করোনাভাইরাস চিকিৎসায় যুক্ত সব চিকিৎসককে মাত্র এক টাকায় প্রতি মাসে ৩০ জিবি (গিগাবাইট) ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ করে দিচ্ছে গ্রামীণফোন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সার্টিফায়েড ২৫ হাজার চিকিৎসক আগামী ছয় মাস প্রায় ফ্রি এই ইন্টারনেট সুবিধা পাবেন।
এর মধ্য দিয়ে করোনাভাইরাস চিকিৎসকদের পাশে ভিন্নভাবে দাঁড়িয়েছে দেশের সবচেয়ে বড় মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোন। চিকিৎসকদের পাশাপাশি সাধারণ গ্রাহক এবং গ্রামীণের কার্ড ও রিচার্জ ব্যবসায় যুক্তদেরকেও নানা সুবিধা দেবে প্রতিষ্ঠানটি। এর আওতায় সাধারণ গ্রাহককে ১০ কোটি মিনিট ফ্রি ব্যবহারের সুযোগ দেওয়া হবে।
নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারি মোকাবেলার সুবিধায় এসব উদ্যোগ নিয়েছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত এই কোম্পানি। সব মিলিয়ে করোনা মোকাবেলায় গ্রামীণফোনের সহায়তার পরিমাণ দাঁড়াবে ১০০ কোটি টাকা।
আজ শুক্রবার বিকেলে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানিয়েছেন গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসির আজমান।
এতে জানানো হয়, করোনা চলাকালে সব গ্রাহক গ্রামীণফোনের সাপ্তাহিক ইন্টারনেট প্যাকেজে একই মূল্যে দ্বিগুণ ভলিউম তথা ১০০ ভাগ বোনাস পাওয়া যাবে। তবে গ্রামীণফোন অ্যাপ ব্যবহারকারীরাই কেবল এই সুবিধা পাবে।
আর ভয়েস কলের ক্ষেত্রে সকাল ৮টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত ৪৮ পয়সা মিনিটে যেকোনো অপারেটরের নাম্বারে কথা বলা যাবে।
এ ছাড়া এপ্রিল মাসে রিচার্জ করতে পারেননি বা যাদের ব্যালান্স নাই বললেই চলে এমন এক কোটি গ্রাহককে ১০ মিনিট করে মোট ১০ কোটি মিনিট ফ্রি দেবে গ্রামীণফোন।
করোনা অর্থ লেনদেনে সমস্যা হয় হলে গ্রামীণফোনের রিচার্জ কার্ড ও ফ্লেক্সিলোডের ডিলারদের ১০ কোটি টাকা পর্যন্ত বাকি সুবিধা দেবে কোম্পানিটি।
এ ছাড়া গ্রামীণফোনের যেসব গ্রাহক নানা ধরনের ক্ষুদ্র ব্যবসায় যুক্ত তাদের জন্যে কিছুদিনের মধ্যেই নতুন কিছু অফার নিয়ে আসবে তারা।
সংবাদ সম্মেলনে গ্রামীণফোনের প্রধান বিপনন কর্মকর্তা সাজ্জাদ হাসিব, প্রধান যোগাযোগ কর্মকর্তা খায়রুল বাসার অংশ নেন।
এসব উদ্যোগের পাশাপাশি, দেশের অতিদরিদ্র জনগোষ্ঠীকে সহায়তায় গ্রামীণফোন ব্র্যাকের সঙ্গে যৌথ প্রচেষ্টা ‘ডাকছে আমার দেশ‘ উদ্যোগের কার্যক্রম চালিয়ে যাবে। এ কার্যক্রমে গ্রামীণফোন এরইমধ্যে এক লাখ পরিবারকে ১৫ কোটি টাকার খাদ্য সহায়তা দিয়েছে গ্রামীণফোন। এ ছাড়া করোনা মোকাবেলায় চিকিৎসক ও সাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্ধারিত হাসপাতালে ৫০ হাজার প্রফেশনার পিপিই দিয়েছে গ্রামীণফোন।
সংবাদ সম্মেলনে গ্রামীণফোনের সিইও ইয়াসির আজমান বলেন, দেশের জন্য কাজ করতে গিয়ে আমাদের আগে কখনও এমন সংকটপূর্ণ অবস্থার মুখোমুখি হতে হয়নি। এমন একটি সঙ্কট আসবে এবং সেটি এভাবে আমাদের জীবনকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে, সেটা কেউই চিন্তা করতে পারেনি। তাই এখন সময় সবাই এক সঙ্গে এর মোকাবেলা করা।
‘ধৈর্য, বোঝাপড়া, সহানুভূতি নিয়ে আমাদের একত্রিত হয়ে কাজ করতে হবে। এটা আমাদের সবার জন্য একটি পরীক্ষা এবং আমার বিশ্বাস, একতাবদ্ধ হওয়ার মাধ্যমে এ চলমান সঙ্কট মোকাবিলা করা সম্ভব। কভিড-১৯ মোকাবেলায় সরকারি নানা কর্তৃপক্ষ, উন্নয়ন সংস্থাসহ সামগ্রিকভাবে শিল্পখাতের সম্মিলিত প্রচেষ্টা আমাকে সত্যিকারভাবে উৎসাহিত করেছে’, যোগ করেন ইয়াসির আজমান।
শেয়ারবার্তা / মিলন