1. [email protected] : শেয়ারবার্তা প্রতিবেদক : শেয়ারবার্তা প্রতিবেদক
  2. [email protected] : শেয়ারবার্তা : nayan শেয়ারবার্তা
  3. [email protected] : news uploder : news uploder
র্নিরীক্ষক নিয়োগে বড় অনিয়ম করেছে অ্যাডভেন্ট ফার্মা
মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:২৫ এএম

র্নিরীক্ষক নিয়োগে বড় অনিয়ম করেছে অ্যাডভেন্ট ফার্মা

  • আপডেট সময় : সোমবার, ২ মার্চ, ২০২০
advent

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ওষুধ খাতের কোম্পানি অ্যাডভেন্ট ফার্মা লিমিটেড র্নিরীক্ষক নিয়োগ ও করপোরেট সুশাসন কোড পরিপালনে অনিয়ম করেছে। আর্থিক প্রতিবেদন তদারককারী প্রতিষ্ঠান ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিল (এফআরসি) কোম্পানিটির এসব অনিয়ম উদ্ঘাটন করেছে। এরই মধ্যে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে (বিএসইসি) চিঠি দিয়েছে এফআরসি।

এফআরসি পুনরীক্ষণ বিভাগ অ্যাডভেন্ট ফার্মার বার্ষিক প্রতিবেদন, বার্ষিক সাধারণ সভার (এজিএম) কার্যবিবরণী ও বোর্ড অডিট কমিটি সভার কার্যবিবরণী নিরীক্ষণ করে বেশকিছু গুরুতর অনিয়ম পেয়েছে। এসব অনিয়মের মধ্যে রয়েছে বহির্নিরীক্ষক নিয়োগে অনিয়ম, করপোরেট সুশাসন পরিপালনে ব্যর্থতা, প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে প্রাপ্ত অর্থ ব্যবহারের বিষয়ে ব্যাখ্যা না দেয়া এবং করপোরেট গভর্ন্যান্স কমপ্লায়েন্স অডিটর কর্তৃক অসমর্থিত কমপ্লায়েন্ট সার্টিফিকেট প্রদান।

২০১৮ সালের ৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত অ্যাডভেন্ট ফার্মার এজিএমে কেএম হাসান অ্যান্ড কোম্পানিকে ২০১৮-১৯ হিসাব বছরের জন্য বহির্নিরীক্ষক হিসেবে নিয়োগের বিষয়টি অনুমোদন করা হয়। অথচ ২০১৮-১৯ হিসাব বছরের আর্থিক প্রতিবেদন পরীক্ষা করে এফআরসি দেখতে পায় এক্ষেত্রে নিরীক্ষা প্রতিবেদনে স্বাক্ষর করেছে অন্য আরেকটি চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস ফার্ম আহমেদ জাকির অ্যান্ড কোম্পানি। এ বিষয়ে কোম্পানির কাছে ব্যাখ্যা তলব করা হলে তারা জানায়, এজিএমে নিয়োগ করা নিরীক্ষক কেএম হাসান অ্যান্ড কোম্পানি নিরীক্ষা কার্যক্রম শেষ না করেই এ কাজ থেকে ইস্তফা দিয়েছে। এ কারণে গত বছরের ২৪ মার্চ অনুষ্ঠিত পর্ষদ সভায় নতুন বহির্নিরীক্ষক হিসেবে আহমেদ জাকির অ্যান্ড কোম্পানিকে ২০১৮-১৯ হিসাব বছরের জন্য নিয়োগ দেয়া হয়। কিন্তু কোম্পানিটির সভার কার্যবিবরণী পরীক্ষা করে এফআরসি দেখতে পায় যে এক্ষেত্রে নিরীক্ষক নিয়োগের বিষয়ে অডিট কমিটির সুপারিশের কথা উল্লেখ করা হয়নি। যদিও গত বছরের ২৭ এপ্রিল অনুষ্ঠিত অডিট কমিটির সভায় নিরীক্ষকের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। করপোরেট গভর্ন্যান্স কোড অনুসারে নিরীক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে অডিট কমিটি যাচাই-বাছাই করে নিয়োগের সুপারিশ করার আগেই কোম্পানির পর্ষদ নিয়মবহির্ভূতভাবে আহমেদ অ্যান্ড জাকির কোম্পানিকে নিয়োগ দিয়েছে। এটি পর্ষদের ক্ষমতাবহির্ভূত। পদত্যাগ করা নিরীক্ষকের জায়গায় নতুন নিরীক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে এজিএমের মাধ্যমে অনুমোদন না নেয়ার কারণে ২০১৮-১৯ হিসাব বছরের আর্থিক বিবরণী প্রত্যয়নকারী আহমেদ জাকির অ্যান্ড কোম্পানিকে বোর্ড কর্তৃক নিয়োগ অবৈধ। এক্ষেত্রে কোম্পানির পরবর্তী সাধারণ সভার কার্যবিবরণীতে আহমেদ জাকির অ্যান্ড কোম্পানিকে পোস্ট ফ্যাক্টো অ্যাপ্রুভালের কোনো প্রমাণ পায়নি এফআরসি।

