পুঁজিবাজারকে ডিমিউচুয়ালাইজেশন করা হয়েছে কিন্তু এর কোনো ইতিবাচক দিক দেখা যায় না। এডিবি বাজারের উন্নয়নের জন্য ১৭ কোটি ডলার দিচ্ছে। এ অর্থ দিয়ে বাজার কতটুকু উন্নয়ন হবে সেটাই দেখার বিষয়। কারণ এর আগেও বাজারের উন্নয়নের জন্য আরও অনেক অর্থ সহায়তা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু গত ১০ বছরে বাজারের কোনো উন্নয়ন হয়নি। সোমবার এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি আলোচিত হয়।
হাসিব হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পুঁজিবাজারের টেকনিক্যাল এনালিস্টের ইঞ্জিনিয়ার মো. রহমত উল্লাহ এবং পুঁজিবাজার বিশ্লেষক সাবির আহমেদ, এফসিএ।
মো. রহমত উল্লাহ বলেন, পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা নিয়ে বিনিয়োগকারীর অনেক অভিযোগ রয়েছে। তাদের অভিযোগ তারা বাজারকে খেয়ালখুশি মতো পরিচালনা করছে। যেহেতু গত ১০ বছর ধরে বাজারের ইতিবাচক কোনো সমাধা পাওয়া যাচ্ছে না সেক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীর শেষ আশ্রয় হচ্ছে আইন। এটা ছাড়া আর কোনো পথ নেই। আর আইনের আশ্রয় নেওয়ার অধিকার দেশের সব নাগরিকের রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আইপিও ক্যানসারের মতো ক্ষত সৃষ্টি করেছে বাজারে। ২০১৮ ও ২০১৯ সালে আইপিও প্লেসমেন্ট বাণিজ্যের মাধ্যমে ব্যাপক অর্থ বাজার থেকে বের করে নেওয়া হয়েছে। এখানে ভালোভাবে নজরদারি করতে হবে। অর্থাৎ প্লেসমেন্ট বাণিজ্য বন্ধ করতে হবে। আমরা বাজারের পরিবর্তন দেখতে চাই। বাজারের এ রকম অবস্থা দীর্ঘদিন দেখতে চাই না। ডিএসইর মূল কাজ হচ্ছে বাজারের সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি করা। যাতে বিনিয়োগকারীরা নির্ভয়ে বিনিয়োগ করতে পারেন। জনগণের কাছে পর্যাপ্ত অর্থ রয়েছে কিন্তু বিনিয়োগকারীরা বাজারে কোনো ভরসা পাচ্ছেন না। এর জন্য বিনিয়োগকারীদের যে সেবা দেওয়া দরকার ডিএসইকে সেটা দিতে হবে। এমন কিছু করা যাবে না, যাতে বাজার ক্ষতিগ্রস্ত হয়Ñএমন কিছু প্রত্যাশা করি না।
সাবির আহমেদ বলেন, বাজারে প্রতিনিয়ত শেয়ার প্লেসমেন্ট বাণিজ্য হচ্ছে। যে শেয়ারের দর ২০ থেকে ৩০ টাকা ছিল। এখান সে শেয়ার তিন টাকা থেকে পাঁচ টাকায় কেনাবেচা হচ্ছে। কেন ২০ টাকার শেয়ার এখন তিন টাকায়?। কেন এটার জবাবদিহি করা হচ্ছে না বা কেনইবা এটা দেখা হচ্ছে না। বাজার তো একটা আইনের মাধ্যমে পরিচালনা করা হয়। কিন্তু সেটা দেখা যাচ্ছে না। যদি বাজারে আইনের শাসন সঠিকভাবে পরিপালন করা হতো, তাহলে গত ১০ বছরে বাজারে যত ধরনের কারসাজি হয়েছে সবার শাস্তি হতো। আবার পুঁজিবাজারকে ডিমিউচুয়ালাইজেশন করা হয়েছে কিন্তু এর কোনো ইতিবাচক দিক দেখা যাচ্ছে না বাজারে। এডিবি বাজারের উন্নয়নের জন্য ১৭ কোটি ডলার দিচ্ছে। এ অর্থ দিয়ে বাজার কতটুকু উন্নয়র হবে সেটাই দেখার বিষয়। কারণ এর আগে বাজার উন্নয়নের জন্য আরও অনেক অর্থ সহায়তা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু গত ১০ বছরে বাজারের কোনো উন্নয়ন হয়নি।
তিনি আরও বলেন, যখন ডিএসই পরিচালনার জন্য কোনো সদস্য নিয়োগ দেওয়া হয়, তখন অবশ্যই ওই ব্যক্তির বাজার সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞান ও পরিচালনা করার যোগ্যতা আছে কি না-সেটা দেখা দরকার। যারা আসলেই বাজারের উন্নতি চায়।
শেয়ারবার্তা / ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০