পুঁজিবাজারে টানা পতনের প্রেক্ষিতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের দরের ক্ষেত্রে সার্কিট ব্রেকারে নিম্নসীমা নির্ধারণ করে দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এর ফলে এখন থেকে একটি নির্দিষ্ট দরের নিচে কোনো শেয়ারের দাম পড়বে না এবং লেনদেনও করা যাবে না। এতে একটি নির্দিষ্ট সীমার নিচে পুঁজিবাজারের সূচকেরও পতন হবে না। মূলত লাগামহীন দরপতন ঠেকাতেই সাময়িক ব্যবস্থা হিসেবে গতকাল থেকে সার্কিট ব্রেকারের নিম্নসীমা নির্ধারণ করে দিয়েছে বিএসইসি। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এটি বলবৎ থাকবে।
নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এম খায়রুল হোসেন স্বাক্ষরিত সার্কিট ব্রেকারের নিম্নসীমা নির্ধারণ সংক্রান্ত নির্দেশনায় বলা হয়েছে, সরকারের প্রত্যক্ষ নির্দেশে কমিশন পুঁজিবাজার ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেনের ক্ষেত্রে শেয়ারের দর ওঠানামা নিয়ন্ত্রণে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা জারি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। চলতি বছরের ১৯ মার্চের আগের পাঁচ কার্যদিবসে কোনো তালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজের সমাপনী মূল্যের গড়কে সেই সিকিউরিটিজের প্রারম্ভিক মূল্য হিসেবে নির্ধারণ করতে হবে। আর এই গড় মূল্যকে ফ্লোর প্রাইস ও সার্কিট ব্রেকারের নিম্নসীমা হিসেবে গণ্য করা হবে। সার্কিট ব্রেকারের ঊর্ধ্বসীমাসহ বিএসইসির এ-সংক্রান্ত আগের নির্দেশনা অন্য শর্তাবলী অপরিবর্তিত থাকবে।
সার্কিট ব্রেকারের নতুন নিয়ম অনুসারে, যদি একটি কোম্পানির শেয়ারের সমাপনী মূল্য এ বছরের ১৯ মার্চের আগের পাঁচ কার্যদিবসে যথাক্রমে ১০, ১১, ১২, ১৩ ও ১৪ টাকা হয়, তাহলে এর গড় মূল্য দাঁড়াবে ১২ টাকা। নতুন নিয়ম অনুসারে গতকাল লেনদেন শুরুর সময় শেয়ারটির প্রারম্ভিক দর ছিল ১২ টাকা। তাহলে ১২ টাকার নিচে কেউ শেয়ারটি লেনদেন করতে পারবে না এবং ১২ টাকার নিচে শেয়ারটির দরও নামবে না। এমনকি বিএসইসির নির্দেশনা যতদিন বলবৎ থাকবে, ততদিন পর্যন্ত শেয়ারটির দর ১২ টাকার নিচে নামবে না। এতে সার্বিকভাবে পুঁজিবাজারের সূচকও একটি নির্দিষ্ট সীমার নিচে নামবে না। যেমন গতকাল লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৯৭৫ পয়েন্টে। এর আগের পাঁচ কার্যদিবসে সূচকটির অবস্থান ছিল ৩ হাজার ৬০৪, ৩ হাজার ৭৭৩, ৩ হাজার ৯৬৯, ৪ হাজার ১৩০ ও ৪ হাজার ২৩১ পয়েন্টে। পাঁচ কার্যদিবসে সূচকটির গড় অবস্থান দাঁড়ায় ৩ হাজার ৯৪১ পয়েন্ট। গতকাল সার্কিট ব্রেকারের নিম্নসীমার ওপরেও অনেক কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। সেগুলোর কারণে সূচকে যে পয়েন্ট যোগ হয়েছে, সেটি বাদ দিলেও ডিএসইএক্স ৩ হাজার ৮০০ পয়েন্টের নিচে নামবে না বলে জানিয়েছেন বিএসইসির কর্মকর্তারা।
শেয়ারবার্তা / আনিস