বিভিন্ন ব্যাংকের ঋণ খেলাপিদের গ্রেফতার, বিদেশে পাচার করা টাকা দেশে ফিরিয়ে আনাসহ আর্থিক খাতে সুশাসন নিশ্চিতের ব্যাপারে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা যেতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তবে এ ট্রাইব্যুনালটি অন্য ট্রাইব্যুনালের মতো খুব সহজ নয় বলেও জানান তিনি।
শুক্রবার (৬ মার্চ) বেলা ১১টায় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে (বিএফডিসি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগ প্রতিষ্ঠার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতার গ্র্যান্ড ফাইনাল ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
‘ব্যাংক কমিশন গঠন আর্থিক খাতে সুশাসন নিশ্চিত করবে’ বিষয়ে আয়োজিত এ বিতর্ক অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্র্যাসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক রিয়াজুর রহমান চৌধুরী এবং অ্যাকাউন্টিং অ্যালামনাইয়ের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ তোফায়েল আহমেদ।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘এ ধরনের ট্রাইব্যুনাল গঠন করা একটু কঠিন কাজ কেননা এটি সম্পূর্ণ আলাদা সেক্টর। তবে অচিরেই যেন ঋণখেলাপিদের বিচার সম্ভব হয় সেটা নিয়ে সরকার কাজ করছে, কারণ এগুলো আমাদেরই অর্থ এবং আমাদের উন্নয়নে তা ফিরিয়ে আনতে হবে। এখানে আপসের কোন জায়গা নেই। তবে বিভিন্ন আইনি জটিলতার কারণে এ ধরনের কার্যক্রমে একটু সময়ের প্রয়োজন হয়।’
তিনি বলেন, ‘সঙ্গত কারণেই ব্যাংকের দুর্নীতিগুলো এখন আলোচনার বিষয়। গত চার দশকে যে চালচিত্র ব্যাংকগুলোতে দেখা গেছে তা গর্ববোধ করার মতো নয়। তবে বর্তমান সরকার বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়ায় একটু উন্নতি হয়েছে। এ সেক্টরে উন্নয়নের জন্য আরও গবেষণা প্রয়োজন এবং প্রধানমন্ত্রীও সেদিকেই নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা চাই তরুণ প্রজন্ম আমাদের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করুক।’
অতিথিরা বলেন, ‘আমাদের ব্যাংক ব্যবস্থার সংস্কার প্রয়োজন সেটি কোনো কমিশন গঠনের মাধ্যমে হোক বা সংসদের মাধ্যমে হোক বা অন্য কোনোভাবে। সরকার আন্তরিক হলে কমিশন কোনো বিষয় নয়। আমরা আশাবাদ, ভালো কিছু হবে।’
সভাপতির বক্তব্যে হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, ‘খেলাপি ঋণের লাগাম টেনে ধরে আর্থিক খাতে সুশাসন নিশ্চিত করতে স্বাধীন কমিশন গঠন করতে পারাটা হবে সরকারের জন্য একটি সাহসী পদক্ষেপ। গত এক দশকে অর্থনীতিতে সরকারের অনেক সফলতা থাকলেও ব্যর্থতার তালিকাটাও ছোট নয়। বিশেষ করে একের পর এক ঋণ কেলেঙ্কারি, অর্থ আত্মসাৎ, রিজার্ভ চুরি, বেসিক ব্যাংকের জালিয়াতি, ফারমার্স ব্যাংকের পতন, খেলাপি ঋণের আকার বৃদ্ধি, পুঁজিবাজারের কারসাজি, চিহ্নিত খেলাপিদের বারবার সুযোগ দেওয়া ইত্যাদি কলঙ্কিত ঘটনা আর্থিক খাতকে ব্যাপক দুর্বল করে ফেলেছে।’
বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশ নেন অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের শিক্ষার্থীরা। প্রতিযোগিতায় সরকারি দলকে পরাজিত করে বিরোধী দল চ্যাম্পিয়ন হয়। প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন ও রানারআপ দলকে যথাক্রমে এক লাখ ও ৫০ হাজার টাকাসহ ক্রেস্ট ও সনদপত্র দেওয়া হয়েছে।
শেয়ারবার্তা / আনিস