করোনাভাইরাস মহামারি চলাকালে দীর্ঘদিন পরে পুঁজিবাজার খোলা হলেও লেনদেন খরা কাটছে না। পাশাপাশি প্রতিনিয়ত নিন্মমুখী হচ্ছে পুঁজিবাজারের সূচক।
বাজার চিত্র লক্ষ্য করলে দেখা যায়, পুঁজিবাজার খোলার পর গতকালসহ মোট লেনদেন হয়েছে চার কার্যদিবস। এর মধ্যে কোনো দিনই লেনদেন ২০০ কোটি টাকা অতিক্রম করেনি।
প্রথম কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১৪৩ কোটি টাকার শেয়ার ও ইউনিট। পরের কার্যদিবসে বিনিয়োগকারীদের মাঝে আবারও লকডাউন বাড়ছে এমন গুজব ছড়ায়, যা পরিপ্রেক্ষিতে ওইদিন বিক্রয় চাপ বাড়ে। ফলে লেনদেন কিছুটা বেড়ে হয় ১৯৭ কোটি টাকা। পরের কার্যদিবসে লেনদেন নেমে এসেছে ১৫৫ কোটি টাকায়। গতকাল তা ১৫২ কোটি টাকায় নেমে আসে।
এদিকে লেনদেন শুরুর প্রথম কার্যদিবস ছাড়া প্রতিদিনই সূচক কমতে দেখা গেছে। প্রথমদিন ডিএসইর প্রধান সূচক বাড়ে ৫২ পয়েন্ট এতে কিছুটা আশাবাদী হয়ে উঠেছিলেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। কিন্তু পরের কার্যদিবসেই বাজারের ছন্দপতন ঘটে। সূচক বৃদ্ধি পাওয়ার বদলে ৬২ পয়েন্ট বা দেড় শতাংশের কমে যায়। পরের কার্যদিবসে ২৯ পয়েন্ট সূচক কমে দাঁড়ায় তিন হাজার ৯৬৯ পয়েন্টে।
এদিকে গতকালও সূচকের পতন ঘটে ছয় পয়েন্ট। প্রতিদিনের মতো গতকাল সকালে লেনদেনের শুরুতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা যায়। পরবর্তীতে সূচক নিন্মমুখী হয়ে সারাদিন এভাবেই চলতে থাকে। দিন শেষে সূচকের অবস্থান হয় তিন হাজার ৯৬৩ পয়েন্টে।
অন্যদিকে গতকাল টাকার অঙ্কে লেনদেনে এগিয়ে ছিল ওষুধ খাতের কোম্পানি। মূলত একটি কোম্পানির ওপর নির্ভর করেই খাতটি লেনদেনে এগিয়ে যায়। মোট লেনদেনে এ খাতের রেনেটার প্রায় ১০০ কোটি টাকার (৯৯ কোটি ৯১ লাখ টাকা) শেয়ার ব্লক মার্কেটে লেনদেন হয়েছে। তবুও পুঁজিবাজারে লেনদেন ও সূচক বাড়েনি।
আগের কার্যদিবসের মতো এদিনও লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম অপরিবর্তিত থাকে। তবে যে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে, কমেছে তার থেকে বেশি। ফলে সূচকের পতন হয়েছে।
খাতভিত্তিক লেনদেনে চোখ রাখলে দেখা যায়, ওষুধ খাতের পরের অবস্থানে ছিল ব্যাংক খাত। অন্যদিনের তুলনায় এ খাতের শেয়ারে বিনিয়োগকারীদের ঝোঁক লক্ষ্য করা যায়। পরের অবস্থানে ছিল প্রকৌশল খাতের শেয়ারের। আগের কার্যদিবসের মতো গতকাল সকাল থেকে এ খাতের কোম্পানিতে বিনিয়োগকারীদের ভিড় লক্ষ্য করা যায়।
প্রকৌশল খাতের পরের অবস্থানে দেখা যায় বিমা খাতের কোম্পানির শেয়ারের আগ্রহ। তবে গত কয়েকদিনের মতো গতকালও লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ শেয়ার ইউনিটের দর অপরিবর্তিত ছিল।
অন্যদিকে গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচকের মতো অপর সূচকগুলোও নিন্মমুখী দেখা যায়। এদিন ডিএসইতে মোট ৩১১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ারদর বেড়েছে ১৬টির বা চার শতাংশের কিছু বেশি, শেয়ারদর কমেছে ৪৩টির বা ১৯ শতাংশের এবং ২৫২টির শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত ছিল।
এদিকে অন্য তিন দিনের মতো গতকালও ব্রোকারেজ হাউসগুলো ছিল বিনিয়োগকারী শূন্য। সংশ্লিষ্টরা বলছেন মূলত করোনাভাইরাস আতঙ্কেই বিনিয়োগকারীরা হাউসে আসছে না। কারণ বেশিরভাগ মানুষই এখনও গণপরিবহন এড়িয়ে চলছেন।