প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ বোখারি কোম্পানিতে পর্যবেক্ষক বসিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। একই সঙ্গে কোম্পানিটির সার্বিক কার্যক্রম যাচাইয়ে বিশেষ নিরীক্ষা করানোরও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কোম্পানিটির কার্যক্রমকে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থের অনুকূলে আনতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বিএসইসির নেতৃত্বে তিন সদস্যের পর্যবেক্ষক কমিটি করা হয়। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানির ক্ষেত্রে পর্যবেক্ষক বসানো ও কোম্পানিটি পরিচালনার ক্ষেত্রে পথনকশা তৈরিতে প্রথমবারের মতো এ ধরনের উদ্যোগ নিল বিএসইসি। কোম্পানিটি হলো বস্ত্র খাতের কোম্পানি আলহাজ টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড। পুঁজিবাজারের লোক হয়েও পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীর স্বার্থ পরিপন্থী কাজ করায় কোম্পানিটিতে বিএসইসি পর্যবেক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বিএসইসি বলছে, কোম্পানিটির বিষয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থার নেওয়া কার্যক্রম চলমান থাকা অবস্থায় ওই কোম্পানি তাদের স্থায়ী-অস্থায়ী কোনো সম্পদ বিক্রি, স্থানান্তর, বন্ধক, রূপান্তর করতে পারবে না। এ জন্য কোম্পানিটির সব ধরনের সম্পদের ওপর বিক্রি, স্থানান্তর, বিক্রয় ও রূপান্তরে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
গত মঙ্গলবার এ–সংক্রান্ত আদেশ জারি করেন বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলাম। সিকিউরিটিজ আইন অনুযায়ী, কোম্পানিটির উদ্যোক্তা-পরিচালকদের পক্ষ থেকে সম্মিলিতভাবে ন্যূনতম ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ না করায় এ উদ্যোগ নেওয়া হয়। বিএসইসি বলছে, ন্যূনতম শেয়ার ধারণ না করে আইন লঙ্ঘনের পাশাপাশি কোম্পানিটি গত দুই বছর বিনিয়োগকারীদের কোনো লভ্যাংশ দেয়নি। অথচ লভ্যাংশ দেওয়ার মতো আর্থিক সামর্থ্য ছিল। এ কারণে বিএসইসি মনে করছে, কোম্পানিটিতে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ লঙ্ঘিত হচ্ছে। এ ছাড়া কোম্পানিটির এক পরিচালক আইন লঙ্ঘন করে উচ্চমূল্যে কোনো ঘোষণা ছাড়াই বিপুল শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন। এসব ঘটনায় কোম্পানিটির কার্যক্রম তদারকিতে বিএসইসির এক নির্বাহী পরিচালকের নেতৃত্বে উচ্চপর্যায়ের পর্যবেক্ষক কমিটি গঠন করা হয়। পাশাপাশি কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদে নতুন করে একজন স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ করা হয়েছে। যিনি পর্যবেক্ষক কমিটি বা নিয়ন্ত্রক সংস্থার পক্ষ হয়ে কোম্পানিটির পর্ষদে বসে কার্যক্রম পর্যালোচনা করবেন।
১৯৮৩ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া আলহাজ টেক্সটাইল বর্তমানে জাঙ্ক বা জেড শ্রেণিভুক্ত কোম্পানি। ২০১৮ সালেও কোম্পানিটির উদ্যোক্তা-পরিচালকদের হাতে সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার ছিল। গত দুই বছরে তার বড় অংশই বিক্রি করে দেওয়া হয়। ২০১৮ সালের পর কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের কোনো ডিভিডেন্ড দেয়নি। এরপর থেকে কোম্পানিটিতে উদ্যোক্তাদের শেয়ারের পরিমাণও কমতে থাকে। সর্বশেষ গত নভেম্বর শেষে কোম্পানিটির উদ্যোক্তা-পরিচালকদের হাতে সম্মিলিত শেয়ারের পরিমাণ কমে দাঁড়িয়েছে ১২.৭৮ শতাংশে।