1. [email protected] : শেয়ারবার্তা প্রতিবেদক : শেয়ারবার্তা প্রতিবেদক
  2. [email protected] : শেয়ারবার্তা : nayan শেয়ারবার্তা
  3. [email protected] : news uploder : news uploder
ডিএসই’র বিরুদ্ধে পুঁজিবাজার পতনের অভিযোগ শুনানি স্থগিত
বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:০০ পিএম

ডিএসই’র বিরুদ্ধে পুঁজিবাজার পতনের অভিযোগ শুনানি স্থগিত

  • আপডেট সময় : বৃহস্পতিবার, ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২০
BSEC

পুঁজিবাজারে সম্প্রতি দরপতনের পেছনে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালনা পর্ষদের এক অংশ জড়িত বলে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) অনুসন্ধানে উঠে আসে। এ কারণে ডিএসই পরিচালনা পর্ষদ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এবং প্রধান নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তাকে (সিআরও) কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দিয়েছিল বিএসইসি। এবং একই সাথে আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি তাদেরকে শুনানিতে অংশ নিতে ডেকেছিল। তবে আপাতত আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি তাদের শুনানি হচ্ছে না। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।

জানা গেছে, এর আগে গত ২৭ জানুয়ারি বিএসইসির সহকারী পরিচালক মো. রফিকুন্নবি সাক্ষরিত এক চিঠিতে ডিএসইকে শোকজ করা হয়। কারন দর্শানোর জন্য আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি সময় নির্ধারন করা হয়েছিল, যা স্থগিত করা হয়েছে।

জানা যায়, শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত এসিআইয়ের ব্যবসায় পতনের কারন অনুসন্ধানে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তদন্ত কমিটি গঠন এবং গণমাধ্যমে বক্তব্য দেওয়ায় কোম্পানিটির শেয়ার দরে পতন হয়েছে বলে মনে করছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) তদন্ত কমিটি। যা ২০১৯ সালে শেয়ারবাজারে মূল্যসূচকের পতনে ভূমিকা রেখেছে। এছাড়া অনুমোদন ছাড়াই শেয়ারবাজার নিয়ে গণমাধ্যমে ব্যক্তিগতভাবে বিভিন্ন মন্তব্য করায় নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বলেও বিএসইসির তদন্ত কমিটি মনে করছে। একইসঙ্গে কমিটি গঠন ও বক্তব্য প্রদানের ক্ষেত্রে ডিএসই বিভিন্ন আইন-কানুনের ব্যত্যয় ঘটিয়েছে। যাতে ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও চীফ রেগুলেটর অফিসারকে কারন দর্শানোর (শোকজ) চিঠি দেয় বিএসইসি।

গত বছর পুঁজিবাজারের অস্বাভাবিক পতনের কারণে অনুসন্ধানে ২০১৯ সালের ২১ জুলাই বিএসইসি একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। যে কমিটি পুঁজিবাজারের পতনের সঙ্গে ডিএসইর সম্পৃক্ততা পায়। এরমধ্যে রয়েছে- ডিএসইর পর্ষদের কিছু সদস্য ব্যক্তিগতভাবে পৃুঁজিবাজার নিয়ে গণমাধ্যমে বিভিন্ন বক্তব্য দেয়। এমনকি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমেও বক্তব্য রাখে। যা মূল্য সংবেদনশীল তথ্য (পিএসআই) হিসাবে পুঁজিবাজারে প্রভাব ফেলেছে। তাদের ওইসব মন্তব্য গণমাধ্যমে প্রকাশের পরে পুঁজিবাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। এরফলে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। অথচ ওইসব তথ্য প্রকাশ নির্ভর করে নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদন সাপেক্ষে।

বিএসইসির তদন্ত কমিটি জানায়, ডিএসইর চীফ রেগুলেটর অফিসার (সিআরও) নেতৃত্বে থাকা রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স বিভাগ দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে। এ বিভাগটি পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টদের মধ্যে সচেতনতা তৈরীতে কাজ করেনি। তারা আইন-কানুন, কমপ্লায়েন্স সর্ম্পক্যে সেমিনার, গণমাধ্যম এমনকি ওয়ার্কশপের মাধ্যমে সচেতনতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখেনি।

এসিআই লিমিটেড ইস্যুতে ডিএসই সঠিক দায়িত্ব পালন করেনি বলে জানিয়েছে তদন্ত কমিটি। তাদের খামখেয়ালিপনায় কোম্পানিটির শেয়ার দরে পতন হয়। যা মূল্যসূচকের পতনে ভূমিকা রাখে।

