পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ করোনাভাইরাস মোকাবিলায় বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে আপতকালীন তহবিল, ঋণের নিশ্চয়তা স্কিম ও ব্যাক টু ব্যাক ঋণপত্রের নীতিমালা সংশোধন—এই তিন সুবিধা চেয়েছে।
বিজিএমইএর সভাপতি রুবানা হক বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরের কাছে ১৩ ফেব্রুয়ারি এ-সংক্রান্ত চিঠি দিয়েছেন। সেই চিঠির অনুলিপি অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাত ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস বরাবরও দিয়েছে বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষ।
বিজিএমইএর চিঠিতে বলা হয়েছে, গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে চীন থেকে ১ হাজার ৩৬৩ কোটি ডলারের পণ্য ও কাঁচামাল আমদানি হয়েছে। তার মধ্যে সুতা, কাপড় ও অন্যান্য কাঁচামাল রয়েছে ৫০২ কোটি ডলারের। পোশাক খাতের প্রায় ৪৬ শতাংশ কাঁচামাল চীন থেকে আসে।
করোনাভাইরাস যদি দ্রুত সময়ের মধ্যে নিয়ন্ত্রণ করা না যায়, তাহলে পোশাক খাতে মারাত্মক প্রভাব পড়বে। চট্টগ্রাম বন্দরে চীনা জাহাজ আসা শূন্যের কোঠায় চলে আসছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্যানুযায়ী, চলতি মাসের ১-৮ তারিখে আমদানি কমেছে ৩৭ শতাংশের মতো।
এ অবস্থায় নিজেদের দাবির বিষয়ে বিজিএমইএ বলেছে, করোনাভাইরাসের কারণে সময়মতো কাঁচামাল না পেলে উৎপাদন ব্যাহত হবে। উদ্যোক্তাদের নিজ খরচে উড়োজাহাজে পণ্য পাঠানো কিংবা বিকল্প উৎস থেকে কাঁচামাল সংগ্রহের প্রয়োজন হতে পারে। তখন কারখানাগুলোর বাড়তি ব্যয় সংস্থানের জন্য আপত্কালীন তহবিলের দরকার হবে। আবার কাঁচামাল আমদানিতে বিলম্ব হলে নানাবিধ জটিলতা রোধে ব্যাক টু ব্যাংক এলসির নীতিমালায় সংশোধন আনতে হবে। এ ছাড়া বিকল্প উৎস থেকে কাঁচামাল আমদানির প্রয়োজন হলে বাণিজ্যিক ব্যাংক যাতে উদ্যোক্তাদের সহায়তা অব্যাহত রাখে, সে জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ ঋণ নিশ্চয়তা স্কিম দরকার।
বিজিএমইএর সভাপতি রুবানা হক গতকাল বুধবার বলেন, ‘চীনের নববর্ষের দীর্ঘ ছুটির কারণে আমাদের অধিকাংশ উদ্যোক্তাই এপ্রিল পর্যন্ত উৎপাদনের প্রয়োজনীয় কাঁচামাল সংগ্রহ করেছেন। তবে করোনাভাইরাসের কারণে মার্চ মাসে কাঁচামাল না এলে মে মাসের উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।’ তিনি আরও বলেন, ভালো খবর হচ্ছে, চীনের অনেক প্রতিষ্ঠানের কার্যালয় খুলতে শুরু করেছে। উৎপাদন শুরু হচ্ছে। তারপরও কোনো কারণে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি তৈরি হলে সেটি মোকাবিলার প্রস্তুতি হিসেবেই চিঠি দেওয়া হয়েছে।
এদিকে বিজিএমইএর চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে চীন ও পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে বাংলাদেশের পণ্য আমদানি-রপ্তানির উদ্ভূত সংকট নিরসনে ২৫ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউসের সভাপতিত্বে উচ্চপর্যায়ের সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
শেয়ারবার্তা / হামিদ