করোনাভাইরাসের আতঙ্কে বিশ্বের পুঁজিবাজারে বড় ঝড় চলছে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থা সবচেয়ে শোচনীয়। দেশটির বাজারে সোমবার ভয়ানক দরপতন হয়েছে। ১৯৮৭ সালের পর এমন তীব্র দরপতনের ঘটনা আর ঘটেনি।
গতকালও দেশটির বাজারে তীব্র পতনে সূচক সার্কিটব্রেকার স্পর্শ করলে লেনদেন সাময়িকভাবে বন্ধ (Trade Halt) হয়ে পড়ে। নিয়ম অনুসারে, ১৫ মিনিট পর লেনদেন শুরু হয়। গত এক সপ্তাহে এটি ছিল লেনদেন বন্ধ হয়ে পড়ার তৃতীয় ঘটনা।
ট্রেড হল্টের পর ফের লেনদেন শুরু হলে পতনের তীব্রতা একটু কমে আসে, তবে তা একেবারে বন্ধ হয়নি। দিনশেষে ডাও জোন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল এভারেজ সূচক ১২ দশমিক ৯ শতাংশ কমে ২০ হাজার ১৮৮ পয়েন্টে নেমে আসে। এটি ২০১৭ সালের পর এই সূচকের সর্বনিম্ন অবস্থান।
গতকালের বড় দর পতনের মধ্য দিয়ে যেন ৩৩ বছর পর যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ফিরে আসে এক ‘কালো সোমবার’।
উল্লেখ, ১৯৮৭ সালের ১৯ অক্টোবর বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার প্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রের পুঁজিবাজারে ভয়াবহ দরপতন হয়। সেদিন ওই বাজারের ডাও জোন্স সূচক সূচক ২২ দশমিক ৬ পয়েন্ট কমে যায়। এটি এখন পর্যন্ত এই সূচকের সর্বোচ্চ পতন।
ডাও জোন্সে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দরপতন হয়েছিল ১৯২৯ সালে মহামন্দার সময়ে। কালকের পতনটি ছিল তৃতীয় সর্বোচ্চ পতন।নিউইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জের ব্রড ইনডেক্স এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সোমবার ১১ দশমিক ৯৮ পয়েন্ট এবং নাসডাক ১২ দশমিক ৩২ পয়েন্ট কমেছে।
করোনার প্রভাব থেকে পুঁজিবাজারকে রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ রেপোর সুদের হার শূণ্যে নামিয়ে আনার ঘোষণা দেয়। এছাড়া ৫০০ বিলিয়ন ডলারের বিশেষ তহবিলেরও ঘোষণা দেওয়া হয়। কিন্তু তাতেও আস্থা ফেরেনি বিনিয়োগকারীদের।
বিশ্লেষকদের মতে, অভ্যন্তরীন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা (Travel Ban) আরোপ, চীনের অর্থনীতিতে করোনার তীব্র প্রভাবের তথ্য-উপাত্ত প্রকাশ, যুক্তরাষ্ট্রে বিপুল সংখ্যক মানুষের চাকরি হারানোর আশংকা এবং সম্ভাব্য বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার বিষয়টি বিনিয়োগকারীদের ভীতসন্ত্রস্ত করে তুলেছে। সোমবারের বাজারে ছিল এই আতঙ্কের প্রভাব।
শেয়ারবার্তা / আনিস