বড় দরপতনের পর ঘুরে দাঁড়িয়েছে বিশ্বের পুঁজিবাজার। গত সপ্তাহে ব্যাপক দরপতনের পর গতকাল সোমবার সূচক বাড়তে দেখা যায় বেশির ভাগ পুঁজিবাজারেই। যুক্তরাষ্ট্রের পুঁজিবাজারের ডাও জোন্স সূচক গতকাল লেনদেন শেষে বাড়ে ১৩০০ পয়েন্ট বা ৫ দশমিক ১ শতাংশ। ওপর সূচক এসঅ্যান্ডপি ৫০০ বৃদ্ধি পায় ৪ দশমিক ৬ শতাংশ এবং নাসডাক বেড়েছে সাড়ে ৪ শতাংশ। একই সঙ্গে ইউরোপ ও এশিয়ার শেয়ারবাজারেও সূচক ঊর্ধ্বমুখী ছিল।
ঘুরে দাঁড়িয়েছে বিশ্বের পুঁজিবাজার। গত সপ্তাহে ব্যাপক দরপতনের পর গতকাল সোমবার সূচক বাড়তে দেখা যায় বেশির ভাগ শেয়ারবাজারেই। যুক্তরাষ্ট্রের পুঁজিবাজারের ডাও জোন্স সূচক গতকাল লেনদেন শেষে বাড়ে ১৩০০ পয়েন্ট বা ৫ দশমিক ১ শতাংশ। ওপর সূচক এসঅ্যান্ডপি ৫০০ বৃদ্ধি পায় ৪ দশমিক ৬ শতাংশ এবং নাসডাক বেড়েছে সাড়ে ৪ শতাংশ। একই সঙ্গে ইউরোপ ও এশিয়ার শেয়ারবাজারেও সূচক ঊর্ধ্বমুখী ছিল।
যুক্তরাজ্যের প্রধান পুঁজিবাজার লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জভিত্তিক এফটিএসই ১০০ সূচকটি গতকাল লেনদেন শেষে বাড়ে ১ দশমিক ২ শতাংশ। চীনের সাংহাই কম্পোজিট সূচক বাড়ে ৩ দশমিক ২ শতাংশ। জাপানের নিচেই সূচক বাড়ে ১ শতাংশ।
আজ মঙ্গলবারও এশিয়ার বেশির ভাগ শেয়ারবাজারে সূচক বাড়তে দেখা যাচ্ছে। বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
গত সপ্তাহে করোনাভাইরাস মহামারি নিয়ে উদ্বেগে বিশ্বব্যাপী শেয়ারবাজারগুলো প্রায় ৫ ট্রিলিয়ন ডলারের মূল্য হারায়। ২০০৮ সালের অর্থনৈতিক মন্দার পর এমনটা আর দেখেনি বিশ্ব শেয়ারবাজার। চীনের বাইরে ছড়িয়ে পড়ায় করোনাভাইরাসের প্রভাব নিয়ে বিনিয়োগকারীরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। এই মহামারির কারণে বেশ কয়েকটি দেশ ভ্রমণে সীমাবদ্ধতা এনেছে। বিভিন্ন বাজারে উৎপাদনে ঘাটতি এবং ক্রেতার চাহিদা হ্রাস পেয়েছে। সব মিলিয়ে পুঁজিবাজারেও ধস নামে। গতকাল সোমবার যুক্তরাজ্য জাপান ও ইউরোপের কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাজার স্থিতিশীল করতে বিবৃতি দেয়।
ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের মুখপাত্র জানান, আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতা রক্ষায় প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে এবং তা নিশ্চিত করতে ব্যাংক অভ্যন্তরীণ আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করছে।
ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক তার বিবৃতিতে জানায়, অর্থনীতি, মধ্যমেয়াদি মুদ্রাস্ফীতি এবং আর্থিক নীতির উন্নয়ন ও তার প্রভাব নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে তারা।
অন্যদিকে পুঁজিবাজারে সহায়তা করা হবে—এমনটা জানিয়ে গতকাল এক জরুরি বিবৃতি দেন ব্যাংক অব জাপানের গভর্নর হারুহিকো কুরোদা। পুঁজিবাজারে আস্থা ফেরাতে এর আগে এমন পদক্ষেপ খুব বেশি নিতে দেখা যায়নি জাপানের কেন্দ্রীয় ব্যাংককে। বিবৃতিতে বলা হয়, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পাওয়ায় অর্থনীতির কী গতি হতে পারে, এমন অনিশ্চয়তায় অভ্যন্তরীণ ও বৈশ্বিক বাজারগুলো অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে। গভর্নর বলেন, ব্যাংক অব জাপান উন্নয়নগুলো সাবধানতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করবে এবং বাজার কার্যক্রম স্থিতিশীল করতে সম্পদ ক্রয়ের মাধ্যমে পর্যাপ্ত তারল্য সরবরাহ করার চেষ্টা করবে।
এর আগে গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চেয়ারম্যান জেরোমি পাওয়েল এক বিবৃতিতে বলেন, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে মার্কিন অর্থনীতির ঝুঁকির বিষয়টি ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং প্রয়োজনে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে।
করোনাভাইরাসের প্রভাবে চলতি বছর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার কমতে পারে—বিভিন্ন সংস্থার এমন পূর্বাভাসের পর কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো বিবৃতি দিল।
গতকাল আন্তর্জাতিক সংস্থা অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ওইসিডি) জানায়, বছরের চলতি প্রান্তিকে বৈশ্বিক অর্থনীতি উল্লেখযোগ্য হারে সংকুচিত হতে পারে, যা এক দশক আগের বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার পর প্রথমবারের মতো অর্থনীতিতে বড় আকারের নিম্নমুখী প্রবণতা। বিশেষ এক প্রতিবেদনে ওইসিডি বলছে, বছরের বাকি সময়টা অর্থনীতির চাকা ঊর্ধ্বমুখী থাকবে এবং আগামী বছর নাগাদ ফের চাঙা হবে। ওইসিডি ২০২০ সালে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির অনুমিত পূর্বাভাস আধা শতাংশ কমিয়ে ২ দশমিক ৪ শতাংশ নির্ধারণ করেছে। আর ভাইরাসের সংক্রমণ আরও বেশি দিন দীর্ঘায়িত হলে ও আক্রান্ত দেশ, অঞ্চলের সংখ্যা বাড়লে প্রবৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ শতাংশ পর্যন্ত নেমে আসতে পারে বলে জানায় তারা।
শেয়ারবার্তা / আনিস