করোনাভাইরাসের কারণে ব্যাপক ক্ষতির মুখে দেশের সিমেন্ট শিল্পখাত। খাত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, সরকার ঘোষিত লকডাউন শুরু হওয়ার পর থেকে সিমেন্ট কারখানাগুলোতে ৯০ ভাগ উৎপাদন বন্ধ। অথচ পরিচালন খরচ কমেনি। তা ছাড়া সিমেন্টের কাঁচামাল শতভাগ আমদানি নির্ভর হওয়ায় এ পর্যন্ত যত এলসি খোলা হয়েছে, সেটিও মালিকদের জন্য বোঝার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এমন কঠিন পরিস্থিতিতে এ শিল্প বাঁচাতে সরকারের সহায়তা চেয়েছে বাংলাদেশ সিমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএমএ)। সংগঠনটির পক্ষে এর প্রেসিডেন্ট ও ক্রাউন সিমেন্ট গ্রুপের ভাইস-চেয়ারম্যান মো. আলমগীর কবির মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে এ সহায়তা চেয়েছেন। তিনি এই শিল্প খাতটিকে বাঁচিয়ে রাখতে এই শিল্পের সব কাঁচামালের আমদানি শুল্ক ও অগ্রিম আয়কর বিবেচনার আবেদন জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে আলমগীর কবির বলেন, লকডাউনের কারণে সিমেন্ট কারখানাগুলোতে ৯০ ভাগ উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। অথচ শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা দিতে হচ্ছে। এর সঙ্গে অন্যান্য নিয়মিত খরচও প্রতিনিয়ত চালাতে হচ্ছে। ব্যাংক থেকে নেওয়া চলতি মূলধন ও প্রজেক্ট মূলধনী যন্ত্রপাতির জন্য নেওয়া ঋণের সুদ ও আসল চক্রবৃদ্ধি হারে বেড়েই যাচ্ছে। ফলে উৎপাদন বন্ধ থাকলেও অবচয় হিসাব বন্ধ থাকছে না।
আরেকটি সমস্যা হলো কাঁচামাল বহনকারী নৌজাহাজ গন্তব্যে আসার চার দিনের মধ্যে খালি বা আনলোড করতে হবে। না হলে উচ্চ হারে বিলম্বজনিত জরিমানা বা মাশুল দিতে হবে। সমুদ্রগামী জাহাজের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক নৌ আইন অনুযায়ী সমুদ্রগ্রামী জাহাজগুলোকেও বিলম্বজনিত মোটা অংকের মাশুল দিতে হবে। তা দিতে হবে বৈদেশিক মুদ্রায়। এখন এগুলো ঝুলে থাকার মতো অবস্থা তৈরি হয়েছে যার সমাধান জানা নেই।
তাই বর্তমান পরিস্থিতিতে এই শিল্প রক্ষায় কাঁচামাল আমদানি শুল্ক ও অগ্রিম আয়কর যা চূড়ান্ত দায়, তা স্থগিত করার জন্য সরকার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আলমগীর কবির। একই সঙ্গে গ্যাস বিল-বিদ্যুত বিল ও অন্যান্য কর প্রদানের ক্ষেত্রে জুলাই থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে পর্যায়ক্রমে পরিশোধের সুযোগ তৈরি করে দেওয়ার অনুরোধ করেছেন। এই সুবিধা পেলে শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন তিনি।
শেয়ারবার্তা / আনিস