র্নিরীক্ষক হিসেবে আহমেদ জাকির অ্যান্ড কোম্পানিকে নিয়োগের আগে অ্যাডভেন্ট ফার্মার অডিট কমিটি ফার্মটির যোগ্যতা নিয়ে কোনো বিশ্লেষণ করেনি। বরং নিয়োগ দেয়ার পর নিরীক্ষক নিয়োগের বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। তাছাড়া অডিট কমিটির সদস্যরা নিরীক্ষকের সঙ্গে কোনো পর্যালোচনা সভায় অংশগ্রহণ করেনি। অডিট কমিটি বহির্নিরীক্ষক নিয়োগের আগে বহির্নিরীক্ষকের যোগ্যতা, অডিট ফি, কাজের পরিধি ও নিরীক্ষাকাজের সময় নিয়ে বহির্নিরীক্ষক নিয়োগের ব্যাপারে কারো নাম সুপারিশ করেনি। এছাড়া অডিট কমিটির ২০১৮-১৯ হিসাব বছরে অনুষ্ঠিত সভাগুলোর কার্যবিবরণীতে আইপিও তহবিল ব্যবহারের বিস্তারিত ব্যাখ্যা করপোরেট সুশাসন কোড অনুসারে পাওয়া যায়নি। এসব ব্যত্যয়ের মাধ্যমে কোম্পানিটির বিএসইসির করপোরেট সুশাসন কোড ২০১৮-এর কোড ৫(৫)(ডি), ৫(৫)(ই), ৫(৫)(১) এবং ৫(৫)(এম) পরিপালনে ব্যর্থ হয়েছে।

আহমেদ জাকির অ্যান্ড কোম্পানি কর্তৃক নিরীক্ষিত ২০১৮-১৯ হিসাব বছরের আর্থিক বিবরণীর কোথাও আইপিও তহবিলে অর্থ ব্যয়ের কোনো ব্যাখ্যা পায়নি এফআরসি। তাছাড়া ২০১৮-১৯ ও তার আগের দুই হিসাব বছরে কোম্পানি স্থায়ী সম্পদে প্রচুর অর্থ বিনিয়োগ করেছে। এর কতটুকু আইপিওর প্রস্তাবনা অনুসারে করা হয়েছে এবং কতটুকু প্রকৃত সম্পদে বিনিয়োগ করা হয়েছে সেটি প্রশ্নবিদ্ধ বলে মনে করছে এফআরসি।

তাছাড়া কোম্পানিটির করপোরেট গভর্ন্যান্স কমপ্লায়েন্স অডিটর পোদ্দার অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস তাদের স্টেটমেন্ট অব কমপ্লায়েন্স উইথ দ্য করপোরেট গভর্ন্যান্স কোডে দেখিয়েছে যে, বিএসইসির করপোরেট গভর্ন্যান্স কোড ২০১৮ এর কোড ৫(৫)-এ উল্লেখ করা সব কোড কোম্পানিটি পরিপালন করেছে। অথচ এফআরসি পর্যবেক্ষণে এ ধারার আওতায় বেশকিছু কোড লঙ্ঘনের প্রমাণ পাওয়া গেছে।

