গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় যারা ভোগেন তারা ভালোই জানেন বিষয়টি কতোটা অস্বস্তিকর। একটু ভাজাপোড়া অথবা দাওয়াত-পার্টিতে মসলাযুক্ত খাবার খেলেই শুরু হয়ে যায় গ্যাসের সমস্যা। এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে সবাই হাত বাড়ান ওষুধের দিকে। এতে সাময়িক কিছুটা আরাম পাওয়া যায় বটে। তবে অভ্যাসটি কিন্তু আসলেই ক্ষতিকর।
চিকিৎসকদের মতে, শারীরিক প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ঘন ঘন অ্যাসিড কমানোর ওষুধ খেলে তা আদতে ক্ষতিই করে। এর প্রভাবে কোনো ভারী খাবার খেলে অ্যাসিডের অভাবে প্রোটিন হজমে বিঘ্ন ঘটে৷ এছাড়া খাবার নিচে নামার প্রক্রিয়া শ্লথ হয়ে-পেট ভার, খাবার গলায় উঠে আসা, বমি ও বদহজমসহ নানা সমস্যা দেখা দেয়।
তবে সঠিকভাবে জীবন যাপন করলে গ্যাস্ট্রিক ধারে-কাছে ঘেঁষতেই পারে না। এবার জেনে নিন ওষুধ ছাড়া কীভাবে গ্যাসট্রিক দূর করবেন-
শসা: শসা পেট ঠাণ্ডা রাখতে অনেক বেশি কার্যকরী খাদ্য। এতে রয়েছে ফ্লেভানয়েড ও অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান, যা পেটে গ্যাসের উদ্রেক কমায়।
দই: দই আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এতে করে দ্রুত খাবার হজম হয়। ফলে পেটে গ্যাস হওয়ার ঝামেলা দূর হয়।
পেঁপে: পেঁপেতে রয়েছে পাপায়া নামক এনজাইম, যা হজমশক্তি বাড়ায়। নিয়মিত পেঁপে খাওয়ার অভ্যাস করলেও গ্যাসের সমস্যা কমে।
কলা ও কমলা: কলা ও কমলা পাকস্থলির অতিরিক্ত সোডিয়াম দূর করতে সহায়তা করে। এতে করে গ্যাসের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এ ছাড়াও কলার সল্যুবল ফাইবারের কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ক্ষমতা রাখে। সারাদিনে অন্তত দুটি কলা পেট পরিষ্কার রাখতে কাজ করে।
আদা: আদা সব চাইতে কার্যকরী অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদানসমৃদ্ধ খাবার। পেট ফাঁপা এবং পেটে গ্যাস হলে আদা কুচি করে লবণ দিয়ে কাঁচা খান। দেখবেন গ্যাসের সমস্যা সমাধান হবে।
লবঙ্গ: একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে লবঙ্গে উপস্থিত একাধিক উপকারি উপাদান শরীরে প্রবেশ করার পর গ্যাসের প্রকোপ কমতে সময় লাগে না। তাই এবার থেকে একটু বেশি মাত্রায় খাবার খাওয়ার পর যদি বুক জ্বালা এবং ঢেকুর ওঠার মতো সমস্যা দেখা দেয়, তাহলে এক-দুটি লবঙ্গ খেয়ে ফেলতে ভুলবেন না।
মৌরি: মৌরিতে থাকা বিশেষ এক ধরনের তেল পাকস্থলির কর্মক্ষমতাকে বাড়িয়ে তোলে। সেই সঙ্গে হজমে সহায়ক পাচক রসের ক্ষরণ এতটা বাড়িয়ে দেয় যে বদ-হজম এবং অ্যাসিড রিফ্লাক্সের মতো সমস্যা কমতে সময় লাগে না।
অ্যালোভেরা: অ্যালোভেরায় উপস্থিত নানাবিধ খনিজ একদিকে যেমন ত্বকের সৌন্দর্য বাড়ায়, তেমনি হজম ক্ষমতার উন্নতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। শুধু তাই নয়, অ্যালোভেরায় উপস্থিত অ্যাসিড, স্টোমাকে তৈরি হওয়া অ্যাসিডের কর্যকারিতা কমিয়ে দেয়। ফলে অ্যাসিডিটির সমস্যা একেবারে নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।
পুদিনা পাতার পানি: এক কাপ পানিতে পাঁচটা পুদিনা পাতা দিয়ে ফুটিয়ে খান। পেট ফাঁপা, বমিভাব দূরে রাখতে এর বিকল্প নেই।
মৌরির পানি: মৌরি ভিজিয়ে সেই পানি খেলে গ্যাস থাকে না।
শেয়ারবার্তা / হামিদ