারও হয়তো চাঙ্গা হাওয়া বইতে পারে বলে তারা মনে করছেন।