অ্যাডভেন্ট ফার্মার পর্ষদ, অডিট কমিটি, র্নিরীক্ষক এবং করপোরেট গভর্ন্যান্স কমপ্লায়েন্স অডিটরের বিরুদ্ধে এফআরসির বেশকিছু সুনির্দিষ্ট অভিযোগ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এ কারণে দায়ী পক্ষগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করেছে সংস্থাটি। তাদের সুপারিশের মধ্যে রয়েছে আহমেদ জাকির অ্যান্ড কোম্পানিকে ২০১৮-১৯ হিসাব বছরের নিরীক্ষক হিসেবে নিয়োগকে বাতিল ঘোষণা করে নতুন করে এক বা একাধিক স্বনামধন্য নিরীক্ষককে নিয়োগ করা। এক্ষেত্রে একনাবিনের পার্টনার এএসএম নাইম, রহমান রহমান হকের পার্টনার আদিব হোসেন খান, হাওলাদার ইউনূস অ্যান্ড কোম্পানির পার্টনার মোহাম্মদ ফারুক এবং হুদা ভাসি চৌধুরী অ্যান্ড কোম্পানির পার্টনার এএফ নেসারউদ্দিনের নাম সুপারিশ করেছে এফআরসি। তাছাড়া কোম্পানির পর্ষদকে তার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার জন্য শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া, কোম্পানির সঠিক অবস্থা জানাতে ব্যর্থ হওয়ায় করপোরেট গভর্ন্যান্স কমপ্লায়েন্স অডিটরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া এবং আইনবহির্ভূতভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত বহির্নিরীক্ষক আহমেদ জাকির অ্যান্ড কোম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করেছে এফআরসি।

এফআরসির অডিট প্র্যাকটিস রিভিউ বিভাগের নির্বাহী পরিচালক মো. সাইদ আহমেদ এফসিএ এ বিষয়ে বলেন, অ্যাডভেন্ট ফার্মার বিরুদ্ধে আমরা বেশকিছু অনিয়ম খুঁজে পেয়েছি। কোম্পানির কাছে আমরা ব্যাখ্যা চেয়েছিলাম, কিন্তু তাদের ব্যাখ্যায় আমরা সন্তুষ্ট নই। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আমরা এরই মধ্যে বিএসইসিকে চিঠি দিয়েছি।

এফআরসিতে অ্যাডভেন্ট ফার্মার পক্ষে উপস্থিত হয়ে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেছিলেন নির্বাহী পরিচালক সরকার আব্দুল্লাহ আল সাফী। তিনি এ বিষয়ে বলেন, এফআরসির পক্ষ থেকে আমাদের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছিল। আমরা সবকিছুর বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছি। পর্ষদ ও অডিট কমিটির মিনিটসে নিরীক্ষকের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা সংক্ষিপ্ত আকারে উপস্থাপন করা হয়েছিল। সেটি খুব বেশি বিশদ আকারে ছিল না। তাছাড়া ২০১৯ সালের এজিএমে নিরীক্ষক পরিবর্তনের বিষয়টি অনুমোদন করা হয়েছে এবং সব শেয়ারহোল্ডারকেও তা জানানো হয়েছে। আর আইপিও তহবিল ব্যবহারের বিষয়টি আলাদা নিরীক্ষকের মাধ্যমে প্রত্যয়ন করে প্রতি মাসে নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে প্রতিবেদন পাঠাতে হয়। কোম্পানির আর্থিক বিবরণী নিরীক্ষাকারীর সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই বলে জানান তিনি। আমাদের পক্ষ থেকে এফআরসিকে প্রতিটি বিষয় ব্যাখ্যা করে আমরা যে কোনো অনিয়ম করেনি সেটি তুলে ধরা হয়েছে বলে জানান তিনি।

শেয়ারবার্তা / আনিস

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:

ভালো লাগলে শেয়ার করবেন...

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