পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত বস্ত্র খাতের কোম্পানি রিংসাইন টেক্সটাইলের আর্থিক অবস্থা জানাতে বিশেষ নিরীক্ষক নিয়োগ দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
মঙ্গলবার দেশের অন্যতম নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠান হুদাভাসি চৌধুরী অ্যান্ড কোম্পানিকে নিয়োগ দিয়েছে বিএসইসি। কোম্পানির বন্ধের কারণ, লোকসানের কারণ, ব্যবস্থপনার অবস্থা অনুসন্ধান করবে প্রতিষ্ঠানটি।
এর আগে ২০২০ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে করোনার কারণে কাঁচামাল ও রপ্তানি আদেশের সংকটে সাময়িকভাবে কোম্পানিটি লে-অফ বা বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিওর মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে ১৫০ কোটি টাকা পুঁজি সংগ্রহ করেছিল। সেই অর্থে কোম্পানির জন্য যন্ত্রপাতিসহ নানা সামগ্রী অধিগ্রহণ ও ব্যাংকঋণ পরিশোধ করার কথা। আর তাতে কোম্পানির আর্থিক অবস্থার উন্নতি হবে আর বিনিয়োগকারীরা পাবেন মুনাফার ভাগ।
ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা বা ডিইপিজেডে অবস্থিত রিংসাইন টেক্সটাইল কোম্পানিটি। এর আগে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে হঠাৎ করেই কোম্পানিটির বিদেশি মালিকেরা অনেকটা গোপনে দেশ ছেড়ে যান। পরে ইপিজেডের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষের (বেপজা) মধ্যস্থতায় দেশে ফেরত আনা হয় কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা এমডিকে। এ ঘটনার জেরে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি কোম্পানিটির ব্যাংক হিসাব জব্দ করার অনুরোধ জানায় বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে। পরে বাংলাদেশ ব্যাংক কোম্পানিটির সংশ্লিষ্ট ব্যাংক হিসাব জব্দ করে। এতে ব্যাংক হিসাবে আটকে যায় কোম্পানিটির আইপিওর টাকার একটি বড় অংশ।
বেপজা ও কোম্পানি–সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রপ্তানি আদেশ ও পুঁজির সংকটে হিমশিম খাওয়া এ কোম্পানিটির উদ্যোক্তারা কোম্পানিটি বিক্রির চেষ্টা চালাচ্ছেন। তবে দেনার ভারে জর্জরিত এ কোম্পানিটি কেনার মতো আগ্রহী কাউকে এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি।
বেপজার মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) নাজমা বিনতে আলমগীর বলেন, ‘কোম্পানিটি বেশ কিছুদিন ধরে আর্থিকভাবে দুর্বল। কোম্পানিটি নিয়ম অনুযায়ী বন্ধ ঘোষণা করলে শ্রমিকের সব পাওনা পরিশোধ করার অবস্থাও নেই। তাই আমরা চাইছি, কোম্পানিটির কিছু অংশ বিক্রি করে হলেও সংকট কাটিয়ে উঠুক। শ্রমিকেরা যাতে কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত না হন, সেই চেষ্টা চালাচ্ছি আমরা।’
এদিকে কোম্পানিটি সর্বশেষ গত জানুয়ারি-মার্চ সময়কালের যে আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানু-মার্চ-২০২০) এটির শেয়ারপ্রতি আয় বা ইপিএস ছিল ১৯ পয়সা ঋণাত্মক।