বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গর্ভনর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেছেন, ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের অবস্থা বেশি ভালো না। পি কে হালদারসহ কয়েকজন ব্যক্তি ইন্টারন্যাশনাল লিজিং থেকে প্রায় ১ হাজার ৫৯৬ কোটি টাকা তুলে নিয়েছেন। এই টাকা কোথায় গেছে তার হদিস পাওয়া যাচ্ছে না।
পূর্ব নির্দেশনা অনুসারে বাংলাদেশের নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দুরবস্থা নিয়ে অভিমত দিতে এসে আজ মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চকে তিনি এসব তথ্য জানান। এ বিষয়ে আদেশের জন্য বুধবার দিন ঠিক করেন আপিল বিভাগ।
আদালতে ইন্টারনাশনাল লিজিংয়ের পরিচালকদের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
এর আগে ১৬ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দুরবস্থা নিয়ে অভিমত দিতে ইব্রাহিম খালেদ এবং একই বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের অবস্থান তুলে ধরতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালকের নিচে নন এমন একজন কর্মকর্তাকে হাজির হতে নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ। সেই অনুযায়ী আজ ইব্রাহিম খালেদ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক শাহ আলম আদালতে তাদের মতামত দেন।
ইব্রাহিম খালেদ আদালতে বলেন, আমানতকারীরা টাকা পাবেন, তবে তাদের টাকা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। পিপলস লিজিংকে অবসায়ন করা হয়েছে। এখন যদি ইন্টারন্যাশনাল লিজিংকেও অবসায়ন করা হয় তাহলে এ সেক্টরে বিরূপ প্রভাব পড়বে। আমি মাত্র দায়িত্ব নিয়েছি। বর্তমান অবস্থা থেকে ইন্টারন্যাশনাল লিজিংকে বাঁচিয়ে রাখা যাবে কিনা তা এখন বলা সম্ভব হচ্ছে না।
এরপর শাহ আলম আদালতকে বলেন, ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের অনিয়মের বিষয় যখন জানতে পেরেছি তখনই দুদক ও গোয়েন্দা সংস্থাকে ব্যবস্থা নিতে বলেছি। আর বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট এ বিষয়ে একটা প্রতিবেদন দিয়েছে। পুরো প্রতিবেদন এখনও দেয়নি। হাইকোর্টের নির্দেশে ইব্রাহিম খালেদকে চেয়ারম্যান নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তাকে সুযোগ দেওয়া হলে তিনি ইন্টারন্যাশনাল লিজিংকে পুনর্গঠন করতে পারবেন।
এরপর ইন্টারন্যাশনাল লিজিং কোম্পানিকে অবসায়ন করা হবে কিনা সে বিষয়ে আদেশের জন্য আগামীকাল বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দিন ধার্য করেন আপিল বিভাগ।
গত ১৯ জানুয়ারি ওই কোম্পানির আমানতকারীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট এক আদেশে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আর্থিক খাতের কোম্পানি ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিসেস লিমিটেড পরিচালনার জন্য স্বাধীন পরিচালক ও চেয়ারম্যান হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদকে নিয়োগ দেন। একই সঙ্গে, প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান চেয়ারম্যান, এমডি, বহুল আলোচিত প্রশান্ত কুমার হালদারসহ (পি কে হালদার) ১৩ পরিচালকের ব্যাংক হিসাব ও পাসপোর্ট জব্দ করতে বলা হয়। এছাড়া প্রশান্ত কুমার হালদারের মা, স্ত্রী, ভাই প্রীতিশ কুমার হালদার, দুই কাজিন অমিতাভ অধিকারী ও অভিজিৎ অধিকারী, ব্যাংক এশিয়ার সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এরফানউদ্দিন আহমেদ এবং বন্ধু উজ্জল কুমার নন্দীর ব্যাংক হিসাব ও পাসপোর্ট জব্দ করার নির্দেশ দেয়া হয়। পাশাপাশি ২০ জনের দেশত্যাগের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত।
শেয়ারবার্তা / হামিদ