পুঁজিবাজারের যেসব কোম্পানির উদ্যোক্তা-পরিচালক সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণে ব্যর্থ হয়েছেন, সেসব কোম্পানিতে সর্বনিম্ন দুজন করে স্বতন্ত্র পরিচালক বসানো হবে। আগের স্বতন্ত্র পরিচালকদের পাশাপাশি এসব কোম্পানিতে নতুন করে আরও স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হবে।
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) গতকালের সভায় বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয়। কোম্পানিভেদে সর্বনিম্ন দুজন থেকে প্রয়োজন অনুযায়ী সর্বোচ্চসংখ্যক স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দেওয়ার কর্মপরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হয়েছে। এর বাইরে ২ শতাংশ শেয়ারধারী কোনো বিনিয়োগকারী যদি এসব কোম্পানির পরিচালক হতে আগ্রহী হন, তাহলে সেই বিধানও রেখেছে বিএসইসি।
গত ২৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত বিএসইসির কমিশন সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যেসব কোম্পানির উদ্যোক্তা-পরিচালকেরা সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণে ব্যর্থ হবেন, সেসব কোম্পানির পর্ষদ পুনর্গঠন করা হবে। সে জন্য কর্মপরিকল্পনাও চূড়ান্ত করা হয় ওই সভায়। গত সোমবার ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণে বিএসইসির বেঁধে দেওয়া সময় শেষ হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে মোট ২১টি কোম্পানির উদ্যোক্তা-পরিচালক সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণে ব্যর্থ হয়েছেন। আর ৭টি কোম্পানি বাড়তি সময় চেয়েছে। শুরুতে বিএসইসি ব্যর্থ ২১ কোম্পানির পর্ষদ পুনর্গঠনের উদ্যোগ নিয়ে এগোচ্ছে।
বিএসইসির তথ্যমতে, কয়েক দিনের মধ্যেই ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণে ব্যর্থ কোম্পানিগুলোর বিষয়ে করণীয়-সংক্রান্ত আদেশ জারি করা হবে। আদেশ জারির পরই তা কার্যকরে উদ্যোগ নেওয়া হবে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএসইসির সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সুরক্ষাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে এসব কোম্পানির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। স্বতন্ত্র পরিচালকের সংখ্যা বাড়িয়ে কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করা হবে।
২০১০ সালে পুঁজিবাজার ধসের পর ২০১১ সালে ন্যূনতম শেয়ার ধারণসংক্রান্ত বিধান করে বিএসইসি। সেই অনুযায়ী তালিকাভুক্ত কোম্পানির উদ্যোক্তা-পরিচালকদের হাতে সম্মিলিতভাবে সব সময় ওই কোম্পানির ৩০ শতাংশ শেয়ার থাকা বাধ্যতামূলক। ২০১১ সালে এমন আইন করা হলেও সেটি পরিপালনের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এ কারণে আইনটি করার পর তালিকাভুক্ত অনেক কোম্পানিও ন্যূনতম শেয়ার ধারণের শর্ত মানেনি।
গত মে মাসে বিএসইসি পুনর্গঠনের পর গত ২৯ জুলাই ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণে ব্যর্থ ৪৩ কোম্পানিকে ৬০ দিন সময় বেঁধে দিয়ে চিঠি দেয় বিএসইসি। এরপর এক দফা সময় বাড়িয়ে তা ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত করা হয়। এ সময়ের মধ্যে ১৫ কোম্পানি নতুন করে শেয়ার কিনে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণের শর্ত পূরণ করেছে।