বিদায়ী সপ্তাহে প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) খাতভিত্তিক লেনদেনে মিশ্র প্রবণতা দেখা গেছে। ওষুধ, ব্যাংক খাত ইতিবাচক থাকলেও নেতিবাচক ছিল বস্ত্র খাতে। প্রধান সূচক ইতিবাচক ধারায় শেষ হলেও লেনদেনের আকার খুব একটা বৃদ্ধি পায়নি।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, করোনাকালের প্রভাব তো রয়েছেই। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে ফ্লোর প্রাইস। এসব নিয়ে বিনিয়োগকারীরা সংশয়ে রয়েছেন বিনিয়োগ নিয়ে। এজন্য সরকারি সাধারণ ছুটির পর থেকেই লেনদেন শতকোটি টাকার নিচেই রয়েছে। গত সপ্তাহে লেনদেন বৃদ্ধি পেয়েছিল গ্ল্যাক্সোস্মিথের শেয়ার ইউনিলিভারের কাছে হস্তান্তরের কারণে। এ কারণে লেনদেনের আকার বৃদ্ধি ও সূচকের উত্থান হয়েছে। প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বৃদ্ধি পেয়েছে আগের সপ্তাহের চেয়ে দুই দশমিক ১৭ দশমিক ৪৫ পয়েন্ট।
ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, গত সপ্তাহে মোট ৩৬০ কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ড লেনদেনে অংশগ্রহণ করে। সপ্তাহ শেষে দেখা গেছে, আগের চেয়ে এর মধ্যে শেয়ারদর বৃদ্ধি পায় ৪৮টির, কমে ১৮টির, দর অপরিবর্তিত থাকে ২৮১টির এবং লেনদেন হয়নি ১৩টির। অপরিবর্তিত থাকা কোম্পানিগুলোর মধ্যে সিংহভাগ কোম্পানিরই লেনদেন হয়েছে নামে মাত্র।
এদিকে, সর্বশেষ দিন বৃহস্পতিবার ডিএসইতে মাত্র ৮১ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বৃদ্ধি পায় ২৪টির, কমে ৩৬টির এবং দর অপরিবর্তিত থাকে ২১৩টির। দর অপরিবর্তিত থাকা ২১৩টির ৯০ শতাংশ কোম্পানিরই লেনদেন হয়েছে নামে মাত্র।
বিদায়ী সপ্তাহে ভ্রমণ ও বিনোদন, বস্ত্র ও ব্যাংক খাতের শেয়ারদর ইতিবাচক ধারায় লেনদেন শেষ করে। ভ্রমণ খাত চার দশমিক এক শতাংশ, পাট খাত দুই দশমিক তিন শতাংশ ও ব্যাংক খাত শূন্য দশমিক আট শতাংশ। অন্যদিকে শেয়ারদর হারিয়েছে বস্ত্র খাত শূন্য দশমিক দুই শতাংশ, সিরামিক শূন্য দশমিক এক শতাংশ ও প্রকৌশল খাত শূন্য দশমিক এক শতাংশ।
এই সময়ে মোট লেনদেনের ৪৬ দশমিক এক শতাংশ ওষুধ ও রসায়ন খাতের শেয়ারে, ১৭ শতাংশ ব্যাংক খাতে এবং টেলিকম খাতের শেয়ারে ১০ দশমিক ৯ শতাংশ বিনিয়োগ করে বলে বিশ্লেষণে জানা গেছে। গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই বিনিয়োগকারীরা এসব খাত ধরেই বিনিয়োগ করছেন।
ডিএসইর মোট লেনদেনে গত সপ্তাহের ওষুধ ও রসায়ন খাতের অবদান ছিল ৫২ দশমিক পাঁচ শতাংশ, যা সবচেয়ে বেশি। এরপরই ব্যাংক ১৫ দশমিক তিন শতাংশ, টেলিকম খাত ১০ শতাংশ, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাত সাত দশমিক ৯ শতাংশ অবদান রাখে। এছাড়া বস্ত্র খাত দুই দশমিক চার শতাংশ, খাদ্য খাত দুই দশমিক তিন শতাংশ ও মিউচুয়াল ফান্ড এক দশমিক সাত দশমিক।
একক কোম্পানি হিসেবে লেনদেনে সর্বোচ্চ অবদান ছিল বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের। এরপরই ছিল বাংলাদেশ সাবমেরিন কেব্ল কোম্পানি লিমিটেড ও গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন (জিএসকে) বাংলাদেশ।
এছাড়া শেয়ারদর বৃদ্ধিতে একক কোম্পানি হিসেবে ডিএসইতে গেইনারের শীর্ষে উঠে এসেছে প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি। গত সপ্তাহে শেয়ারটির দর বৃদ্ধি হয় আট দশমিক ২৯ শতাংশ। এরপরই রয়েছে পূবালী ব্যাংক এমবি ফার্মা, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেব্ল কোম্পানি, ফাইন ফুডস, ফার্মা এইডস, ওয়াটা কেমিক্যালস, ন্যাশনাল ব্যাংক ও এনসিসি ব্যাংক।
অন্যদিকে শেয়ারদর হারানোর শীর্ষ ১০টিতে উঠে এসেছেÑঢাকা ডায়িং অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারিং, এক্সিম ব্যাংক, বেক্সিমকো সিনথেটিকস, জেনারেশন নেক্সট ফ্যাশনস লিমিটেড, বাংলাদেশ ওয়েল্ডিং ইলেকট্রোডস, ইস্টার্ন লুব্রিক্যান্টস, দেশ গার্মেন্টস, আইসিবি এএমসিএল সেকেন্ড মিউচুয়াল ফান্ড ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক।
শেয়ারবার্তা / আনিস