পুঁজিবাজারে সন্তোষজনক লেনদেন নেই বহুদিন। করোনাকালে লেনদেন শুরু হলেও এক দিনও সন্তোষজনক লেনদেন হয়নি। দুই-এক কার্যদিবস লেনদেন সামান্য বৃদ্ধি পেতে দেখা গেলেও তা হয়েছে ব্লক মার্কেটে লেনদেনের কল্যাণে।
সম্প্রতি এক দিন দুই হাজার ৫৪৩ কোটি টাকা লেনদেন হলেও এর মধ্যে মাত্র ৬৪ কোটি টাকা ছিল মূল মার্কেটের লেনদেন। বাকি লেনদেন ছিল ব্লক মার্কেটের। গতকালে লেনদেন ৫০০ কোটি টাকা অতিক্রম করেছে। কিন্তু এর আড়ালেও রয়েছে ব্লক মার্কেট। গতকাল ডিএসইতে মোট ৫৫৫ কোটি টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট কেনাবেচা হয়। এর মধ্যে ৭৯ কোটি টাকা ছিল মূল মার্কেটের লেনদেন। বাকি লেনদেন হয়েছে ব্লক মার্কেটে।
তবে ব্লক মার্কেটের দাপটকে আমলে নিচ্ছেন না সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। তারা অপেক্ষায় মূল মার্কেটে সন্তোষনক লেনদেনের। সন্তোষ লেনদেন হচ্ছে না বলেই অনেক বিনিয়োগকারী বাজারের প্রতি আগ্রহী হচ্ছেন না। যারা বাজারে আসছেন তারা অবস্থান করছেন তিন থেকে চারটি খাতের কোম্পানিতে। মাঝেমধ্যে অন্য কিছু কোম্পানিতে বিনিয়োগ করলেও তারা আস্থা ধরে রাখতে পারছে না। ফলে আবারও ঘুরেফিরে নির্দিষ্ট খাতের কোম্পানিতে ফিরে আসছেন তারা।
ডিএসইতে যে-সংখ্যক কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ড তালিকাভুক্ত আছে, তাতে এক হাজার টাকা লেনদেনকে স্বাভাবিক হিসাবে ধরা হয়। তবে ৬০০ কোটি টাকা লেনদেন হলেও তাকে সন্তোষজনক লেনদেন হিসাবে ধরে নেওয়া হয়। অর্থাৎ মূল মার্কেটে সন্তোষজনক লেনদেন হতে হলে তা কমপক্ষে ৫০০ কোটি টাকা অতিক্রম করতে হবে। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে তা সম্ভব নয়। কারণ করেনাভাইরাস দীর্ঘস্থায়ী হওয়ায় কেউই পুঁজিবাজার কিংবা অন্য কোম্পানিতে বিনিয়োগ করতে চাচ্ছেন না। অন্যদিকে ফ্লোর প্রাইসের কারণেও লেনদেনে বড় ধরনের ব্যঘাত ঘটছে। সে জন্য এই পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীদের ধৈর্য ধারণ করা ছাড়া উপায় নেই। সন্তোষজনক লেনদেনের দেখা পেতে হলে তাদের আরও বহুদিন অপেক্ষা করতে হবে।
তবে এই বৈরী পরিস্থিতির মধ্যেও কিছু বিনিয়োগকারী সাহস দেখিয়ে ভালো মানের কোম্পানির শেয়ারদর বাড়িয়ে কিনছেন। এটা ভালো লক্ষণ বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। কারণ বহুদিন থেকেই এসব কোম্পানির শেয়ার বিনিয়োগ করার উপযোগী হয়ে রয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী এসব কোম্পানির মধ্যে বেশিরভাগ শেয়ারের যে দর থাকার দরকার তার চেয়ে আরও কম দরে অবস্থান করছে। ফলে এসব শেয়ার কিছু বেশি দরে কিনলেও বিনিয়োগকারীদের তেমন ঝুঁকি নেই। এতে বরং অন্য বিনিয়োগকারীরা বাজারের প্রতি আগ্রহী হবেন, যার উদাহরণ ওষুধ ও রসায়ন এবং ব্যাংক খাত। সম্প্রতি এ দুই খাতের শেয়ার কিছু বেশি দরে কিনতে দেখা যাচ্ছে। ফলে প্রতিনিয়তই এ দুই খাতের শেয়ারদর বাড়ছে। তা লেনদেন ও সূচক বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রাখছে।
গতকাল ডিএসইতে মোট ৩৮টি কোম্পানির শেযারদর বাড়তে দেখা যায়। দিন শেষে প্রধান সূচক বাড়তে দেখা যায় সাত পয়েন্ট। লেনদেন শেষে সূচক স্থির হয় তিন হাজার ৯৮৯ পয়েন্টে।
এদিকে ব্যাংক হলিডের কারণে আজ উভয় পুঁজিবাজার বন্ধ থাকবে। ব্যাংকের সঙ্গে পুঁজিবাজারের লেনদেনের সম্পর্ক রয়েছে। সে কারণে প্রতি বছর এই দিনে পুঁজিবাজার বন্ধ থাকে। আগামীকাল যথারীতি ১০টায় লেনদেন শুরু হবে।