বিএসইসির তদন্ত কমিটির অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, এসিআইয়ের গত কয়েক বছরের সন্দেহজনক আর্থিক বিবরণী নিয়ে ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ডিএসই ৬ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে। ডিএসইর পরিচালক ও সাবেক চেয়ারম্যান বিচারপতি ছিদ্দিকুর রহমান মিয়াকে প্রধান করে ওই কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির সদস্য হিসেবে ছিলেন- ডিএসইর পরিচালক ও সাবেক সভাপতি মো. রকিবুর রহমান, পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন, স্বতন্ত্র পরিচালক মনোয়ারা হাকিম আলী, প্রফেসর ড. মো. মাসুদুর রহমান এবং ডিএসইর প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) আবদুল মতিন পাটোয়ারী। এই কমিটির জানানো তথ্যে এসিআইয়ের সাবসিডিয়ারি অনেক লোকসানে এবং মূল কোম্পানির মুনাফা খেয়ে ফেলছে বলে ২০১৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়। যা ডিএসইর আইনগত সক্ষমতার মধ্যে ছিল না।

ডিএসইর ওই কমিটির কিছু সদস্য মিডিয়ায় দেওয়া বক্তব্যে জানায়, এসিআই কৃত্রিম আর্থিক হিসাব প্রকাশ করে। এছাড়া ডিএসইকে দেওয়া এসিআইয়ের ব্যাখ্যা সন্তোষজনক না। ফলে পূণ:রায় তদন্তের জন্য রিপোর্ট কমিশনে পাঠানো হবে। যা ২০১৯ সালের ২৯ মে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। যা ছিল অনুমান নির্ভর এবং সিকিউরিটিজ আইনের ব্যত্যয়। কিন্তু ডিএসইর ওই তদন্ত কমিটি এ বিষয়ে জনসম্মুখে কথা বলতে পারে না।

এসিআইয়ের ২০১৮ সালের ডিসেম্বর থেকে জুন ১৯ পর্যন্ত সময়ে শেয়ার দর কমে ৩৩ শতাংশ। ওইসময় ডিএসইর তদন্ত কমিটি গঠন এবং কাজ করেছিল। যা এসিআইয়ের শেয়ার দর পতনের সঙ্গে সম্পৃক্ততাকে ইঙ্গিত করে বলে বিএসইসির তদন্ত কমিটি জানায়। ওই কমিটি এসিআই সর্ম্পক্যে নেতিবাচক মন্তব্য করার ফলেই কোম্পানিটির শেয়ার দরে ব্যাপক দর পতন হয়। মূল্য সূচকে বড় নেতিবাচক ভূমিকা রাখে।

বিএসইসির তদন্ত কমিটি জানায়, সিকিউরিটিজ আইন অনুযায়ি, একটি তালিকাভুক্ত কোম্পানিকে নিয়ে ডিএসই এ জাতীয় তদন্ত কমিটি গঠন করতে পারে না। বরং স্টক এক্সচেঞ্জ লিস্টিং রেগুলেশন-২০১৫ এর ৫৪ (১) অুনযায়ি, কমিশনের অনুমোদন সাপেক্ষে পরিদর্শন করতে পারে। কিন্তু ডিএসই এসিআইয়ের ক্ষেত্রে কমিশনের অনুমোদন নেয়নি। ফলে স্পষ্টভাবেই রেগুলেশন ৫৪-(১) ব্যত্যয় ঘটেছে। ডিএসইর তদন্ত কমিটি আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছে।

বিএসইসির তদন্ত কমিটি জানায়, উপরিক্ত অনিয়মের মাধ্যমে ডিএসই কর্তৃপক্ষ বোর্ড অ্যান্ড এডমিনিস্ট্রেশন রেগুলেশন-২০১৩ এর ৯ (৫) লংঘন করেছে। এছাড়া ডিএসইর সিআরও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (বোর্ড অ্যান্ড এডমিনিস্ট্রেশন) রেগুলেশন-২০১৩ এর ১৬ (৩) লংঘন করেছে, ডিএসই লিস্টিং রেগুলেশন-২০১৫ এর ৫৪ (১) লংঘন করেছে এবং ডিএসইর ৬ সদস্যের তদন্ত কমিটি বোর্ড অ্যান্ড এডমিনিস্ট্রেশন রেগুলেশন-২০১৩ এর ৮ (২) ও ৯ (৫) লংঘন করেছে। এসব আইন ভঙ্গের মাধ্যমে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশ ১৯৬৯ এর প্যানেল প্রভিশন অব সেকশন ২২ লংঘন করা হয়েছে। এই অবস্থায় কমিশন পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার আগে শুনানির জন্য ডেকেছে।

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:

ভালো লাগলে শেয়ার করবেন...

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