৩০ জুন সমাপ্ত ২০১৮-১৯ হিসাব বছরে বিক্রি বেড়েছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত দেশীয় চার সিরামিক কোম্পানির। কোম্পানিগুলো হলো- মুন্নু সিরামিক, স্ট্যান্ডার্ড সিরামিক, ফু-ওয়াং সিরামিক ও শাইনপুকুর সিরামিকস লিমিটেড। তবে চারটি কোম্পানির বিক্রি বাড়লেও নিট মুনাফা কমেছে দুটির। কোম্পানি দুটি হলো ফু-ওয়াং সিরামিক ও স্ট্যান্ডার্ড সিরামিক লিমিটেড।
অন্যদিকে, চলতি হিসাব বছরের দুই প্রান্তিকেই (জুলাই-ডিসেম্বর ২০১৯) চার কোম্পানির আয় কমেছে। একটি কোম্পানি বড় লোকসানে পড়েছে। কোম্পানিটি হলো স্ট্যান্ডার্ড সিরামিক লিমিটেড। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।
মুন্নু সিরামিক: ২০১৮-১৯ হিসাব বছরে মুন্নু সিরামিকের রাজস্ব আয় হয়েছে ১০৭ কোটি ১১ লাখ টাকা। ২০১৭-১৮ হিসাব বছরে কোম্পানিটির রাজস্ব ছিল ৯০ কোটি ৬০ লাখ টাকা। এ হিসাবে গত হিসাব বছরে প্রতিষ্ঠানটির রাজস্ব বেড়েছে ১৬ কোটি ৫১ লাখ টাকা বা ১৮ দশমিক ২২ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির নিট মুনাফা হয়েছে ৭ কোটি ২৭ লাখ টাকা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৫ কোটি ৩১ লাখ টাকা। এ হিসাবে গত হিসাব বছরে কোম্পানিটির নিট মুনাফা বেড়েছে ১ কোটি ৯৬ লাখ টাকা বা ৩৬ দশমিক ৯১ শতাংশ।
সমাপ্ত হিসাব বছরে মুন্নু সিরামিকের ইপিএস হয়েছে ২ টাকা ২২ পয়সা, যা আগের হিসাব বছরের একই সময়ে ছিল ২ টাকা ১১ পয়সা। ৩০ জুন কোম্পানিটির এনএভিপিএস দাঁড়ায় ৬৫ টাকা ৯০ পয়সা, যা আগের বছর ছিল ৯১ টাকা ৪৬ পয়সা। সমাপ্ত হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের ১০ শতাংশ নগদ ও ১০ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ দিয়েছে মুন্নু সিরামিক।
এদিকে চলতি হিসাব বছরের দুই প্রান্তিকে (জুলাই-ডিসেম্বর ২০১৯) কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ১ টাকা ৫০ পয়সা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ৮ টাকা ১৩ পয়সা। ৩০ ডিসেম্বর এনএভিপিএস দাঁড়িয়েছে ৬৭ টাকা ৪০ পয়সা। যা ৩০ জুন ছিল ৬৫ টাকা ৯০ পয়সা।
স্ট্যান্ডার্ড সিরামিক: ৩০ জুন সমাপ্ত ২০১৮-১৯ হিসাব বছরে স্ট্যান্ডার্ড সিরামিকের রাজস্ব আয় হয়েছে ৩২ কোটি ৩৯ লাখ টাকা, যা আগের হিসাব বছরের চেয়ে ২ কোটি ৮৯ লাখ টাকা বা ৯ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি। ২০১৭-১৮ হিসাব বছরে কোম্পানিটির রাজস্ব ছিল ২৯ টাকা ৫০ পয়সা। গত হিসাব বছরে প্রতিষ্ঠানটির নিট মুনাফা হয়েছে ১ কোটি টাকা, যা আগের হিসাব বছরে ছিল ১ কোটি ২ লাখ টাকা। এ হিসাবে সমাপ্ত হিসাব বছরে তাদের নিট মুনাফা কমেছে ২০ লাখ টাকা বা ১ দশমিক ৯৬ শতাংশ।
সমাপ্ত হিসাব বছরে শেয়ারহোল্ডারদের ৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে স্ট্যান্ডার্ড সিরামিক। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ১ টাকা ৫৬ পয়সা, যা আগের হিসাব বছরে ছিল ১ টাকা ৪৫ পয়সা।
