বিদ্যুতের চাহিদা কম থাকায় ২০২০ সালে দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতার ৬০ ভাগই ছিল অব্যবহৃত।
গত বুধবার প্রকাশিত ইনস্টিটিউট ফর এনার্জি ইকোনমিক্স অ্যান্ড ফিনান্সিয়াল অ্যানালাইসিসের (আইইইএফএ) এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০১৯ সালে উৎপাদন সক্ষমতার ৫৭ শতাংশ বিদ্যুৎ অব্যবহৃত ছিল।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বিদ্যুতের উৎপাদন সক্ষমতার ৪৫ শতাংশ এবং তার আগের অর্থবছরে ৪৮ শতাংশ ব্যবহৃত হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, ক্রমবর্ধমান এই ওভারক্যাপাসিটি সরকারের ওপর আর্থিক চাপ ও বিদ্যুতের দামের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।
বিপিডিবির বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৯-২০ অর্থবছরে বিদ্যুতের জন্য ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে প্রায় সাত হাজার ৫০০ কোটি টাকা; যা বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে দেওয়া এক বছরের ক্যাপাসিটি চার্জের প্রায় সমান।
বিপিডিবি জানায়, বর্তমানে দেশের বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর সর্বোচ্চ উৎপাদন সক্ষমতা ২০ হাজার ৩৮৩ মেগাওয়াট। তবে চাহিদা না থাকায় গ্রীষ্মকালে গড়ে প্রতিদিন আট হাজার থেকে ১২ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়। শীতকালে এটা আরও অনেক নিচে নেমে আসে।
গত বছর সর্বোচ্চ ১২ হাজার ৭৩৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়েছে।
আইইএফএ প্রতিবেদন বলছে, জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সামঞ্জস্যতা রেখে ২০১৯-২০ অর্থবছরে বিদ্যুৎ উত্পাদন প্রবৃদ্ধি ছিল মাত্র ১.২৬ শতাংশ। রিপোর্টে বিদ্যুতের চাহিদা কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে কোভিড-১৯ এর কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক প্রভাবকে দায়ী করেছে।
প্রতিবেদনে সতর্ক করে বলা হয়েছে, আগামী পাঁচ বছরে যদি বিদ্যুৎ উৎপাদন ১০ শতাংশ বাড়ে, তাহলে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতার ৬০ শতাংশের বেশি অব্যবহৃত থেকে যাবে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, নতুন ১৫ হাজার ২৯৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা আছে এবং ২০২৫ সালের মধ্যে প্রায় ২১ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করা হবে। একইসঙ্গে পুরনো কিছু বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হবে যেগুলোর সক্ষমতা পাঁচ হাজার ৫০১ মেগাওয়াট।