বাংলাদেশের ব্যাংক খাত গুটিকয়েক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে বলে মনে করেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। এ জন্য সরকারের ব্যাংক কমিশন গঠনের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন দেবপ্রিয়।
আজ শনিবার ব্যাংক কমিশন গঠন নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে নিয়ে সিপিডি এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। সেখানেই দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য এসব কথা বলেন। রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক ইনে আজ সকালে এ সংবাদ সম্মেলন হয়।
এর আগে গত বুধবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘ব্যাংক কমিশন করব। এ জন্য অনেকের সঙ্গেই কথাবার্তা বলতে হবে। যাঁরা সময় দিতে পারেন, দেশের স্বার্থে কাজ করতে পারেন, তাঁদের মধ্য থেকেই কেউ এই কমিশনের দায়িত্ব নেবেন।’ তিনি স্পষ্ট করে কিছু না বললেও অর্থনীতিবিদ ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদের ব্যাংক কমিশনের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, বাংলাদেশের ব্যাংক খাত নিয়ে আমরা অসহায় হয়ে পড়েছি। একটা আতঙ্ক, ভয়ংকর, ভঙ্গুর পরিস্থিতির দিকে তাকিয়ে আছি। খেলাপি ঋণ অব্যাহতভাবে বাড়ছে। আর লুকিয়ে আছে মূলধন ঘাটতি, নিরাপত্তা সঞ্চিতির মতো আরও অনেক সূচক। আর এর ফলে মানুষের ব্যাংকে টাকা রাখার পরিমাণ কমে যাচ্ছে। সুদ হার নিয়েও সমস্যা হচ্ছে। আর বাংলাদেশ ব্যাংক যে নীতিমালা দিচ্ছে তার বরখেলাপ হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, এমন মানুষকে ওই কমিশনে আনতে হবে যাদের দক্ষতা, যোগ্যতা, বিচক্ষণতা ও সততা থাকবে। তারা যাতে নির্মোহভাবে কাজ করতে পারেন সেই নিশ্চয়তা দিতে হবে। তাদের রাজনৈতিক সমর্থন দিতে হবে এবং স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে। তারা যে সুপারিশ করবেন তা বাস্তবায়নে রাজনৈতিক উদ্যোগ থাকতে হবে।
ফাহমিদা খাতুন বলেন, সিপিডি এই কমিশনের কার্যক্রম নিয়মিতভাবে পর্যবেক্ষণ করবে ও তাদের মতামত তুলে ধরবে।
বিদেশে পাচার হওয়া টাকা ফিরিয়ে আনার দাবি করে অনুষ্ঠানে সিপিডির বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘ভারত সরকার এ জাতীয় উদ্যোগ নিয়েছে। আমরাও এটা করতে পারি।’
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘ব্যাংক কমিশন গঠনের উদ্যোগকে অভিনন্দন জানাই। তবে সেই সমর্থন শর্তসাপেক্ষ। শর্তটি হলো, এই কমিশনকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিতে।’
শেয়ারবার্তা / হামিদ