ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গত সপ্তাহে সূচকের মিশ্র প্রবণতায় দৈনিক গড় লেনদেন বেড়েছে ৬০ দশমিক ৩৩ শতাংশ। দৈনিক গড় বেড়েছে, কারণ তার আগের সপ্তাহের তুলনায় লেনদেন হয়েছে এমন কোম্পানির সংখ্যা বেড়েছে। আর বাজার মূলধন বেড়েছে শূন্য দশমিক ১৫ শতাংশ। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) একই চিত্র লক্ষ্য করা গেছে।
সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স সাত দশমিক ৫৫ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ১৯ শতাংশ বেড়ে চার হাজার ৬৯ দশমিক ১১ পয়েন্টে স্থির হয়। ডিএসইএস বা শরিয়াহ্ সূচক ছয় দশমিক ৮৫ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৭৩ শতাংশ বেড়ে ৯৪৫ দশমিক ৮১ পয়েন্টে পৌঁছায়। ডিএস৩০ সূচক শূন্য দশমিক ৬১ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক শূন্য চার শতাংশ কমে এক হাজার ৩৬৮ দশমিক ৭৬ পয়েন্টে স্থির হয়। মোট ৩৬০টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৭৯টির, কমেছে ১০০টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ১৭৯ কোম্পানির শেয়ারদর। লেনদেন হয়নি দুটির। দৈনিক গড় লেনদেন হয় ৩০১ কোটি ৬০ লাখ ৮১ হাজার ৫২৪ টাকা। আগের সপ্তাহে দৈনিক গড় লেনদেন হয় ১৮৮ কোটি ১১ লাখ ২৭ হাজার ৪৬৮ টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে দৈনিক গড় লেনদেন বেড়েছে ১১৩ কোটি ৪৯ লাখ ৫৪ হাজার ৫৬ হাজার টাকা বা ৬০ দশমিক ৩৩ শতাংশ।
গেলো সপ্তাহে ডিএসইতে মোট টার্নওভার বা লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় এক হাজার ৫০৮ কোটি চার লাখ সাত হাজার ৬১৯ টাকা। আগের সপ্তাহে যা ছিল ৯৪০ কোটি ৫৬ লাখ ৩৭ হাজার ৩৪২ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে টার্নওভার বেড়েছে ৫৬৭ কোটি ৪৭ লাখ ৭০ হাজার ২৭৭ টাকা বা ৬০ দশমিক ৩৩ শতাংশ।
ডিএসইতে গত সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার বাজার মূলধন ছিল তিন লাখ ১৫ হাজার কোটি ৬৪ লাখ ৬৭ হাজার ৭০৬ টাকা। শেষ কার্যদিবসে যার পরিমাণ ছিল তিন লাখ ১৫ হাজার ৪৭৭ কোটি ৪৫ লাখ ২১ হাজার ৯৩৫ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন বেড়েছে শূন্য দশমিক ১৫ শতাংশ বা ৪৭৬ কোটি ৮০ লাখ ৫৪ হাজার ২২৯ টাকা।
গত সপ্তাহে ডিএসইর টপ টেন গেইনার তালিকার শীর্ষে উঠে আসে বিবিধ খাতের কোম্পানি জিকিউ বলপেন ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। আলোচিত সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে ৩৯ দশমিক ৫১ শতাংশ। গত সপ্তাহে কোম্পানিটির প্রতিদিন গড় লেনদেন হয়েছে তিন কোটি ২৮ লাখ ৯৫ হাজার টাকার শেয়ার। সপ্তাহ শেষে মোট লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ১৬ কোটি ৪৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা।
এদিকে সর্বশেষ কার্যদিবসে ডিএসইতে জিকিউ বলপেন ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ারদর তিন দশমিক ৬৯ শতাংশ বা তিন টাকা ৯০ পয়সা বেড়ে প্রতিটি সর্বশেষ ১০৯ টাকা ৬০ পয়সায় হাতবদল হয়, যার সমাপনী দর ছিল ১০৭ টাকা ৭০ পয়সা। দিনজুড়ে দুই লাখ ৯৩ হাজার ৮৬০টি শেয়ার এক হাজার ৪৬৭ বার হাতবদল হয়, যার বাজারদর তিন কোটি ১৩ লাখ এক হাজার টাকা। দিনভর শেয়ারদর সর্বনি¤œ ১০১ টাকা ১০ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ১০৯ টাকা ৬০ পয়সায় হাতবদল হয়। গত এক বছরে শেয়ারদর ৫২ টাকা ৭০ পয়সা থেকে ১০৯ টাকা ৭০ পয়সার মধ্যে ওঠানামা করে।
তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড। কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে ২৬ দশমিক ৮৬ শতাংশ। আলোচ্য সপ্তাহে কোম্পানিটির প্রতিদিন এক কোটি ৬০ লাখ ৫৭ হাজার ৬০০ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আর পুরো সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে আট কোটি দুই লাখ ৮৮ হাজার টাকার শেয়ার।
তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছে ফাইন ফুডস লিমিটেড। খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের ‘বি’ ক্যাটেগরির এ কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে ১৭ দশমিক ৭৫ শতাংশ। আলোচ্য সপ্তাহে কোম্পানিটির প্রতিদিন তিন কোটি ৮৬ লাখ ৭৮ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আর পুরো সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে ১৯ কোটি ৩৩ লাখ ৯০ হাজার টাকার শেয়ার।
এর পরের অবস্থানে ছিল যথাক্রমে অগ্রণী ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড ও সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড। বিমা খাতের ‘বি’ ক্যাটেগরির কোম্পানি অগ্রণী ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারদর বেড়েছে ১৭ দশমিক ৭০ শতাংশ। আলোচ্য সপ্তাহে কোম্পানিটির প্রতিদিন এক কোটি ৮৮ লাখ ৯১ হাজার ২০০ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আর পুরো সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে ৯ কোটি ৪৪ লাখ ৫৬ হাজার টাকার শেয়ার।
আর সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারদর বেড়েছে ১৬ দশমিক ৮৭ শতাংশ। আলোচ্য সপ্তাহে কোম্পানিটির প্রতিদিন দুই কোটি ৬৯ লাখ ১৪ হাজার ৮০০ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আর পুরো সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে ১৩ কোটি ৪৫ লাখ ৭৪ হাজার টাকার শেয়ার।
ডিএসইতে টার্নওভারের দিক থেকে শীর্ষে ছিল ওষুধ ও রসায়ন খাতের কোম্পানি বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির এক কোটি আট লাখ ১১ হাজার ১৯৯টি শেয়ার ৮০ কোটি ৫৪ লাখ ১৯ হাজার টাকায় লেনদেন হয়, যা মোট লেনদেনের পাঁচ দশমিক ৩৪ শতাংশ। সপ্তাহজুড়ে শেয়ারটির দর দুই দশমিক ৬২ শতাংশ বেড়েছে।