করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চীনের হুবেই প্রদেশে আরও ৮৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৭২২ জনে দাঁড়িয়েছে। এখন পর্যন্ত দেশটিতে ৩৪ হাজারের বেশি মানুষের দেহে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। ভাইরাসের বিস্তার রোধে শুক্রবারও চীন থেকে নিজ দেশের বাসিন্দাদের ফিরিয়ে নেয় যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিলসহ বিভিন্ন দেশ।
চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরের বাস্তবতা ভিন্ন। করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব থেকে প্রাণে বাঁচতে কর্তৃপক্ষের নির্দেশে গৃহবন্দী অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন এখানকার বাসিন্দারা। আতঙ্ক, হতাশা, খাদ্যাভাব, সব মিলিয়ে সীমাহীন দুর্ভোগই এখন তাদের নিয়তি।
চীনা সরকারের পক্ষ থেকে উহানে খাদ্য সহায়তা পাঠানো হলেও, ঘরের ভেতরে অবস্থান করায় আর প্রচারের অভাবে এ ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ কর্মসূচি সম্পর্কে জানতেন না বেশিরভাগ মানুষই। এসব ত্রাণ পন্যের বেশির ভাগই চলে যায় করোনা মোকাবিলায় নবনির্মিত হাসপাতালে।
শুক্রবারও চীনের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় অবস্থান করা অনেক মার্কিন নাগরিককে উদ্ধার করা একটি বিমান যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের সামরিক ঘাঁটিতে অবতরণ করে। ক্যালিফোর্নিয়ায় নিজ দেশের নাগরিকদের নিয়ে অবতরণ করে আরও একটি বিমান। এসব উদ্ধারকৃতদের ১৪ দিনের জন্য সম্পূর্ণ পৃথক রেখে পরীক্ষা নিরীক্ষার ব্যবস্থা করেছে মার্কিন সরকার।
একই দিন, নিজ দেশের নাগরিকদের অনেককেই চীন থেকে উদ্ধার করে ফিরিয়ে নেয় ব্রাজিলও। চীন থেকে উদ্ধার করা তাইওয়ানের নাগরিকদের বহনকারী জাহাজ জাপানে প্রবেশ করে ব্যর্থ হয়ে শনিবার তাইওয়ানে প্রবেশের অনুমতি পায়। ওই জাহাজের কেউই করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত না হলেও সতর্কতা স্বরূপ তাদেরও দুই সপ্তাহ পর্যবেক্ষণে রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এদিকে চীন থেকে ৩শ’ নাগরিককে ফিরিয়ে নিয়ে তাদের আলাদাভাবে রাখার প্রস্তুতি নিচ্ছে অস্ট্রেলিয়া। তবে যেখানে তাদের রাখার ব্যবস্থা করা হচ্ছে, তার পাশেই শিশুদের স্কুল থাকায় ভাইরাস আক্রান্তের আশঙ্কা করছেন দেশটির বাসিন্দারা।
নতুন করে আরও এক করোনা আক্রান্ত ধরা পড়ায় স্বাস্থ্য সতর্কতার মাত্রা বাড়িয়েছে সিঙ্গাপুর। নতুন করে সতর্কতা জারির পরই ঘরের বাইরে বের হওয়া কমিয়ে দিয়েছেন স্থানীয়রা। দোকানপাটগুলোতে পন্যের সংকট দেখা যায় প্রকটভাবে।
এদিকে করোনা রোগী শনাক্ত করণে ফাইভ জি প্রযুক্তির রোবট নির্মাণ করেছে চীন। এ রোবট খুব অল্প সময়ে মানুষের শরীরের তাপমাত্রা নির্ণয় ছাড়াও কোনো ব্যক্তি মাস্ক ব্যবহার করছেন কিনা তাও শনাক্ত করতে পারে সহজেই। রোবট নির্মাণকারীরা বলছেন, এ রোবট যেমন লোকবলের চাহিদা মেটাচ্ছে, তেমনই ভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে গিয়ে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি এড়ানোও সম্ভব হচ্ছে এটির সাহায্যে।
শেয়ারবার্তা / মিলন