1. [email protected] : শেয়ারবার্তা প্রতিবেদক : শেয়ারবার্তা প্রতিবেদক
  2. [email protected] : শেয়ারবার্তা : nayan শেয়ারবার্তা
  3. [email protected] : news uploder : news uploder
১৬০০ কোটি টাকা লুট করেছে পিকে হালদার
শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৯ এএম

১৬০০ কোটি টাকা লুট করেছে পিকে হালদার

  • আপডেট সময় : মঙ্গলবার, ৩ মার্চ, ২০২০

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডের (আইএলএফএসএল) সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকার ঋণ থেকে ১৬০০ কোটি টাকা লুট করা হয়েছে। এটি করেছেন পিকে হালদার (প্রশান্ত কুমার হালদার) নামের এক ব্যক্তি ও তার দল।

টাকা লুটের পর তিনি কানাডা চলে গেছেন। ধারণা করা হচ্ছে, ওই টাকা পাচার হয়ে গেছে কানাডাতেই। প্রতিষ্ঠানটি থেকে সদ্য পদত্যাগ করা চেয়ারম্যান খন্দকার ইব্রাহিম খালেদ এসব কথা জানিয়েছেন।

এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খন্দকার ইব্রাহিম খালেদকে হাইকোর্টের নির্দেশে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডের (আইএলএফএসএল) চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিলো। ২৫ দিন দায়িত্ব পালনের পর তিনি গতকাল সোমবার স্বাস্থ্যগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেন।

খন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, শুধু টাকাই লুট করেন নি পিকে হালদার। প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজমেন্টকে নিজেদের মতো করে সাজিয়ে দখলে নিয়েছিলেন তিনি।
গত ২৫ তারিখ (ফেব্রুয়ারি) আইএলএফএসএল এর ভেতরের অবস্থা সম্পর্কে মাননীয় প্রধান বিচারপতির কাছে প্রতিবেদন দিয়েছেন তিনি।

তিনি বলেন, ব্যাংকিং বা ম্যানেজমেন্ট সমস্যা হলে আমরা আমাদের অভিজ্ঞতা দিয়ে সেটা সারিয়ে তুলতে পারি। যেমন, ২০০০ সালের প্রথম দিকে পূবালী ব্যাংক রুগ্ন ব্যাংক হয়ে গিয়েছিলো। আমি জয়েন করে সেটাকে একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছিলাম। কিন্তু, আইএলএফএসএল সে ধরনের না। এখানকার সমস্যা ব্যাংকিংয়েরও না, ম্যানেজমেন্টেরও না। এখানকার সমস্যা হলো- টাকা লুট করে নেয়া হয়েছে। এখানে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকার লোন থেকে ১৬০০ কোটি টাকা লুট করা হয়েছে। এটি করেছে পিকে হালদার নামের এক ব্যক্তি ও তার গ্রুপ।

অথনীতিবিদ ইব্রাহিম খালেদ বলেন, ২০১৫ সালের দিকে আইএলএফএসএল এর চেয়ারম্যান হিসেবে মাহবুব জামিল ছিলেন। তিনি একজন ভালো চেয়ারম্যান ছিলেন। তখন এটি একটি প্রথম সারির অরগানাইজেশন ছিল। পিকে গ্রুপ তাকে সেখান থেকে বের করে দিয়ে সংস্থাটি দখল করে। এর বোর্ড ও ম্যানেজমেন্ট বদলে ফেলে। সেখানে নিজস্ব লোকজন বসায়। তারপর সেখান থেকে ১,৬০০ কোটি টাকা লুট করে নিয়ে যায়।

সে (পিকে হালদার) কানাডা চলে গেছে। ধারণা করা হচ্ছে টাকা কানাডায় পাচার হয়ে গেছে। লুট করা টাকা যদি দেশের বাইরে চলে যায় তাহলে তা ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক)। আমাদের মতো সাধারণ লোকের পক্ষে এটা সম্ভব না।

তিনি বলেন, এসব বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক হলো রেগুলেটর। আদালত তো রেগুলেটর না। আদালত হয়তো আমাকে দিয়েছিলেন ভালো উদ্দেশ্য নিয়ে। আমি সেখানে ক্ষমতাহীন চেয়ারম্যান ছিলাম। সেজন্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের স্টেপিং করা দরকার। আমি মনে করি, বাংলাদেশ ব্যাংক যদি সেখানে প্রশাসক নিয়োগ করে এবং দুদককে দিয়ে (টাকা লুটের বিষয়ে) তদন্ত করায় তাহলে সেটিই সঠিক পদক্ষেপ হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক এই ডেপুটি গভর্নর বলেন, আমি এখানে চেয়ারম্যান হিসেবে ২৫ দিন ছিলাম। এর ভেতরের কথা কেউ আমাকে বলেনি। এটা আমাকে বাংলাদেশ ব্যাংকে গিয়ে আবিষ্কার করতে হয়েছে।

ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদার ১ হাজার ৫৯৬ কোটি টাকা নিয়ে কানাডায় পালিয়ে গেছেন। তবে সরকার উদ্যোগ নিলে তাকে এবং ওই টাকা দেশে ফেরত আনা সম্ভব হবে বলে মনে করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের কৌসুলি ব্যারিস্টার তানজীব উল আলম।

প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে হঠাৎ করেই চারটি ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের (এনবিএফআই) মালিকানায় পরিবর্তন আসে। প্রথমে আড়ালে থাকলেও পরে পিকে হালদার ও তার নামসর্বস্ব কয়েকটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিকানায় যুক্ত হয়।

এর কয়েক বছরের মধ্যে ঋণের নামে চারটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকেই হাজার কোটি টাকা বের করে নেয়া হয়। এ কারণে চারটি প্রতিষ্ঠানই এখন ধুঁকছে। ইতিমধ্যে একটি প্রতিষ্ঠানকে দেউলিয়া ঘোষণা করা হয়েছে। বাকি তিনটিও গ্রাহকদের টাকা ফেরত দিতে পারছে না।

ঋণের নামে শুধু ব্যাংক লুট নয়, অভিনব উপায়ে মূল্যবান সরকারি সম্পত্তিও হাতিয়ে নিয়েছেন এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক এমডি পিকে হালদার (প্রশান্ত কুমার হালদার)। জাল দলিল তৈরি থেকে শুরু করে রেজিস্ট্রেশনের প্রতিটি ধাপে তাকে সহায়তা করেন খোদ ভূমি অফিসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

এছাড়া আদালতের দুর্নীতিবাজ কর্মচারী ও স্থানীয় দখলবাজ চক্র বাড়তি সুবিধা পেয়ে হাত মেলায় পিকে হালদারের সঙ্গে। অনেকটা অবিশ্বাস্য হলেও যাদের একজনের ব্যাংক হিসাবে মিলেছে ২৬ কোটি টাকা। রাজধানীর অদূরে রূপগঞ্জে জমি হাতিয়ে নেয়ার এ ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্থার তদন্তে বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর নানা তথ্য।

শেয়ারবার্তা / আনিস

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:

ভালো লাগলে শেয়ার করবেন...

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