পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ‘জেড’ ক্যাটাগরি কোম্পানির শেয়ারে সুবাতাস বইতে শুরু করেছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের নতুন সিদ্ধান্ত নেয়ার পর থেকেই এমনটি লক্ষ্য করা যায়। আজ রবিবার সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস লেনদেন শেষে ‘জেড’ ক্যাটাগরির ৯৮% শেয়ারের দর বেড়েছে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, আজ ‘জেড’ ক্যাটাগরির ৫২টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন করেছে। এরমধ্যে দর বেড়েছে ৫১টি বা ৯৮ % কোম্পানির। আর দর কমেছে একটি মাত্র কোম্পানির। বর্তমানে ডিএসইর ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে ৫৩টি কোম্পানি তালিকাভুক্ত রয়েছে। এরমধ্যে একটি কোম্পানি আজ লেনদেন করেনি।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, আজ লেনদেন শেষে ‘জেড’ ক্যাটাগরি কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে আল-হাজ টেক্সটাইলের, কোম্পানিটির দর ৩.২০ টাকা বা ১০% বেড়েছে। এরপর দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে আরএন স্পিনিংয়ের, কোম্পানির ৪০ পয়সা বা ১০% দর বেড়েছে। আর তৃতীয় স্থানে রয়েছে ফারইস্ট ফিন্যান্স, কোম্পানিটির দর বেড়েছে ৩০ পয়সা বা ১০ %।
এদিকে দর কমেছে শুধু সোনালী পেপারের। কোম্পানিটির ৬.৫০ টাকা বা ২.১২% দর কমেছে। আর লেনদেন হয়নি বিডি সার্ভিসেস লিমিটেডের।
উল্লেখ্য, শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ‘জেড’ ক্যাটাগরির কোম্পানিগুলোর মধ্যে সুশাসন আনার লক্ষ্যে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের শেয়ার বিক্রি ও হস্তান্তর বন্ধসহ নানা সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এবং চার বছরের মধ্যে কোম্পানি ভাল অবস্থায় না গেলে তালিকাচ্যূত করতে পারবে স্টক এক্সচেঞ্জ। গত বৃহস্পতিবার বিএসইসির এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সকল স্পন্সর ও বর্তমান পরিচালকদের ধারণকৃত শেয়ার বিক্রয়, হস্তান্তর, স্থানান্তর এবং প্লেজ বন্ধ থাকবে। ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে লেনদেনকৃত কোম্পানিসমূহকে ছয় মাসের মধ্যে বার্ষিক সাধারন সভা (এজিএম) করতে হবে। সকল ধরনের শেয়ার হোল্ডার মিটিং (এজিএম/ইজিএম) ই-ভোটিং/অনলাইন ভোটিং এর সুবিধা প্রদান পূর্বক ডিজিটাল প্লাটফর্মে অথবা হাইব্রিড সিস্টেমে করতে হবে। যে সকল কোম্পানি দুই বছর বা তদূর্ধ্ব সময় ধরে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে অন্তর্ভুক্ত সেই সমস্ত কোম্পানি ৪৫ কর্মদিবসের মধ্যে চলমান বোর্ড পুনর্গঠন করতে ব্যর্থ হলে বর্তমান পরিচালক ও স্পন্সরগণ অন্যকোন তালিকাভুক্ত কোম্পানিতে ও শেয়ারবাজার মধ্যস্থতাকারী কোন কোম্পানির পরিচালক হিসেবে থাকতে পারবেন না।
এছাড়া কমিশন এ ক্ষেত্রে বিশেষ অডিটর ও কমিশন কর্তৃক পর্যবেক্ষক নিয়োগ এর মাধ্যমে বোর্ড পুনর্গঠন করে ‘জেড’ ক্যাটাগরি কোম্পানির সুশাসন নিশ্চিত করবে। পুনর্গঠিত পরিচালনা পর্ষদ ৪ বছরের মধ্যে কোম্পানির সার্বিক অবস্থার উন্নয়ন করতে ব্যর্থ হলে স্টক এক্সচেঞ্জ উক্ত কোম্পানিকে তালিকা সহ অন্যান্য আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এবং এ বিষয়ে পূর্ববর্তী নোটিফিকেশন এবং আদেশ বাতিল করে শীঘ্রই কমিশন কর্তৃক একটি নোটিফিকেশন ইস্যু করার সিদ্ধান্তও গৃহীত হয়।
এই ক্ষেত্রে স্টক এক্সচেঞ্জের (সেটেলমেন্ট অব ট্রান্সসেকশন) রেগুলেশনস, ২০১৩ এর প্রয়োজনীয় ধারা সংশোধনপূর্বক বিভিন্ন কারনে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে লেনদেনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। এরমধ্যে পরপর ২ বছর নগদ লভ্যাংশ প্রদানের ব্যর্থ কোম্পানি ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে লেনদেন হবে। আর পরপর ২ বছর এজিএম আয়োজন করতে ব্যর্থ কোম্পানিও ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে লেনদেন হবে।