নিত্য প্রয়োজনীয় নয় ধরনের ভোগ্যপণ্য আমদানিতে সুদ হার সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ নির্ধারণ করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আজ সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রজ্ঞাপনে এ সুদ হার নির্ধারণ করে দিয়েছে। যা অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে জানানো হয়েছে। ভোগ্যপণ্যগুলো হলো-ভোজ্যতেল, ছোলা, ডাল, মটর, পেঁয়াজ, মসলা, খেজুর, ফলমূল এবং চিনি।
পাশাপাশি আমদানি ঋণপত্র খোলার ক্ষেত্রে মার্জিনের হার আগামী ৩০ মে পর্যন্ত ন্যূনতম পর্যায়ে রাখার ব্যাংকগুলোকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ক্রেডিট কার্ড ছাড়া সব ঋণে আগামী এপ্রিল থেকে সুদহার ৯ শতাংশ নির্ধারণ করে দেওয়া হলেও আমদানির ক্ষেত্রে তা এখন থেকেই কার্যকরের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড ছাড়া সব ধরনের ঋণে সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ সুদ নির্ধারণ করে দিয়েছে। ফলে ১ এপ্রিল থেকে সুদহার হবে সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ। কিন্তু লক্ষ্য করা যাচ্ছে, আসন্ন রমজান উপলক্ষে ব্যবসায়ীরা এখন হতেই নিত্য প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য আমদানি শুরু করেছেন। ফলে রমজানে ভোগ্যপণ্যের মূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ ও সহনীয় পর্যায়ে রাখার জন্য আমদানি অর্থায়নের সুদ হার কমানো প্রয়োজন। তাই এখন থেকেই ৯ ধরনের ভোগ্যপণ্য আমদানিতে সুদহার সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ নির্ধারণ করা হলো।
এর আগে গত ২ মার্চ এক প্রজ্ঞাপনে অবশেষে ক্রেডিট কার্ড ছাড়া সব ধরনের ঋণের সুদ হার ৯ শতাংশ বেঁধে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আগামী এপ্রিল থেকে নতুন সুদ হার কার্যকর হবে। এর ফলে নতুন ও পুরোনো সব ধরনের ঋণে সুদ হার হবে ৯ শতাংশ। তবে সুদ কমানোর পরও কোনো ঋণ খেলাপি হলে অতিরিক্ত ২ শতাংশ সুদ যুক্ত করা যাবে। এর ফলে ভালো গ্রাহক ও খেলাপি গ্রাহকদের ঋণের সুদ আলাদা নির্ধারণ করে দিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ব্যাংক কোম্পানি আইনের ৪৫ ধারা অনুযায়ী ‘জনস্বার্থে’ এ নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর মাধ্যমে ১৯৯০ সালের আগের ব্যাংক ব্যবস্থায় ফিরে গেল বাংলাদেশ ব্যাংক। ১৯৯১ সালে আর্থিক খাত সংস্কার কর্মসূচির মাধ্যমে সুদ হার বাজার ব্যবস্থার ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপর থেকে নির্দিষ্ট কিছু খাত ছাড়া সুদ হার বাজার ভিত্তিক ছিল।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনার ফলে আগামী এপ্রিল থেকে ব্যবসা-বাণিজ্যের পাশাপাশি ভোক্তা ঋণ, এসএমই খাত, আবাসনসহ সব ধরনের ঋণের সুদ হার কমে আসবে। বর্তমানে যেসব ঋণের সুদ হার ৯ শতাংশের বেশি রয়েছে, আগামী এপ্রিল থেকে তাও কমে আসবে। বর্তমানে অনেক ঋণে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত সুদ কার্যকর রয়েছে। নতুন নির্দেশনার ফলে এসএমই খাতের উৎপাদন শিল্পের ঋণ যাতে কমে না আসে, এ জন্য উৎপাদন শিল্পের ঋণের স্থিতি গত তিন বছরের গড় হারের চেয়ে কোনোভাবেই কম হবে না বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
শেয়ারবার্তা / মিলন