1. [email protected] : শেয়ারবার্তা প্রতিবেদক : শেয়ারবার্তা প্রতিবেদক
  2. [email protected] : শেয়ারবার্তা : nayan শেয়ারবার্তা
  3. [email protected] : news uploder : news uploder
বিভিন্ন ইস্যুতে অনিয়মের আখড়া ব্যাংকের বড় শাখাগুলো
সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫, ০১:৩৬ পিএম

বিভিন্ন ইস্যুতে অনিয়মের আখড়া ব্যাংকের বড় শাখাগুলো

  • আপডেট সময় : বৃহস্পতিবার, ২১ জানুয়ারী, ২০২১
bank

দেশের ব্যাংকগুলোর বিতরণকৃত ঋণের পরিমাণ ১৪ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। ঋণের সিংহভাগই যাচ্ছে ব্যাংকের বৃহৎ শাখাগুলোর মাধ্যমে। ঋণ অনুমোদন, সুদ মওকুফ, খেলাপি হওয়া ঋণ পুনঃতফসিলসহ বিভিন্ন ইস্যুতে অনিয়মের আখড়ায় পরিণত হয়েছে এসব শাখার অনেকগুলোই। তথ্য পাওয়ায় বিশেষ পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে এমন তথ্য।

প্রাপ্ত তথ্যমতে, করোনাকালে সরকারি ছুটির সময়ও ব্যাংকিং কার্যক্রম অব্যাহত ছিল। এই সময়ে সরকার প্রায় এক লাখ ২১ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করে, যার প্রায় পুরোটা বাস্তবায়ন করা হয় ব্যাংকের মাধ্যমে। করোনাকালেই ব্যাংকঋণের সুদহার সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ নির্ধারণ করে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এসব কার্যক্রম সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে কি না, তা জানতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে একটি উদ্যোগ নেয়া হয়। বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকের বৃহৎ শাখার কাছ থেকে মাঠপর্যায়ের তথ্য নেয়া হয় কয়েকটি বিষয়ের ওপর। এর মধ্যে রয়েছে ঋণ সুদহার এখনও ৯ শতাংশে নামিয়ে না আনা, সুদ ও দণ্ড সুদ মওকুফ এবং সরকারের নেয়া প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নে অনিয়মের ইস্যুটি। এছাড়া রয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের জারিকৃত বিভিন্ন নীতিমালার বাস্তবায়ন কতটুকু হচ্ছে।

শাখা পর্যায় থেকে প্রাপ্ত তথ্য যাচাই করে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি বিভাগ দেখতে পায়, ব্যাংকগুলোর এসব নির্দেশনা পালনের ক্ষেত্রে রয়েছে প্রচুর অনিয়মের খবর। তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, ঋণ মঞ্জুর থেকে শুরু করে সুদ মওকুফের বেলায়ও বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা লঙ্ঘন করা হচ্ছে। একই গ্রাহককে বছরের পর বছর সুদ ছাড়ের সুবিধা দেয়া হচ্ছে। দণ্ড সুদ মওকুফের বেলায় ঘটছে একই অনিয়ম। আবার পুনঃতফসিল করা হচ্ছে অনিয়মের মাধ্যমে দেয়া ঋণের।

এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ‘কিছু খেলাপি ঋণ বছরের পর বছর পুনঃতফসিল হচ্ছে। গ্রাহক প্রতিষ্ঠান প্রতিবারই সুদহার ও দণ্ড সুদের মওকুফ সুবিধা পাচ্ছে। এতে গ্রাহক খেলাপি হওয়ার প্রবণতায় থেকে যাচ্ছে। ব্যাংকের ঋণ আদায় হচ্ছে না। বছরের পর বছর ঋণের পরিমাণ বেড়েই চলছে। একসময় দেখা যাবে, গ্রাহক প্রতিষ্ঠান ঋণ তো পরিশোধ করবেই না, উপরন্তু প্রতিষ্ঠানের সম্পদ গোপনে বিক্রি করে চলে যাবে। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে ব্যাংকগুলো বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা বাস্তবায়নেও গড়িমসি দেখাচ্ছে।’

প্রাপ্ত তথ্যের ওপর একটি প্রতিবেদন তৈরি করে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগ। প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হয়, বৃহৎ শাখাগুলোর ওপর বিশেষ পরিদর্শন চালাতে পারে বাংলাদেশ ব্যাংকের অন-সাইট পরিদর্শন বিভাগ। এতে রাজধানীসহ সারা দেশে থাকা বৃহৎ শাখাগুলোকেও অন্তর্ভুক্ত করা যায়।

এ বিষয়ে সম্প্রতি একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় কয়েকটি বিভাগের সমন্বয়ে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গর্ভনর এসএম মনিরুজ্জামানের নেতৃত্বে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় বৃহৎ শাখাগুলোর ওপর অন-সাইট ও অফসাইট সুপারভিশন বিভাগ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের আলোকে বিশেষ পরিদর্শন চালানো হবে। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে দুটি বিভাগকে দায়িত্ব দেয়া হয়।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘ব্যাংকগুলোর ওপর নিয়মিতই কমপ্রিহেনসিভ পরিদর্শন কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে বাংলাদেশ ব্যাংক। কোনো শাখার ওপর বিশদ পরিদর্শনের প্রয়োজন দেখা দিলে বাংলাদেশ ব্যাংক নিজ উদ্যোগেই তা করে থাকে। এর বাইরেও কোনো ব্যাংকের শাখার বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপিত হলে সে বিষয়ে বিশদ পরিদর্শন করে থাকে বাংলাদেশ ব্যাংক।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত অক্টোবর শেষে ব্যাংকগুলোর বিতরণকৃত ঋণ স্থিতির পরিমাণ হচ্ছে ১৪ লাখ আট হাজার কোটি টাকা। গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯৪ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা।

প্রসঙ্গত, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ওপর দুই ধরনের পরিদর্শন কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে বাংলাদেশ ব্যাংক। একটি হচ্ছে অন-সাইট অর্থাৎ কেন্দ্রীয় কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে সরেজমিন পরিদর্শন। অপরটি হচ্ছে অফ-সাইট অর্থাৎ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্ধারিত ছকে নিয়মিত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর পাঠানো বিভিন্ন তথ্য। এসব তথ্য পর্যালোচনা করে সংশ্লিষ্ট বিভাগ।

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:

ভালো লাগলে শেয়ার করবেন...

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