এদিকে চলতি হিসাব বছরের দুই প্রান্তিকে (জুলাই-ডিসেম্বর ২০১৯) কোম্পানিটির লোকসান হয়েছে শেয়ারপ্রতি ৪ টাকা ৬০ পয়সা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে আয় ছিল শেয়ারপ্রতি ৮০ পয়সা। ৩০ ডিসেম্বর এনএভিপিএস দাঁড়িয়েছে ১১ টাকা ২৭ পয়সা। যা ৩০ জুন ছিল ১৬ টাকা ৩৭ পয়সা।
উল্লেখ্য, পুরনো চুল্লি সংস্কারের জন্য গত বছরের আগস্ট থেকে অক্টোবর পর্যন্ত কারখানার বড় একটি অংশের উৎপাদন বন্ধ ছিল স্ট্যান্ডার্ড সিরামিকের। এর ফলে চলতি হিসাব বছরের দুই প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) কোম্পানিটিকে লোকসান গুনতে হয়েছে।
ফু-ওয়াং সিরামিক: ২০১৮-১৯ হিসাব বছরে ফু-ওয়াং সিরামিকের রাজস্ব আয় হয়েছে ৫৯ কোটি ৫২ লাখ টাকা, ২০১৭-১৮ হিসাব বছরে যা ছিল ৫৭ কোটি ২৬ লাখ টাকা। এ হিসাবে গত হিসাব বছরে কোম্পানিটির রাজস্ব বেড়েছে ২ কোটি ২৬ লাখ টাকা বা ৩ দশমিক ৯৫ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে প্রতিষ্ঠানটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ৮ কোটি ৮ লাখ টাকা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৮ কোটি ৪০ লাখ টাকা। এ হিসাবে ২০১৮-১৯ হিসাব বছরে কোম্পানিটির নিট মুনাফা কমেছে ৩২ লাখ টাকা বা ৩ দশমিক ৮১ শতাংশ।
সমাপ্ত হিসাব বছরে ফু-ওয়াং সিরামিকের শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৫৯ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৬২ পয়সা। সমাপ্ত হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের ১ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে ফু-ওয়াং সিরামিক।
এদিকে চলতি হিসাব বছরের দুই প্রান্তিকে (জুলাই-ডিসেম্বর ২০১৯) কোম্পানিটির ইপিএস ২২ পয়সা, আগের হিসাব বছরের একই ছিল ৩০ পয়সা। ৩০ ডিসেম্বর এনএভিপিএস দাঁড়িয়েছে ১১ টাকা ৩৭ পয়সা। যা ৩০ জুন ছিল ১১ টাকা ১৫ পয়সা।
শাইনপুকুর সিরামিকস: ২০১৮-১৯ হিসাব বছরে শাইনপুকুর সিরামিকসের মোট বিক্রি হয়েছে ১৫৩ কোটি ৩১ লাখ টাকা। আগের হিসাব বছরে তাদের বিক্রি ছিল ১৫২ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। এ হিসাবে সমাপ্ত হিসাব বছরে প্রতিষ্ঠানটির রাজস্ব বেড়েছে ৪৫ লাখ টাকা বা দশমিক ২৯ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে শাইনপুকুর সিরামিকসের নিট মুনাফা হয়েছে ৬ কোটি ২৭ লাখ টাকা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৬ কোটি ১৫ লাখ টাকা। এ হিসাবে গত হিসাব বছরে কোম্পানিটির নিট মুনাফা বেড়েছে ১২ লাখ টাকা বা ১ দশমিক ৯৫ শতাংশ।
২০১৮-১৯ হিসাব বছরে প্রতিষ্ঠানটির ইপিএস হয়েছে ৪৩ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৪২ পয়সা। সমাপ্ত হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের কোনো লভ্যাংশ দেয়নি কেম্পানিটি।
এদিকে চলতি হিসাব বছরের দুই প্রান্তিকে (জুলাই-ডিসেম্বর ২০১৯) কোম্পানিটির ইপিএস ৬ পয়সা, আগের হিসাব বছরের একই ছিল ২১ পয়সা। ৩০ ডিসেম্বর এনএভিপিএস দাঁড়িয়েছে ২৮ টাকা ৯৪ পয়সা। যা ৩০ জুন ছিল ২৯ টাকা ৪ পয়সা।
শেয়ারবার্তা / আনিস