ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে পুঁজিবাজরে মূল্যসূচক ও লেনদেন। সপ্তাহের প্রথমদিনের ধারাবাহিকতায় সোমবার প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রায় হাজার কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। ফলে এক বছরের মধ্যে বাজারটিতে আজ সর্বোচ্চ লেনদন হলো। আর সবকটি মূল্য সূচকের উত্থানের মাধ্যমে টানা পাঁচ কার্যদিবস ঊর্ধ্বমুখী থাকল পুঁজিবাজার।
আজ ডিএসইতে ৯৭৬ কোটি ৩৮ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মাধ্যমে ২০১৯ সালের ৩ ফেব্রুয়ারির পর বাজারটি সর্বোচ্চ লেনদেন হলো। গত বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি ডিএসইতে ৯৮৪ কোটি ২১ লাখ টাকার লেনদেন হয়। এরপর বাজারটিতে আর সাড়ে ৯০০ কোটি টাকার ওপরে লেনদেন হয়নি।
গত ১০ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ব্যাংকগুলোকে বিশেষ তহবিল গঠনের সুযোগ দেয়ার পর থেকেই প্রতিদিন লেনদেনের পরিমাণ বাড়ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য প্রত্যেকটি ব্যাংক ২০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠন করতে পারবে।
নিজস্ব উৎস অথবা ট্রেজারি বিল বন্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ব্যাংকগুলো এ তহবিলের অর্থ সংগ্রহ করতে পারবে। ৫ শতাংশ সুদে এ তহবিলের অর্থ সংগ্রহ করতে পারবে ব্যাংকগুলো, যা পরিশোধের সময় পাবে পাঁচ বছর। আর ব্যাংকগুলো সর্বোচ্চ ৭ শতাংশ সুদে এ তহবিল থেকে ঋণ দিতে পারবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এ সুবিধা দেয়ার পর মঙ্গলবার শেয়ারবাজারে উল্লম্ফন দেখা দেয়। সেই সঙ্গে লেনদেন বেড়ে ৫০০ কোটি টাকার ঘরে পৌঁছে। পরের কার্যদিবস বুধবার ডিএসইতে ৬০০ কোটি টাকার ওপরে লেনদেন হয়। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার লেনদেন হয় ৭০০ কোটি টাকার ওপরে।
আগের সপ্তাহের শেষ তিন কার্যদিবসের মতো চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) লেনদেনের গতি আরও বেড়ে ৯০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়। আর সোমবার তা আরও বেড়ে প্রায় হাজার কোটি টাকার কাছে চলে এসেছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে দেয়া সুবিধার পর লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসের প্রতিদিনই আগের দিনের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে।
এ দিকে লেনদেনের সঙ্গে প্রতিদিন বাড়ছে মূল্য সূচক। সোমবার ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক আগের দিনের তুলনায় ৩৩ পয়েন্ট বেড়ে ৪ হাজার ৭৬৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক ৬ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৫৯৯ পয়েন্টে উঠে এসেছে। আর ডিএসইর শরিয়াহ সূচক ৭ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৮৩ পয়েন্টে এসেছে।
সবকটি সূচকের সঙ্গ বেড়েছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম। দিনভর ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া ১৯৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম আগের দিনের তুলনায় বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১২৮টির। আর ৩২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে লাফার্জ হোলসিমের শেয়ার। কোম্পানিটির ৩৭ কোটি ৪৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা খুলনা পাওয়ারের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩৬ কোটি ৬৭ লাখ টাকার। ২১ কোটি ৭১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ওরিয়ন ইনফিউশন।
এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ ১০ কোম্পানির মধ্যে রয়েছে- এডিএন টেলিকম, ওরিয়ন ফার্মা, বেক্সিমকো, গোল্ডেন হার্ভেস্ট, ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড, ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালস এবং সামিট পাওয়ার।
অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্য সূচক সিএএসপিআই ৯২ পয়েন্ট বেড়ে ১৪ হাজার ৫২৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৩২ কোটি ৫১ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেয়া ২৭৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৫৭টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে কমেছে ৮৫টির এবং ৩১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
শেয়ারবার্তা / আনিস